|
|
|
|
বাজিতে বিস্ফোরণ, ঘরেই মৃত দম্পতি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কালনা |
বসতবাড়ির মধ্যেই বেআইনি বাজি কারখানা চালাচ্ছিলেন দম্পতি। বাড়িতে ছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা, দুই ছেলে। ছিলেন দুই কর্মীও। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুরে কালনা ২ ব্লকের আনুখালে বাড়িতে আচমকা আগুন লেগে যাওয়ায় ঘর থেকে বেরোনোর সুযোগ পাননি তাঁরা। পুড়ে যাওয়া খাটের নীচ থেকেই উদ্ধার করা হয় মানিক সাঁতরা (৩২) ও তাঁর স্ত্রী কাজল সাঁতরার (২৪) দলা পাকানো দেহ। গুরুতর আহত হন বৃদ্ধ বাবা-মা ও এক কর্মচারী।
আনুখালের বামুনপাড়া লাগোয়া টালির বাড়িতে বহুদিন ধরেই থাকেন ওই দম্পতি। গ্রামবাসীরা জানান, মাণিকবাবু মূলত মাছ ধরা ও এলাকার নানা পুকুরে চুক্তিতে মাছ চাষ করতেন। বছর তিনেক আগে বাজি তৈরির ব্যবসা শুরু করেন। বিভিন্ন পুজো, বিয়ের অনুষ্ঠানে পাইকারি দরে বাজি দেওয়ার বরাত নিতেন তিনি। মাটির পাঁচিল দিয়ে ঘেরা বাড়ির উঠোনে খড়ের চাল দেওয়া একটি ঘরে তৈরি হত বাজি। পরে পাশের দুটো ঘরে সেগুলি রাখা হত। খরিদ্দার এলে সেখান থেকেই বিক্রিও হত। কিন্তু সরকারি লাইসেন্স বা অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা কিছুই ছিল না। |
আগুন নেভাচ্ছে দমকল। —নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন দুপুরে দুটো নাগাদ আচমকা একসঙ্গে প্রচুর বাজি ফাটতে শুরু করে। স্থানীয় কৌশিক চক্রবর্তী, শ্যামলবাবুরা জানান, মনে হচ্ছিল ভূমিকম্প হচ্ছে। আশপাশের অনেক বাড়িরই খাট, আলমারি পর্যন্ত কেঁপে ওঠে। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে একাধিক বাজি ফাটতে থাকে। পড়শিরা বাইরে বেরিয়ে দেখেন, সাঁতরা বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁরাই পাশের ডোবা থেকে জল এনে আগুন নেভাতে শুরু করেন। খবর যায় কালনা থানা ও দমকলেও। তবে আগুন লাগার শুরুতেই বেরিয়ে আসায় প্রাণে বাঁচে যান মানিকবাবুর কর্মচারী বুদ্ধ মালিক ও ভাগ্নে পিন্টু ধারা। মাণিকবাবুর মাকেও পিছনের জানালা ভেঙে বের করেন গ্রামবাসীরা। তাঁর বাবাকেও উদ্ধার করা হয়। তখন স্কুলে থাকায় বেঁচে যায় তাঁদের আট ও পাঁচ বছরের দুই ছেলে। ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে দমকল। ঘটনাস্থলে যান এসডিপিও ইন্দ্রজিৎ সরকার। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে আরও দু’টি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে প্রচুর বাজি। কিন্তু জনবসতিপূর্ণ এলাকায় অবাধে বাজির ব্যবসা চলে কীভাবে? গ্রামের অসীম চক্রবর্তীর দাবি, কিছু গ্রামবাসী আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওরা বন্ধ করতে রাজি হয়নি।”
বিকেল চারটে নাগাদ ঘরের কোণ থেকে তাঁদের দলা পাকানো দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের অনুমান, বাজির আওয়াজে ভয় পেয়ে তাঁরা খাটের তলায় আশ্রয় নেন। পরে চারিদিক আগুন, ধোঁয়ায় ভরে যাওয়ায় আর বেরোতে পারেননি।
|
এই সংক্রান্ত খবর: বাড়িতে মজুত বাজি-বারুদ, বিস্ফোরণে মৃত্যু বধূর |
|
|
|
|
|