মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাজ্য টিটি সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদে ফিরতে চলেছেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। যিনি কয়েক মাস আগেই সংস্থার কাজে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পদত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন!
সরে দাঁড়াচ্ছেন ওই পদে মনোনয়ন জমা দেওয়া বিরোধীপক্ষের প্রার্থী, রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তিনি বলে দিয়েছেন, “যা পরিস্থিতি তাতে আমি টিটিতে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি না।”
লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার সোমনাথবাবুকে বৃহস্পতিবার ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “আপনি টিটির প্রেসিডেন্ট থাকুন। কাজ করুন। সুব্রতদা (মুখোপাধ্যায়) প্রেসিডেন্ট পদে লড়বেন না।” ফোনের কথা স্বীকার করেছেন প্রাক্তন সি পি এম সাংসদও। বললেন, “ওঁকে আমি বলেছি কেউ দাঁড়ালে আমি সরে যাব।” যা শুনে সুব্রতবাবু হাসতে হাসতে বললেন, “আরে উনি তো পদত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন। বলেছিলেন আর টিটিতে ফিরবেন না। সে জন্যই তো দেড় মাস অপেক্ষা করে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলাম কেউ বিপক্ষে দাঁড়ালে সরে দাঁড়াব। এখন দেখছি উনি আবার দাঁড়িয়ে গিয়েছেন। কী আর করা যাবে। লড়ব না। এই সামান্য একটা ব্যাপার নিয়ে তো ঝগড়া করা যায় না।”
ক্লাব বা সংস্থার ঝামেলায় সাধারণত মুখ্যমন্ত্রীরা নিজেদের জড়ান না। কয়েক বছর আগে সিএবি-র নির্বাচনে জড়িয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। এ বার টিটিতে সোমনাথ বনাম সুব্রত- হাইপ্রোফাইল দুই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের লড়াই থামাতে মাঠে নামলেন আর এক মুখ্যমন্ত্রী-- মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কয়েক মাস আগে সংস্থার নির্বাচনে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের গোষ্ঠীই ক্ষমতায় এসেছিল। প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন সোমনাথবাবু। কিন্তু সেই নির্বাচনে রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের বিরুদ্ধে জোর করে ভোট করানোর অভিযোগ ওঠে। নির্বাচন বাতিল করে দেয় সর্বভারতীয় টিটি সংস্থা। এর পর অরূপ-পৌলমী-মৌমাদের খেলার কর্তাদের মধ্যে ঝামেলা দেখে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সোমনাথবাবু বলে দেন, “আমি ওদের ঝগড়াঝাঁটি দেখে বীতশ্রদ্ধ। পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। আর কখনও প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়াব না।”
কিন্তু তা বলে কী এমন হল যে আপনি আবার প্রেসিডেন্ট পদে দাঁড়ালেন? সোমনাথবাবু বলেন, “সবাই মিলে অনেক দিন ধরে সাধাসাধি করছিল, তাই।” কিন্তু ময়দানে শোনা যাচ্ছে অন্য গুঞ্জন। রাজ্য কবাডি সংস্থার চেয়ারম্যান সুব্রতবাবুকে খেলার মাঠে আর বাড়তে দিতে চান না ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। সে জন্যই তিনি সমর্থন করছেন সোমনাথবাবুকে। মুখ্যমন্ত্রীর ফোন তারই জের।
সর্বভারতীয় সংস্থার নির্দেশে ২৭ অক্টোবর নির্বাচন হচ্ছে রাজ্য টিটি সংস্থার। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রদীপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে। বুধবার ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ওই দিনই শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন জমা দেন সোমনাথবাবু।
প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন না হলেও অন্য পদে অবশ্য নির্বাচন হচ্ছে। সচিব পদে দাঁড়িয়েছেন সোমনাথবাবুর জামাই দেবীপ্রসাদ বসু। বিরোধী পক্ষের প্রার্থী কলেজ সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। অন্য পদেও নির্বাচন হচ্ছে।
কিন্তু সোমনাথ বনাম সুব্রত-র উত্তেজক লড়াই মুখ্যমন্ত্রী থামিয়ে দেওয়ায় বাকি নির্বাচন নিয়ে কোনও উত্তাপই আর থাকল না।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.