মনোহর নন, বিরোধীদের শেষ ভরসা এখন আদালত
দক্ষিণের ‘দাক্ষিণ্যে’ ফের অ্যাডভান্টেজ শ্রীনিবাসন
বোর্ড রাজনীতির ময়দানে শশাঙ্ক মনোহর বনাম নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন দেখা হচ্ছে না।
শ্রীনিবাসনকে নির্বাচনে হারানো সেই সম্ভাবনাও মনে হচ্ছে এখন দুঃসাধ্য।
ব্যালট বাক্সে নয়, শ্রীনিবাসনের মারণাস্ত্র এখন একমাত্র আসতে পারে আদালত কক্ষ থেকে।
শ্রীনি এ দিন মুম্বইয়ে সদর্প বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে আবার আসবেন ঘোষণা করায় ক্রিকেটমহলে অনেকেই বিস্মিত হয়ে যান। গত ক’দিন চুপচাপ থাকার পর আজ হঠাৎ তাঁর মার্কেটিং কমিটির বৈঠকে আসা এবং সোচ্চার ঘোষণা করা এই আত্মবিশ্বাস চোখে পড়ার মতো। ক্রিকেটমহলে অনেকেই খুব বিস্মিত হয়ে পড়েন যে, হঠাৎ কী ঘটল? তাঁরা আন্দাজ করেন কোনও পট পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু কী হয়েছে, তাঁরা বুঝে উঠতে পারছিলেন না। মনোহর-গোষ্ঠীর সদস্যরা অবশ্য বুধবার বেশি রাতেই আঁচ পেয়ে গিয়েছিলেন কী ঘটছে। তাঁরা বুধবার রাত্তিরে স্তম্ভিত হয়ে আবিষ্কার করেন, অন্ধ্রপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার সচিব গঙ্গা রাজু, যিনি মনোহরের নাম সমর্থন করবেন বলে সই করে দিয়েছিলেন, তিনি আবার শ্রীনির ফর্মেও সই করে দিয়েছেন। বোর্ডের নিয়ম হল যে, যুযুধান দুই প্রার্থীর নামই যদি একজন কেউ সমর্থন করেন, তা হলে তাঁর সমর্থনটাই বাতিল হয়ে যায়। অর্থাৎ মনোহরের সপক্ষে অন্ধ্রের ভোটটাই বাতিল হয়ে যাবে। বোর্ডের সংবিধান অনুযায়ী এ বার দক্ষিণাঞ্চলের টার্ম। সেখানকার ছ’সদস্যের মধ্যে অন্তত দু’জনকে দিয়ে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর নাম সমর্থন করাতে হবে। একজন নাম প্রস্তাব করবেন। একজন সেটা সমর্থন করবেন। এটাই ঠিক ছিল যে, গোয়ার চেতন দেশাই নাম প্রস্তাব করবেন মনোহরের। অন্ধ্রের গঙ্গা রাজু সেটা সমর্থন করবেন। নাটকীয় পট পরিবর্তনের ফলে দাঁড়াল যে, মনোহর বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও দক্ষিণাঞ্চল থেকে নিজের নাম তোলার দু’জনও পাচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে তিনি দাঁড়াবেন কী করে? অর্থাৎ বোর্ডে যদি আপনার ৩১ ভোটের ২০ ভোটও থেকে থাকে, সেটা সম্পূর্ণ নিরর্থক হয়ে যাবে যদি আপনি দক্ষিণ থেকে দু’জনকে না তুলতে পারেন। মনোহর অবাক হয়ে আবিষ্কার করেন বোর্ডে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও দক্ষিণাঞ্চল থেকে তিনি এমন দু’জনকে পাচ্ছেন না, যাঁরা তাঁর নামটা তুলবেন।
বোর্ডের কয়েক জন সদস্য তখন অরুণ জেটলিকে ফোন করেন। বলেন, রাজুর বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আমরা তৈরি ছিলাম না। আপনি কিছু করুন। আপনি তো বিজেপি কর্মী। জেটলি জানিয়ে দেন এ ব্যাপারে তিনি কিছু করতে পারবেন না। তাঁর সমর্থন মনোহরের দিকে থাকলেও প্রকাশ্যে আসবেন না। এমনকী চেন্নাইয়ে ভোট দিতেও যাবেন না। এই খবর ক্রমে বোর্ড সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তাঁরা বিস্ফারিত হয়ে যান। দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর ফর্মে একজন সই করেছেন, এ রকম ঘটনা তাঁরা মনেই করতে পারছেন না।
এর অর্থ দাঁড়াল, টেকনিক্যাল লড়াইয়ে অ্যাডভান্টেজ শ্রীনিবাসন। তাঁকে একমাত্র হারানো যাবে কোর্টরুমের নির্দেশে।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রাক্তন পর্যটন মন্ত্রী এবং বর্তমান কংগ্রেস সাংসদ সুবোধকান্ত সহায় বললেন, “কংগ্রেসের মনোভাব খুব পরিষ্কার। আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত ক্রিকেট প্রশাসন।” পরিষ্কার করে কিছু না বললেও বোঝা সম্ভব ইঙ্গিতটা কোন দিকে। শোনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহও প্রবল ভাবে শ্রীনি-বিরোধী। এ দিন কলকাতায় বসে রাত্তিরে আদিত্য বর্মা ঘোষণা করলেন, “মঙ্গলবার নাগাদ আবার সুপ্রিম কোর্টে যাব। শ্রীনি যে ভাবে আদালত অবমাননা করেছে, ও যাতে ভোট দিতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে।” শোনা গেল মুম্বই পুলিশের চার্জশিট আসছে সোমবারের মধ্যে। সেই চার্জশিটে গুরুনাথ মইয়াপ্পনের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কড়া অভিযোগ তোলা হয়েছে। যা শোনা যাচ্ছে যদি সত্যি হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে চেন্নাই সুপার কিংসের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টি খেলা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যেতে পারে। তার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই হয়তো আদিত্য বর্মার তরফে আদালতে আইওপি (ইন্টারফেয়ারেন্স অব দ্য প্রোগ্রেস অব জাস্টিস) করা হবে।
এ দিকে সাময়িক চিন্তামুক্ত শ্রীনি বোর্ড সদস্যদের এ দিন ঢালাও অফার দিয়েছেন, ২৫ তারিখ চেন্নাইয়ের বিশেষ সাধারণ সভায় আসুন। তার পর কেউ বাড়ি ফিরবেন না। পরের তিন দিন আপনাদের আতিথেয়তার দায়িত্ব আমার হাতে। শোনা যাচ্ছে কোনও রিসর্টে তিনি বোর্ড সদস্যদের আতিথেয়তার ব্যবস্থা করছেন। রাতে এক বোর্ড সদস্য বললেন, “সম্ভবত আমাদের মহাবলীপুরমের কাছে কোথাও তোলা হবে। সেখানে দু’দিন ঢালাও খানাপিনার পর আমরা সবাই ২৯ তারিখে স্যরকে ভোট দিয়ে যাব।”
সব মিলিয়ে আদালত না ঠেকালে বোর্ড সদস্যদের কপালে মহাবলীপুরমই নাচছে!

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.