|
|
|
|
সংগঠনের দফতরে পুজো হবে,
রায়ে খুশি সোনাগাছি
নিজস্ব সংবাদদাতা |
 |
|
জয় হল যৌনকর্মীদের। হাইকোর্ট তাদের দুর্গাপুজোর অনুমতি দিয়েছে। তবে, রাস্তায় মণ্ডপ গড়ে নয়, পুজো করতে হবে তাঁদের সংগঠনের দফতরে। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার তাঁর রায়ে বলেন, “যৌনকর্মীদের পুজোর অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।” তিনি আরও জানান, যৌনকর্মীরা সমাজের মূল স্রোতের পুজোয় ব্রাত্য। অথচ তাঁদের অস্বীকার করার উপায় নেই সমাজের। পুজো করতে চেয়ে এই প্রান্তিক মানুষদের আবেদন তাই অস্বীকার করা যায় না।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাস্তায় নয়, যৌনকর্মীরা পুজো করবেন সোনাগাছি অঞ্চলে যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘দুর্বার মহিলা সমন্বয় সমিতি’র অফিসের হলঘরে। কারণ শেষ মুহূর্তে নতুন করে রাস্তায় পুজোর অনুমতি দেওয়া প্রশাসনিক ভাবে সম্ভব নয়। হলের বাইরে তাঁরা ১৫ ফুট বাই ৮ ফুট অতিরিক্ত জায়গা পাবেন। সেখানে বসার ব্যবস্থা থাকবে। পুজোর আয়োজন, ফল কাটা প্রভৃতিও সেখানে হতে পারে। তিন আইনজীবী চান্দ্রেয়ী আলম, দেবযানী সেনগুপ্ত ও সুস্মিতা সাহা দত্তকে স্পেশাল অফিসার নিয়োগ করেছে কোর্ট। যৌনকর্মীদের এই পুজো যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তা তদারকি করবেন তাঁরা।
সোনাগাছি এলাকায় যৌনকর্মীদের নিজস্ব দুর্গাপুজো চেয়ে পুলিশের কাছে আবেদন করেছিল দুর্বার। আইনশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি পুলিশ। দুর্বার আদালতে মামলা করে। তাদের তরফে আদালতকে জানানো হয়, যে জায়গায় পুজো করার অনুমতি দিচ্ছে না পুলিশ, ঠিক সেখানেই কিছু দিন আগে একটি ক্লাব জাঁকজমক করে গণেশপুজো করেছে। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন মন্ত্রীরা গুন্ডার মতো আচরণ করছেন। তাঁরা রাস্তাঘাট বন্ধ করে পুজো করছেন। এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনারের কাছে কৈফিয়ৎ তলব করেন বিচারপতি।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে রাজ্য সরকার । কিন্তু শেষ পর্যন্ত রায় গেল যৌনকর্মীদের পক্ষে। যৌনকর্মীদের তরফের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ এ দিনের রায়ের পরে বলেন, “রাজনৈতিক নেতাদের মদতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা বন্ধ করে পুজো হয়। যদিও বিচারপতি যৌনকর্মীদের পুজো নিয়ে মনস্থির করেছিলেন। তিনি একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তা-ই হল।”
রায়ের পরে সোনাগাছি জুড়ে ছিল লড়াই জেতার উচ্ছ্বাস। মূর্তির বায়না আগেই দেওয়া হয়েছিল। এ দিন চাঁদার বিলবই ছেপে এসেছে। পুরোহিতও ঠিক হয়েছে। বিতরণ করা হয়েছে মিষ্টি। দুর্বারের প্রধান স্মরজিৎ জানা বলেন, “যৌনকর্মীদের অধিকারের দাবি জয় পেল।” সংস্থার মুখপাত্র মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় এ দিন জানান, ওই এলাকায় তাঁদের সংগঠনের একাধিক দফতর রয়েছে। তার মধ্যে অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিটের দফতরটিতে জায়গা কিছুটা বেশি। দুর্গাপুজোর জন্য ওই জায়গাকেই বাছা হচ্ছে।
|
পুরনো খবর: যৌনকর্মীদের পুজো করতে দেওয়া উচিত, বলল হাইকোর্ট |
|
|
 |
|
|