পরিচালন সমিতির মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমের সংঘর্ষে রক্ত ধরল আলিপুরদুয়ারের স্কুলে। বৃহস্পতিবার সওয়া ১১টা নাগাদ আলিপুরদুয়ার জংশনের শ্যামাপ্রসাদ বিদ্যামন্দিরে ঘটনাটি ঘটেছে। তৃণমূলের ৮ জন ও সিপিএমের ৩ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার শ্যামাপ্রসাদ বিদ্যামন্দিরের বালক বিভাগে স্কুল পরিচালন সমিতির মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিন ছিল। এদিন স্কুলে ঢোকার সময়ে উভপক্ষের গোলমাল বাঁধে। একে অন্যের বিরুদ্ধে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বাঁশ নিয়ে মারপিট শুরু করে দেন। পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্বে আনে। পরে মনোনয়ন পত্র জমার কাজ সম্পূর্ণ হয়। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “দুপক্ষই অভিযোগ করেছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” শ্যামাপ্রসাদ বিদ্যামন্দির বালক বিভাগের (উচ্চ মাধ্যমিক) ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রসেনজিৎ দত্ত চৌধুরী জানান, আগামী ৬ অক্টোবর স্কুল পরিচালন সমিতির ছটি আসনে নির্বাচন। এদিন বেলা বারোটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত মনোনোয়ন পত্র জমা নেওয়ার কথা ছিল। ১১টার পর মনোনয়ন জমা শুরু হতেই বাইরে চেঁচামেচি শুরু হয়। তিনি বলেন, “বিষয়টি পুলিশকে জানাই। পরে ৬টি আসনে ১২ জন মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মনোনয়ন জমার সময় আগে তৃণমূল নেতৃত্ব ভেতরে ঢোকেন। সেই সময় প্রায় ৫০০-৬০০ সিপিএম সমর্থক কাঁচা বাঁশের মাথায় দলীয় পতাকা নিয়ে মহিলা পুরুষ মিছিল করে স্কুলের দিকে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। স্কুলের সামনে থাকা শ-দুয়েক তৃণমূল সমর্থকের অনেকেই সেই সময় পিছিয়ে যান। সিপিএম গেটে ঢুকতে গেলে গুটিকয়েক তৃণমূল সমর্থক তাদের বাধা দেন। তখন বচসা বাঁধে। শুরু হয় লাঠি দিয়ে মারপিট। স্কুলের সমানে রাস্তায় প্রায় আধ ঘন্টা ধরে দুই পক্ষের দফায় দফায় মারপিট চলতে থাকে। তৃণমূলের নেতা মৃদুল গোস্বামীর অভিযোগ, এদিন আমাদের সমর্থকরা স্কুলে মনোনয়ন জমা দিতে যান। সেই সময় সিপিএমের সমর্থকার পরিকল্পনা মাফিক বাঁশ নিয়ে হামলা চালা।য় ঘটনায় আমাদের আলিপুরদুয়ার সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক তপেন কর, পুলক মোদক,সায়ক স্যানাল, গোপাল পাশোয়ান, আকবর আলি, রতন সকরকার, দীপালি দাস সহ আট জন আহত হয়েছেন।” তাঁর দাবি, “ঘটনাটি নিয়ে আমরা সিপিএমের, শিবনাথ সেন গুপ্ত, শ্যামল রায়,করণ থাপা, অমল রায় সহ ১১ জনের নামে অভিযোগ জানিয়েছি। তপেন কর ও গোপাল পাশোয়নকে শিলিগুড়ির নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
তৃণমূলের বক্তব্য অবশ্য মানতে রাজি নন সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম নেতা শিবনাথ সেনগুপ্তের অভিযোগ, “১৮ সেপটেম্বর ওই স্কুলের বালিকা বিভাগে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন ছিল। ওই দিন তৃণমূল সমর্থকরা আমাদের সমর্থকদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে স্কুলেই ঢুকতে দেয়নি। এদিন ফের মনোনয়ন পত্র জমা দিতে গেলে আমাদের সমর্থকদের স্কুলে ঢুকতে বাধা দেয় তৃণমূল। পরে তাঁর বাঁশের লাঠি এনে আমাদের উপর চড়াও হয়।” তাঁর দাবি, “হামলায় হীরালাল মাহাত, পিন্টু দে,আরতি দাস জখম হন। তৃণমূল নেতা তপেন কর সহ দশ জনের নামে অভিযোগ জানানো হয়েছে থানায়।” |