লালুর রাজনীতির পীঠস্থান হতাশ
দালতের রায়ে মন-খারাপ লালুর রাজনীতির ‘পীঠস্থান’-এর বাসিন্দাদের।
কলেজ-পড়ুয়া, রাবড়ীদেবীর সঙ্গে সংসার, প্রথম বার বিধায়ক নির্বাচিত হওয়া— আরজেডি শীর্ষ নেতার জীবনের সে সব সময়ের সাক্ষী পটনার ভেটেরিনারি কলেজের আবাসন। তাঁকে কাছ থেকে দেখেছেন সেখানকার প্রবীণ বাসিন্দারা। ঘরের ছেলের কারাদণ্ড তা-ই মেনে নিতে পারছেন না তাঁর আত্মীয়, বন্ধুরা।
গোপালগঞ্জের ফুলওয়াড়ি গ্রাম থেকে রাজধানীর বি এন কলেজে পড়তে এসেছিলেন লালু প্রসাদ। ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি তখনই। তাঁর দাদা মুকুন্দ রায় ভেটেরিনারি কলেজের কর্মচারী। গরীব পরিবারের ছেলে লালুর ভরসা ছিলেন মুকুন্দই। কলেজে পড়ার সময় দাদার সরকারি আবাসনেই থাকতেন তিনি। বিয়ের পরও সেখানকারই একটি ঘরে থাকতেন। বিধায়ক হন সেখানে থাকাকালীনই।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, জনপ্রতিনিধি লালুর সঙ্গে দেখা করতে ভিড় জমত আবাসনে। ঘরের সামনের চাতালে ‘জনতা দরবার’ বসাতেন আরজেডি শীর্ষ নেতা। পড়শিদের সমস্যার কথা শুনলে ছুটে যেতেন।
আজ সিবিআই আদালতের নির্দেশে তাই মন খারাপ আবাসনের সকলের। লালুর পুরনো ঘরের কাছেই মুদির দোকান ব্রজমোহন সিংহের। তিনি বললেন, “ভেবেছিলাম দোকান খুলব না। কিন্তু অন্যদের অসুবিধা হবে ভেবে এসেছি। মন খুব খারাপ।” ৩০ বছর ধরে সেখানে থাকেন ব্রজমোহন। লালুকে দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তাঁর কথায়, “ভাইদের সঙ্গে থাকতেন। মিশুকে স্বভাব। হাসিঠাট্টা তো ওঁর রক্তে ছিল।” কায়ুম খান, আয়ুব খান, রঞ্জিৎ যাদবের মতো এলাকাবাসীর কথাতেও একই সুর।
১৯৯০ সালে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসলেও ওই আবাসনকে ভুলে যাননি লালু। অ্যানে মার্গের বাসভবনে চলে গেলেও, মাঝেমধ্যেই যেতেন পটনায় তাঁর প্রথম ঠিকানায়। বাসিন্দারা জানান, দাদা অসুস্থ হলে দিল্লিতে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছিলেন লালু। দাদাকেও মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে যেতে অনুরোধ করেন। রাজি হননি মুকুন্দ।
কয়েকমাস আগেও তিনি গিয়েছেন ভেটেরিনারি কলেজের আবাসনে। গাড়ি থেকে নেমে মিশে গিয়েছেন পরিচিতদের ভিড়ে। এখনও সেখানে থাকেন লালুর ভাইপো ত্রিগুণি রায়। ভেটেরিনারি কলেজের কর্মী। তিনি বললেন, “লালুজি সব সময় গরীবদের জন্য কাজ করেছেন। অতীতকে ভোলেননি। এই শাস্তি হয়তো প্রাপ্য ছিল না।” ত্রিগুণির ছেলে রাজকুমারের মন্তব্য, “লালুর উপর গরীবের আশীর্বাদ আছে। উচ্চ আদালতে তিনি নিশ্চয় বিচার পাবেন।” তাঁরা জানান, গোটা মহল্লাই হতাশ। কাছের মানুষের শাস্তি মানতে পারছেন না কেউ-ই।
তবে, বাস্তবটাকে মেনে নিয়েই ছক কষতে শুরু করেছেন লালুপত্নী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবী। দলের নেতৃত্ব নিয়ে বিভিন্ন মহলে ছড়িয়ে যাওয়া আশঙ্কা উড়িয়ে আজ তিনি বলেছেন, “জেল থেকেই দল চালানোর পরামর্শ দেবেন লালুপ্রসাদজি। আমাদের নায়ক। এটা যে নীতীশ আর বিজেপি-র চক্রান্ত তা রাজ্যের মানুষ টের পেয়েছেন। জনতার আদালতেই সুবিচার চাইতে যাব।”

সময় এলে বলবেন উপেন
একটু আগেই খবরটা কানে এসেছে। তবু বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ এবং জগন্নাথ মিশ্রের কী সাজা হল, মহাকরণে নিজের চেম্বারে বসে ইন্টারনেটে তা দেখলেন সাবেক সিবিআই কর্তা, রাজ্যের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি মামলায় উপেনবাবু ছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার। এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ হঠাৎ মহাকরণের প্রেস কর্নারে উপেনবাবু। তখন সাজা ঘোষণা হয়নি। রায় ঘোষণার পরে লালু, জগন্নাথের সাজা নিয়ে প্রশ্নও করা হয়। উপেনবাবু জবাব, “১৭ বছর আগের ঘটনা। আমি এ সবের মধ্যে নেই। তখন বিহারের অবস্থা কী ছিল, এই মামলায় তা বোঝা যাচ্ছে।” তাঁর মন্তব্য, “আমার কাছে অনেক অকথিত কাহিনি রয়েছে। সময় হলে বলব।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.