বিতর্কিত জয় টোলগেদের
মহমেডান ৩ (জোসিমার, দীপেন্দু, বসন্ত)
ইউনাইটেড স্পোর্টস ২ (সৌভিক, সুরজিৎ)
লিউড সুপারস্টার কোয়েল মল্লিক যখন বিরতিতে বলে কিক মারলেন, তখনও যুবভারতীতে ম্যাচ খেলতে নামেননি কোনও তারকা ফুটবলার।
র‌্যান্টি মার্টিন্স, টোলগে ওজবে, বেলো রজ্জাকরা রিজার্ভ বেঞ্চে বসে ছিলেন। কলকাতা লিগের প্রথম বড় ম্যাচের বিরতিতে নিজের ছবির প্রচারে আসা কোয়েলকে নিয়েই তাই উচ্ছ্বাসের ঢেউ উঠল যুবভারতীতে। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার আগে কোয়েল যা দেখে বলেও গেলেন, “কলকাতা ফুটবল খুব একটা দেখা হয় না। কিন্তু এই ম্যাচেও যে এত উত্তেজনা থাকে জানতাম না।”
অথচ মহমেডান বা ইউনাইটেড স্পোর্টস--দু’দলের কোচই আই লিগের কথা ভেবে এই ম্যাচকে গুরুত্ব দেননি। নামিয়ে দিয়েছিলেন দ্বিতীয় দলকে। এলকো সতোরি একজনও বিদেশিকে নামাননি শুরুতে। লালকমল, দীপক মণ্ডলদের নাম ছিল না টিম তালিকায়। আর আজিজ নামিয়েছিলেন শুধু জোসিমারকে।
সুন্দরী-হাইহিল-ফুটবল। বুধবার যুবভারতীতে অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিক। ছবি: উৎপল সরকার।
তা সত্ত্বেও বুধবারের ‘বড় ম্যাচ’ বিতর্কের বাইরে থাকতে পারল না। রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে খেলার শেষে তীব্র ক্ষোভে ইউনাইটেড কোচ বলে ফেললেন, “এ জন্যই তো আমি কলকাতা লিগকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। এ ভাবে গোল বাতিল করলে আর জিতব কী ভাবে?” আর মাঠে না নামা গোলমেশিন র‌্যান্টি মার্টিন্সের প্রতিক্রিয়া “আবার খারাপ রেফারিং-এর শিকার হলাম। আজকের ম্যাচ তো জোর করে হারিয়ে দেওয়া হল।”
মাঠ ছেড়ে একে একে ড্রেসিংরুমের দিকে যাচ্ছিলেন ইউনাইটেডের সৌভিক, রফিক, বিনীতরা। প্রত্যেকের চোখেমুখে ক্ষোভের আগুন। স্টেডিয়ামের সামনে তখন সাদা-কালো পতাকার ভিড়। মহমেডানের জয়ের উল্লাসে বাজি-পটকা ফাটছে। মরসুমের প্রথম বড় ম্যাচে যে জয় পেয়েছেন টোলগে-পাইতেরা। এই ছবিটাই হয়তো বদলে যেত। যদি ইনজুরি টাইমে ইউনাইটেডের রফিকের করা গোলটি রেফারি অজিত দত্ত অফসাইড বলে বাতিল না করতেন।
৩-০ থেকে ৩-১। শেষ পর্যন্ত ৩-২ হল ম্যাচ। লড়াইটা যে এমন হাড্ডাহাড্ডি হবে সেটা শুরুতেও বোঝা যায়নি। বাপি সাহা, দীপক মণ্ডল (জুনিয়র)রা শুরুতে খেলাটাই ধরতে পারেননি। সেই সুযোগে পরপর তিনটি গোল করে যায় আব্দুল আজিজের দল। কিন্তু বিরতির পর উলট পুরাণ। বেলোকে নামিয়ে এলকো পাল্টা চাপ দিতেই জোসিমাররা সমস্যায়। ইউনাইটেড পরপর দু’টো গোল করার পর হাজার দশেকের গ্যালারিতে উত্তাপ ছড়াল। ম্যাচও জমে যায়।
টোলগেকে শুরুতে নামাননি আজিজ। ৪-৪-২ ফর্মেশনে জোসিমারের সঙ্গী হয়েছিলেন দীপেন্দু বিশ্বাস। আর সুযোগ পেয়েই ক্লাব ফুটবলে দু’শো গোলের মালিক দেখালেন এখনও পুরনো চাল কী ভাবে ভাতে বাড়ে। জোসিমার গোল করে যাওয়ার পর দীপেন্দুর গোলটা মনে রাখার মতো। বসিরহাটের দীপেন্দু ভিড়ের মধ্যে বল ধরে ইউনাইটেড গোলকিপারকে নিখুঁত প্লেসিং-এ বোকা বানান।
ব্রাজিলিয়ান জোসিমারের সঙ্গে বঙ্গসন্তান দীপেন্দুর পেশাদার টক্কর মহমেডানকে শুরুতে এগিয়ে দিয়েছিল অনেকটাই। ম্যাচের পর উচ্ছ্বসিত দীপেন্দু বলছিলেন, “আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। বহু দিন বাদে গোল পেলাম। শেষ কবে গোল পেয়েছি নিজেও ভুলে গেছি।” এর পর বসন্ত সিংহ ৩-০ করার পর বিশ্রী হারের ভয়ে নাইজিরিয়ান বেলোকে নামান এলকো। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
দীপেন্দুর পরিবর্তে টোলগে এবং খেমতাং পাইতের জায়গায় অজয় সিংহকে নামান আজিজ। তাতেও সামাল দিতে পারেননি তিনি। উলটে আক্রমণে জোর দিতে গিয়ে দু’গোল খেয়ে বসে মহমেডান। শেষ পর্যন্ত রেফারি অজিত দত্তের ‘কৃপায়’ তিন পয়েন্ট আসে সাদা-কালো তাঁবুতে।

মহমেডান: অশোক, বরুণদীপ, বলদীপ, জে প্রসাদ (গগনদীপ), নৌসাদ, পাইতে (অজয়), জাস্টিন, স্যামসন, বসন্ত, দীপেন্দু (টোলগে), জোসিমার।
ইউনাইটেড: অভিজিত, দীপক, বাপি, অনুপম (বেলো), সুখেন, জয়ন্ত, বিশ্বজিত (আসিফ), সৌভিক, রফিক, বিনীত (এরিক), সুরজিত।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.