শিলিগুড়ির ব্যস্ততম এলাকা হিলকার্ট রোডের ধারের একটি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে বিবেকানন্দ মিনি মার্কেটের সামনে ওই গাছটি কাটা হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের তা নজরে পড়ে। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়েছে। কয়েকজন পুরসভাতে এবং বন দফতরে ফোন করে অভিযোগ জানান। তাঁদের একাংশের দাবি, এটি হরতকী গাছ। গাছটি বড় হয়ে ডালপালা ছড়িয়েছিল। কে বা কারা শহরের মধ্যে এ ভাবে গাছ কেটে ফেলার সাহস পাচ্ছে তা নিয়ে সরব হয়েছে পরিবেশপ্রেমী বিভিন্ন সংগঠনও। পুলিশে অভিযোগের দাবিও উঠেছে। যে বা যারাই এ কাজ করে থাকুক তাদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। খবর পেয়েই এ দিন বন দফতরের আধিকারিকেরা গিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। স্থানীয় ফুটপাথ ব্যবসায়ী থেকে লাগোয়া কয়েকটি দোকানের মালিকদের তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদও করেন। কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারেননি। বন দফতরের তরফে লাগোয়া দোকানগুলির একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার কথাও ভাবা হচ্ছে। |
কেটে ফেলা হয়েছে হিলকার্ট রোডের এই গাছটি। ছবি তুলেছেন বিশ্বরূপ বসাক। |
বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যে বা যারাই এই কাজ করে থাকুক তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনায় চটেছেন পুর কর্তৃপক্ষও। পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “যে বা যারাই ওই কাজ করে থাকুন ঠিক করেননি। এভাবে গাছ কেটে ফেলা অপরাধ। পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে।” বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, ব্যবসায়ীদের মধ্যেই কেউ চুপিসারে গাছটি কেটেছে। ব্যবসায়ীরা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পরিবেশপ্রেমী সংগঠন হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন (ন্যাফ)-এর মুখপাত্র অনিমেষ বসু বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি জানান, শিলিগুড়ি শহর এবং তার আশেপাশে সবচেয়ে দ্রুত হারে গাছের সংখ্যা কমছে। নগরায়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে গাছ কাটা। এই পরিস্থিতিতে গাছ বাঁচানো বিশেষ জরুরি। তিনি বলেন, “যে বা যারাই ওই গাছ কেটে থাকুন ঘটনার তদন্ত করে তাদের খুঁজে বার করতে হবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উযপুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ করার সাহস না পান।”
খবর পেয়েই এ দিন সেখানে যান তৃণমূল নেতা দীপক শীল। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তিনিও কথা বলেন। তিনি জানান, পুরসভা এবং বন দফতর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখুক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক। ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, গত কাল রাতেও দোকান বন্ধ করার সময় তাঁরাও গাছটিকে দেখেছেন। গাছের আশেপাশে ফুটপাথ ব্যবসায়ীদের অনেকেই কারবার করেন। গাছের ছায়ায় তাঁদেরও সুবিধা হয়। কিন্তু কে বা কারা কী উদ্দেশ্যে গাছটি কেটে নিয়েছে তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। |