খুনি ভিমরুলের কামড়ে চিনে মৃত ৪২
ক ঝলক দেখলে মনে হবে, শরীর থেকে যেন খুবলে খুবলে মাংস তুলে নেওয়া হয়েছে। সারা শরীর জুড়ে কালো গর্ত। সঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণা। ভীমরুলের মরণ-কামড় খেয়ে এমন অবস্থাতেই দিন কাটাচ্ছেন চিনের প্রায় সতেরশো বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে সাঁয়ত্রিশ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। জুলাই থেকে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত বিয়াল্লিশ জনের। এই মৃত্যুমিছিলের নেপথ্যে ‘এশিয়ান জায়েন্ট হর্নেট’ বা দৈত্যাকার ভীমরুল। তাদের বিষ-হুলের কোপ থেকে বাদ যাচ্ছে না ছোট-বড় কেউই।
মানুষের মাথা এবং পা শরীরের এই দু’টি অংশকেই হামলার মূল লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছে তারা। ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে এসে হুল ফোটাচ্ছে সেখানে। সঙ্গে সঙ্গে বিষজ্বালার অনুভূতি। নড়াচড়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলছেন আক্রান্তরা। ঠিক যেমন হয়েছিল শাংক্সি প্রদেশের আংকাঙ্গ শহরের বাসিন্দা মু কঙ্ঘুইয়ের সঙ্গে। জুলাইয়ে খুনি ভীমরুলের কামড় খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। শরীর থেকে বিষ বার করতে ১৩টি ডায়ালিসিস হয়েছে। আঘাতের জায়গাগুলি জুড়তে ২০০টি সেলাইও হয়েছে। কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও এখনও হাঁটতে পারছেন না মু। পায়ে খুনি ভীমরুলের কামড়ের চিহ্ন। আর স্মৃতিতে আতঙ্ক। মু বললেন, “ভীমরুলগুলো ভয়ানক ছিল।”
কিন্তু এরা আচমকা হঠাৎ ক্ষেপে গেল কেন? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এমনিতেই খুনি ভীমরুলের প্রজননের সময়। তাদের বাড়বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এটাই। তবে দ্বিতীয় কারণটির পিছনে রয়েছে মানুষেরই ‘অবদান’। আসলে নগরায়নের দৌলতে নিজের অজান্তেই তাদের চৌহদ্দিতে পা রেখেছে মানুষ। আর তারই ফলে এই মারণ-আক্রমণ। বিশেষজ্ঞদের অবশ্য দাবি, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যে পরিবর্তনও এর নেপথ্যে থাকতে পারে। যার জেরে মাকড়সা এবং পাখি, প্রাণীজগতে যারা এই জায়েন্ট-হর্নেটের শত্রু বলে পরিচিত তাদের সংখ্যা কমছে। ফলে বাড়ছে খুনি ভীমরুলের বংশ। তীব্র হচ্ছে আক্রমণ। প্রতি বছরই অবশ্য এর কামড়ে গড়ে ৩০ থেকে ৫০ জনের মৃত্যু হয় জাপানে। এ বছর তার প্রকোপে আক্রান্ত শাংক্সি প্রদেশের তিন শহর।
ঠিক কী হয় এশিয়ান জায়েন্ট হর্নেটের কামড়ে? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এদের বিষে প্রথম ‘অ্যালার্জি’ হতে শুরু করে। শরীরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে শেষমেশ মৃত্যু। সে জন্যই ডায়ালিসিসের মাধ্যমে বিষ বের করার চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা। চিনা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রজাতির এক একটি ভীমরুল আয়তনে মানুষের বুড়ো আঙুলের মতো। পোশাকি নাম ‘ভেসপা মান্দারিনিয়া।’ এদের গাঢ় কমলা মুখে রয়েছে কালো দাঁত। বা বলা ভাল বিষ-দাঁত। এর মাধ্যমেই শিকারের দেহে মারণ-বিষ ঢুকিয়ে দেয় তারা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.