জলপাইগুড়িতে অস্থায়ীভাবেও সার্কিট বেঞ্চ চালু করার মত যথেষ্ট পরিকাঠামো নেই বলে কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রককে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সার্কিট বেঞ্চের কাজ শুরু করতে রাষ্ট্রপতির ঘোষণাপত্র জারি করতে হয়। হাইকোর্টের চিঠি পাওয়ার পরে কেন্দ্রের আইন ও বিচার মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, জলপাইগুড়িতে পরিকাঠামো প্রস্তুত বলে হাইকোর্ট জানানোর পরেই সেই ঘোষণাপত্র জারি করা হবে। ৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার মন্ত্রকের মন্ত্রী কপিল সিব্বল আলিপুর দুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়কে চিঠি দিয়ে ওই তথ্য জানান। সার্কিট বেঞ্চের প্রস্তুতি নিয়ে সম্প্রতি দেবপ্রসাদবাবু কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। যার উত্তরেই ওই চিঠি পাঠান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী।
নকশায় হাইকোর্টের আপত্তিতে জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরে ৪০ একর জমিতে সর্কিট বেঞ্চের স্থায়ী ভবনের কাজ বন্ধ রয়েছে। তারপরে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর চিঠির তথ্য জানার পরে, জলপাইগুড়িতে অস্থায়ীভাবে সার্কিট বেঞ্চ শুরুর সম্ভাবনাও আপাতত নেই বলেই মনে করেছে আইনজীবী মহল। রাজ্যের আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বৃহস্পতিবার বলেন, “জলপাইগুড়িতে অস্থায়ী পরিকাঠামো তৈরি থেকে শুরু করে স্থায়ী ভবন তৈরির প্রস্তুতি, সব পদক্ষেপই হাইকোর্টকে জানিয়ে নেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সহ অন্য বিচারপতির উপস্থিতিতেই মুখ্যমন্ত্রী স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস করেছেন। হাইকোর্টের সব নির্দেশ পালন করা হয়েছে। তারপরেও কেন বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ে আলোচনা করতে এবং দ্রুত সার্কিট বেঞ্চের কাজ শুরু করার অনুরোধ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে যাব। অস্থায়ী ভবনের বিদ্যুতের বিলসহ ভাড়া সব রাজ্য সরকার বহন করছে।”
জলপাইগুড়ি টাউন স্টেশন লাগোয়া জেলা পরিষদ ডাক বাংলোকে সংস্কার করে অস্থায়ী সার্কিট বেঞ্চ ভবন তৈরি হয়। গত বছর স্থায়ী ভবনের শিলান্যাসের দিন হাইকোর্টের প্রতিনিধি দলও অস্থায়ী ভবন পরিদর্শন করেন। রাজ্য সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন তলা অস্থায়ী ভবনে চারটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এজলাস রয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশে সেখানে একটি গ্রন্থাগার এবং সভাঘর তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি তৈরি হয়েছে, বিচারপতিদের থাকার আবাসনও। দেবপ্রসাদবাবু বলেন, “কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর চিঠিটি বৃহস্পতি বার পেয়েছি। সেই চিঠিতে হাইকোর্টের বক্তব্য পরিষ্কার । রাজ্য সরকারকেই উদ্যোগী হয়ে হাইকোর্টের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নিতে হবে। উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের স্বার্থে দ্রুত সার্কিট বেঞ্চের কাজ শুরু করাই বাঞ্ছনীয়।’’ সার্কিট বেঞ্চ দাবি আদায় সমন্বয় কমিটি সম্পাদক আইনজীবী কমল কৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “বিচারপতিরা জলপাইগুড়িতে এসে পরিকাঠামো দেখে সবকিছুতেই সম্মতি দিয়েছেন। তাও হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। উত্তরবঙ্গে সার্কিট বেঞ্চ স্থাপন করা হাইকোর্টের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তাই সার্কিট বেঞ্চ চালু নিয়ে তাঁদেরও উদ্যোগ প্রয়োজন।” |