মনোহরের তোপ, আর্থিক ক্ষতি
তৃতীয় ইনিংসের শুরুতে আরও বেসামাল শ্রীনি
ক দিকে শশাঙ্ক মনোহরের তোপ এবং অন্য দিকে বাধ্য হয়ে প্রায় জলের দরে টাইটেল স্পনসরশিপ স্বত্ব বিক্রি করা। জোড়া ধাক্কায় আরও বেশি চাপে পড়ে গেল শ্রীনিবাসনের বোর্ড।
আগামী সোমবার শ্রীনিবাসন বনাম বিহার ক্রিকেট সংস্থার মামলা ওঠার কথা সুপ্রিম কোর্টে। লিস্টিংয়ে তিন নম্বরে রয়েছে এই মামলা। অর্থাত্‌ সে দিন শুনানি না হওয়ার কোনও কারণ নেই। কিন্তু বিহার ক্রিকেট সংস্থার আইনজীবী হরিশ সালভে ওই দিন থাকবেন সিঙ্গাপুরে। ফলে আদিত্য বর্মারা শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করতে পারেন। কিন্তু তার আগে প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্টের আসরে নামাটা রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিল বর্তমান প্রেসিডেন্টকে।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে বিস্ফোরক সাক্ষাত্‌কারে শ্রীনিবাসনকে আক্রমণ করেছেন মনোহর। পাশাপাশি জগমোহন ডালমিয়াকেও বেশ অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছেন। মনোহর বলেছেন, “মিস্টার ডালমিয়া ছাড়াও অনেকে আমাকে (শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে) দাঁড়ানোর অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমি বলি, সবার সমর্থন থাকলে তবেই দায়িত্ব নিতে পারি।” প্রাক্তন বোর্ড প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের পর পাল্টা মন্তব্য করে বিতর্ক বাড়াতে রাজি নন ডালমিয়া। আবার মনোহরের কথা উড়িয়েও দেননি। শুধু বলেন, “আমি এই নিয়ে কিছু বললে বিতর্ক আরও বাড়বে। আমি তা চাই না।” কিন্তু মনোহরের মন্তব্যের পর বোর্ড রাজনীতিতে সিএবি-র অবস্থান কী, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। শ্রীনিবাসনকে নিয়ে মনোহর বলেন, “শ্রীনিবাসনের প্রেসিডেন্টের পদে থাকার কোনও অধিকারই নেই। ওর যদি সামান্যতম আত্মসম্মানবোধ থাকত, তা হলে ওর জামাই গ্রেফতার হওয়ার পর মুহূর্তেই ইস্তফা দিয়ে দিত। কিছুই করেনি ও। ফলে বোর্ডের সুনাম তলানিতে এসে ঠেকেছে। মানুষের আস্থাও হারিয়েছে এই বোর্ড।” শ্রীনিবাসনের পিঠে ‘একনায়ক’-এর তকমা দিয়ে মনোহর বলেন, “ও কখনও এ সব নোংরা সাফ করার চেষ্টাও করেনি। সব ক্ষমতা ও একা ভোগ করতে চায়। যে নিজের পরিবারের লোকেদের সামলাতে পারে না, সে সামলাবে বোর্ড?” এত দিন পর মনোহরের এই বিস্ফোরক মন্তব্য শুনে বোর্ডেরই এক কর্তা বললেন, “মনোহর যখন এত কিছু বলেছেন, তখন এটা নিশ্চিত যে, উনি ক্রিকেট রাজনীতিতে ফিরছেনই।” এবং এই প্রত্যাবর্তন যদি পওয়ারকে পাশে রেখে হয়, তা হলে শ্রীনিবাসনের কপালে যে বেশ দুঃখ আছে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
এরই মধ্যে মনোহরকে পাল্টা চাপে ফেলার চেষ্টা করেছেন শ্রীনি-অনুগামীরা। ২০০৯-এ আইপিএলে বিদেশি মুদ্রা নিয়ে অনিয়মের অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বোর্ডের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছিল, সেই মামলায় তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই বলে হাইকোর্টে হলফনামা দাখিল করেছিলেন মনোহর। এ দিন বোর্ডসচিব সঞ্জয় পটেল বলেন, “মনোহরের এই আচরণ বোর্ড সদস্যরা মোটেই ভাল ভাবে নেননি। উনি যে ভাবে মামলা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন, তা বোর্ডের ঐক্যের পরিপন্থী।”ও দিকে আবার শ্রীনির বোর্ডকে চরম অস্বস্তিতে ফেলল তাঁরই অনুগতদের নিয়ে গড়া মার্কেটিং কমিটি। বৃহস্পতিবার কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হল, ম্যাচ প্রতি দু’কোটি টাকার বিনিময়ে রুপার্ট মার্ডকের স্টার গ্রুপকে ঘরের মাঠে বোর্ডের যাবতীয় সিরিজ ও টুর্নামেন্টের স্পনসরশিপ স্বত্ব বিক্রি করা হবে। গত বার মোবাইল পরিষেবা সংস্থা এয়ারটেল ম্যাচ পিছু ৩.৩ কোটি টাকার বিনিময়ে এই স্বত্ব কিনেছিল। কেন এ বার এত কমে ছেড়ে দেওয়া হল এই বরাত, সেই প্রশ্ন তুলে ফেলেছেন বোর্ডের কিছু পদাধিকারীই। বোর্ডের টিভি স্বত্বেরও অধিকারী এই বহুজাতিক সংস্থার সঙ্গে স্পনসরশিপ চুক্তির মেয়াদ ২০১৪-র মার্চ পর্যন্ত। এই সময়ে ভারতের মাটিতে ১৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হওয়ার কথা। ঘরের মাঠে আন্তর্জাতিক ম্যাচের সংখ্যা বাড়াতে পারলে (দক্ষিণ আফ্রিকা সফর বাতিল হলে যার সম্ভাবনা আছে) এই চুক্তি বাবদ আয় বাড়বে। না হলে ২৬ কোটি নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে শ্রীনির বোর্ডকে। শোনা গিয়েছিল, আরও একটি সংস্থাও বিড করেছিল। কিন্তু তা অস্বীকার করে সচিব প্রায় হাত তুলে দিয়েই বলেছেন, “বর্তমান বিশ্ব বাজারের যা অবস্থা, তাতে এই চুক্তিই আমরা করতে পারব কি না, সন্দেহ ছিল।”
সব মিলিয়ে তৃতীয় ইনিংসের শুরুতে রীতিমতো বেকায়দায় নায়ারণস্বামী শ্রীনিবাসন।
মিস্টার ডালমিয়া ছাড়াও অনেকে আমাকে (শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে) দাঁড়ানোর
অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু আমি বলি, সবার সমর্থন থাকলে তবেই দায়িত্ব নিতে পারি।
শশাঙ্ক মনোহর

‘‘আমি এই নিয়ে কিছু বললে বিতর্ক আরও বাড়বে। আমি তা চাই না।”
জগমোহন ডালমিয়া

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.