পুজোর চাঁদা নিয়ে বিবাদের জেরে ক্লাবে ঢুকে ভাঙচুর ও বোমা-গুলি ছুড়ে তাণ্ডবের অভিযোগ উঠল কিছু গরু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। বসিরহাটের তিন নম্বর কলোনিতে বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনায় ক্লাবের পাঁচ সদস্য জখম হন। তাঁদের মধ্যে তিনজনকে বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং বেআইনি ভাবে গরুর ব্যবসা বন্ধ করার দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দারা শুক্রবার সকালে বসিরহাট থানা ঘেরাওয়ের পাশপাশি ইটিন্ডা রোড অবরোধ করেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে প্রয়োজনে বসিরহাটের সমস্ত ক্লাব পুজো বন্ধ রাখবে বলে ক্লাব সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসডিপিও (বসিরহাট) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
|
বসিরহাট সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে গরু নিয়ে যাওয়া এবং দুর্গাপুজোর সময় গরুবোঝাই গাড়ি আটকে চাঁদা আদায় নতুন ঘটনা নয়। প্রতিবারই চাঁদা আদায় নিয়ে ছোটখাটো বিবাদ লেগেই থাকে। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে যে ভাবে ক্লাবে চড়াও হয়ে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠেছে গরু ব্যবসায়ীদের একাংশের বিরুদ্ধে তাতে প্রশাসন চিন্তিত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ টাকি রোডে গরুভর্তি দু’টি গাড়ি আটকায় চাঁদা শিকারিরা। দাবিমত চাঁদা না দেওয়ায় গাড়িদু’টিকে একটি গলির মধ্যে আটকে রাখা হয়। স্থানীয় ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ, রাত ১২টা নাগাদ মোটর সাইকেল ও ম্যাটাডরে জনা চল্লিশেক লোক গাড়ি দু’টি ছাড়াতে এলে দু’পক্ষের বচসা শুরু হয়। অভিযোগ, হঠাৎই ওই লোকেরা বোমা, গুলি ছুড়তে থাকে। কয়েকজন ক্লাবে ঢুকে ভাঙচুর করে।
ক্লাবের পুজো কমিটির সম্পাদক রাহুল দেবনাথ বলেন, ‘‘আলোচনা চলার সময় গরু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আসা দুষ্কৃতীরা হঠাৎ বোমা, গুলি ছুড়তে শুরু করে। ক্লাব ও আশপাশের কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। দুষ্কৃতীদের হাতে গুরুতর জখম হয়েছেন ক্লাবের কয়েকজন সদস্য।” |
হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে এলাকার কয়েকশো মহিলা, পুরুষ বসিরহাট থানা ঘেরাও করেন। গরুর গাড়ি বন্ধ করার দাবিতে থানার সামনে পথ অবরোধও করা হয়।
যদিও ওই গরু ব্যবসায়ীদের দাবি, চাঁদা আদায় নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, আলোচনা করে ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার অবিনাশ নাথ এবং স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাদল মিত্র, বাপি বসু বলেন, “চাঁদার দাবি নিয়ে কারও অভিযোগ থাকলে তা থানায় জানিয়ে প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া যেত। তা না করে যে ভাবে দুষ্কৃতীদের নিয়ে এলাকায় ঢুকে হামলা চালানো হল তা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এমনটা চলতে দেওয়া যায় না।”
ক্লাব সমন্বয় কমিটির সভাপতি নাণ্টু ঘোষ বলেন, “এই ঘটনায় সমস্ত ক্লাবগুলিকে নিয়ে একটা বৈঠক ডাকা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বসিরহাটে পুজো বন্ধ করে দিতে আমরা বাধ্য হব।” |