আজ জিটিএ বৈঠকে যেতে পারে মোর্চা
ব ঠিক থাকলে আজ, শুক্রবার গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) নতুন চিফ এগজিকিউটিভ নির্বাচনে যোগ দিতে পারে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তারা ওই বৈঠকে যোগ না দিলে রাজ্য সরকার যে কড়া পদক্ষেপ করতে পারে, সে কথা মোর্চার শীর্ষ নেতাদের একাংশ দলের সভাপতি বিমল গুরুঙ্গকে বুঝিয়েছেন। মোর্চা জিটিএ-তে না গেলে সরকার মনোনীত সদস্যদের মধ্যে থেকে কাউকে জিটিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ পদে বসিয়ে দিতে পারে বলেও মহাকরণ সূত্রে জানা গিয়েছে। তাই গুরুঙ্গই যাতে পুরানো পদে ফেরেন, সে জন্য তৎপর মোর্চার নেতারা।
মহাকরণের একটি সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, গুরুঙ্গ ফের ‘চিফ’ হয়ে সুষ্ঠু ভাবে জিটিএ চালালে রাজ্য সরকার আগের মতোই সহযোগিতা করবে। তবে জিটিএ-তে মোর্চা ফিরলে এ বার পাহাড়ের তিন মহকুমায় দ্বিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে মহাকরণে। মোর্চাও বুঝেসুঝে পা ফেলছে। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং আদালতে জিটিএ সদস্য সতীশ পোখরেলের জামিন হওয়াকে ‘ইতিবাচক’ বলে মনে করছেন মোর্চা নেতৃত্ব। আদালত বিনয় তামাঙ্গ-সহ তিন জনের জামিনের আর্জি নাকচ করলেও সমালোচনা করেননি তাঁরা। বরং, এখনও জেলবন্দি ৯ জন জিটিএ সদস্য পর্যায়ক্রমে জামিনে মুক্তি পাবেন বলে আশাবাদী মোর্চা নেতারা।
দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা তথা জিটিএ সদস্য তামাঙ্গকে গ্রেফতার করার পরেই পাহাড়ে লাগাতার বন্ধ ডেকেছিল মোর্চা। কিন্তু এখন মোর্চার সহকারী সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিকুমার রাই বলেছেন, “জামিনের ব্যাপারে মন্তব্য করব না। এটা আদালতের বিষয়। আন্দোলন-পর্বে ধৃত সকলকেই মুক্তি দেওয়ার দাবি রয়েছে আমাদের।” তাঁর সংযোজন, “জিটিএ-এর নতুন চিফ নির্বাচনের বৈঠকের বিষয়টি মাথায় রয়েছে। যেহেতু শুক্রবার দুপুরের দিকে বৈঠক, তাই সকালের দিকে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনায় বসে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
তবে জিটিএ-এর সভা ঠিকঠাক হবে বলে আশাবাদী পার্বত্য বিষয়ক দফতর তথা জিটিএ-র প্রধান সচিব রামদাস মিনা। এ দিন তিনি বলেন, “ওই সভায় হাজির থাকার জন্য সমস্ত সদস্যকে আমন্ত্রণ করেছি। সভা সফল হবে বলেই আমরা আশাবাদী। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সরকার পরিকল্পনা করবে।” তবে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “যদি মোর্চা সভায় না আসে, তবে রাজ্য সরকার ব্যবস্থা নেবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি দেখছেন।”
মন্ত্রীর কথাতেই ইঙ্গিত পাহাড় নিয়ে সরকারের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। সেটা ঠিক কী?
মহাকরণ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছেন, পাহাড় নিয়ে নরম মনোভাব দেখানো হবে না। রাজ্য সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণেই শেষ পর্যন্ত মোর্চা নেতৃত্ব বন্ধ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে বলেও মনে করেন মহাকরণের কর্তাদের একটা বড় অংশ। সেই ভাবেই জিটিএ-সভার মাধ্যমে পাহাড়ে প্রশাসনিক কাজকর্ম স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছে রাজ্য।
স্বরাষ্ট্র দফতরের এক কর্তা বলেন, “মোর্চা জিটিএ-তে না এলে পঞ্চায়েত ভোটের মাধ্যমে সরকার ওই এলাকায় ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করবে। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির ভোট হয়ে গেলে তৃণমূল স্তরে যাবতীয় উন্নয়ন করা যাবে। সে জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” প্রশাসন সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত দফতর মহাকরণকে জানিয়ে দিয়েছে, পাহাড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির ভোট করার ক্ষেত্রে আইনগত বাধা নেই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাজ্যের এই প্রস্তুতির কারণ, পাহাড় নিয়ে আগের অভিজ্ঞতা। জিএনএলএফ নেতা সুবাস ঘিসিং ক্ষমতায় বসার পরে আর পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। তখনকার বাম সরকার পাহাড়ের যাবতীয় ক্ষমতা ঘিসিংয়ের হাতেই দিতে চেয়েছিল। কিন্তু এ বার আর সে পথে হাঁটতে চাইছে না রাজ্য।
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, “জিটিএ-র ৪৫ জন সদস্যের হাতেই কেন পাহাড়ের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আটকে থাকবে? ক্ষমতা দেখাতে এঁরা যখন-তখন বন্ধ ডাকেন, অবরোধ করেন। পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে গ্রাম প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরাই এলাকার উন্নয়ন করতে পারবেন। জিটিএ সদস্যদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। তাই পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।”

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.