|
|
|
|
বাড়িতে মজুত বাজি-বারুদ, বিস্ফোরণে মৃত্যু বধূর
নিজস্ব সংবাদদাতা • তমলুক |
অবৈধ ভাবে বাজি বানিয়ে মজুত করা হচ্ছিল বাড়ির মধ্যে। বারুদ ও বাজি ভর্তি সেই বাড়িতেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হল বধূর। আহত হয়েছেন পরিবারেরই এক শিশু-সহ আরও পাঁচ জন।
বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার হাউর এলাকার পুলশিটা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত বধূর নাম সোনালী মাজী (২৬)। বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন সোনালীর স্বামী গোবিন্দ, দুই দেওর গোপাল ও স্বরূপ, গোপালের স্ত্রী সরস্বতী এবং ছ’মাসের শিশুকন্যা। গুরুতর আহত স্বরূপ মাজীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার এক নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন।
পাঁশকুড়ার সাধুয়াপোতা, চিল্কা, পুলশিটা প্রভৃতি গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে বাজি তৈরির কাজে যুক্ত বেশ কিছু পরিবার। বছর সাতেক আগে পুলশিটা গ্রামের মাজীপাড়ার এক বাসিন্দা বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণে মারা যান। তারপরেও বন্ধ হয়নি ওই অবৈধ ব্যবসা। মৃতের জ্ঞাতি সম্পর্কিত ভাই গোবিন্দ, গোপাল, স্বরূপ তারপরেও অবৈধ বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। শুক্রবার সকালে তাঁরা বাড়িতে বাজি তৈরি করছিলেন। সকাল ৯টা নাগাদ বাড়ির মধ্যে বিস্ফোরণ হলে আগুনে ঝলসে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সোনালীর। বিস্ফোরণের জেরে ওই বাড়ির একতলার ছাদ ও দোতলা ঘরের তিন দিকের দেওয়াল ভেঙে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে প্রথমে পুকুর থেকে যন্ত্রচালিত পাম্প দিয়ে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। আহতদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পাঁশকুড়ার পুলিশ ও তমলুক থেকে দমকলের ইঞ্জিন গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল মাজী পরিবারের পাকাবাড়ির দোতলার একটি ঘরের তিন দিকের দেওয়াল উড়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে একতলার ছাদ। বাড়ির মধ্যে বাজি ও বারুদের গন্ধ। ঘটনাস্থলে থাকা স্থানীয় বাসিন্দা অনুপ রানা, স্বপন হুদাইতরা জানান, সকাল ৯টা নাগাদ তাঁরা আচমকা প্রচণ্ড শব্দ শুনতে পান। তারপর একের পর এক শব্দ হতে থাকে। প্রায় পাঁচ মিনিট ধরে চলে সেই শব্দ-তাণ্ডব। তাঁরা ছুটে এসে দেখেন বাড়ির দোতলার একটি ঘরের মধ্যে আগুন জ্বলছে। দেওয়াল ভেঙে নীচ তলায় পড়ে রয়েছে। আগুনে ঝলসে আহতরা কাতরাচ্ছেন।
পুলশিটা গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, “গ্রামের মাজীপাড়ার কিছু পরিবার দীর্ঘ দিন ধরেই বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির কাজ করেন। ওই কাজ বন্ধ করার জন্য তাঁদের বোঝানো হয়েছিল। কিন্তু কেউ আমাদের কথা শোনেননি।”
জেলা পুলিশ সুপার সুকেশ কুমার জৈন বলেন, “বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”
|
এই সংক্রান্ত খবর: বাজিতে বিস্ফোরণ, ঘরেই মৃত দম্পতি |
|
|
|
|
|