|
|
|
|
বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া, বাড়িতেই ‘খুন’ হলেন মহিলা |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
স্নানঘর থেকেই মেয়ের চিৎকার আর কান্না শুনতে পাচ্ছিলেন সত্তর বছরের অসুস্থ বৃদ্ধা। কিন্তু বাইরে থেকে স্নানঘরের দরজা বন্ধ। তাই সেখান থেকেই চিৎকার করে লোকজনকে ডাকতে থাকেন তিনি। তাঁর চিৎকার শুনে বাড়িওয়ালি এসে দেখেন, পাশের একচিলতে ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় ছটফট করছেন তাঁর মেয়ে। পাশেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মেয়ের বন্ধু এক যুবকও।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে। পাটুলি থানা এলাকার শ্রীকলোনির একটি বাড়ির তিনতলার ঘর থেকে পুলিশ মীনাক্ষী দত্ত চৌধুরী (৪০) ও সরোজ রায় (৪৫) নামের ওই দু’জনকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানের চিকিৎসকেরা মীনাক্ষীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, সরোজ আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর গায়ে একাধিক ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। বুকের ডান দিকে রয়েছে একটি বড় ক্ষত। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, দু’জনের মধ্যে ছুরি নিয়ে মারামারি হয়েছিল। তাতেই মৃত্যু হয়েছে মীনাক্ষীর। পুলিশ জানায়, ওই ঘর থেকে একটি ছুরি উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে কীটনাশকের খালি শিশিও।
পুলিশ জানায়, সরোজ একটি বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থায় রক্ষীর কাজ করতেন। দিন পনেরো আগে চাকরি ছেড়ে দেন। তাঁর বাড়ি পাটুলি থানার সূর্যনগর এলাকায়। সরোজ বিবাহিত। তাঁর স্ত্রী ও দুই পুত্র রয়েছে। পুলিশ তদন্তে জেনেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কালীঘাটে গিয়ে মীনাক্ষীকেও বিয়ে করেছিলেন তিনি। |
সরোজ রায় ও মীনাক্ষী দত্ত চৌধুরী |
মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সরোজকেই দায়ী করেছেন মীনাক্ষীর মা লীলাদেবী। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়ে সংসার পাতার জন্য সরোজের উপরে চাপ দিতেন। সরোজ তাতে রাজি হননি। পুলিশের কাছে বৃদ্ধার অভিযোগ, সরোজ তাঁর মেয়েকে খুন করে পরে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তবে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পুলিশের কাছে মীনাক্ষীর পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
লালবাজারের গোয়েন্দারা ও ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা এ দিন ওই ঘরে যান। ঘর থেকে রক্ত, ছুরি, কীটনাশকের শিশিটি সংগ্রহ করেন। মীনাক্ষীর হাতের শিরা কাটা ছিল। পেটেও ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। সরোজের হাতের শিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটা হয়েছে বলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। মীনাক্ষীর মৃতদেহ ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শ্রীকলোনিতে একটি বাড়ির তিনতলায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে মেয়ে ও ছেলের সঙ্গে থাকেন লীলাদেবী। তাঁর ছেলে অভিজিৎ একটি বেসরকারি সংস্থার সেলসম্যান। এ দিন সকাল আটটা নাগাদ কাজে বেরিয়েছিলেন অভিজিৎ। সকাল ৯টা নাগাদ সরোজ মীনাক্ষীদের ঘরে ঢোকেন। তার পরেই ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি শুরু হয়। পুলিশ জানায়, বছর আড়াই আগে ওই বৃদ্ধা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হন। ছেলের চাকরিতেই সংসার চলে। পড়শিরা জানান, সরোজ প্রায়ই ওই বাড়িতে যেতেন। |
|
|
|
|
|