|
|
|
|
জগনকে স্বাগত জানাতে জেলের বাইরে জনজোয়ার |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
জেলের বাইরে পা রাখতেই অভিনন্দনে ভেসে গেলেন ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সভাপতি জগন্মোহন রেড্ডি।
আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় দীর্ঘ ১৬ মাস বন্দি থাকার পরে আজ হায়দরাবাদের চঞ্চলগুড়া জেল থেকে যখন বেরিয়ে আসেন জগন, বাইরে তখন জনারণ্য। সমর্থকদের উল্লাসে কান পাতা দায়। উড়ছে গোলাপ পাপড়ি। সকাল থেকে জামিনে নেতার মুক্তির খবর পেয়ে জেলের বাইরে জমতে শুরু করে ভিড়। আর জগন বেরোতেই শুরু হয়ে যায় নাচ। নেতার মুখেও তখন চওড়া হাসি। সমর্থকদের উদ্দেশে হাত জোড় করে কৃতজ্ঞতা জানালেন তিনি। পরে হাত মেলালেন কারও কারও সঙ্গে। নেতাকে কাঁধে চাপিয়ে তাঁর গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দিলেন ভক্তরাই। লোটাস পন্ডে নিজের বাড়ির দিকে যখন তাঁর এসইউভি রওনা দেওয়ার জন্য তৈরি, তখনও সরানো যাচ্ছে না জগন-ভক্তদের।
গত বছর মে মাসের শেষে গ্রেফতার হন জগন। তার পর থেকে ছ’বার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। গত বছর তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সিবিআইকে দায়িত্ব দিয়েছিল। যে তদন্ত শেষ হয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছিল সিবিআই। তার পরেই জগনকে শর্তাধীন জামিনে মুক্তি দেয় হায়দরাবাদের বিশেষ সিবিআই আদালত। |
|
জেলের বাইরে সমর্থকদের মাঝে জগন্মোহন রেড্ডি। মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই। |
জগন্মোহন রেড্ডির মুক্তিতে তাঁর দলে স্বস্তির হাওয়া বইছে। বিশেষত অন্ধ্র উপকূল এবং রায়লসীমা এলাকায় রাজ্যভাগের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ চলছে, তাতে জগন এসে ফের নেতৃত্ব দিতে পারবেন ভেবে দলের অনেকেই নিশ্চিন্ত। জগন জামিনের আবেদনেও সেই কথা উল্লেখ করে বলেছেন, তাঁর দলের এই সময়ে তাঁকে প্রয়োজন। কিন্তু এ সব সত্ত্বেও জগনের মুক্তি নিয়ে বিতর্ক কাটছে না। রাজনৈতিক শিবিরের ধারণা, যথেষ্ট হিসেবনিকেশ করেই জগনকে এই সময়ে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি অন্ধ্রেও বিধানসভা ভোট। জগন জেলে থাকাকালীন তাঁর বোন শর্মিলা এবং মা ওয়াই এস বিজয়াম্মা ছিলেন দলের মুখ। এই সময়ে ছাড়া পাওয়ায় এ বার প্রচারে নেমে পড়বেন খোদ জগনই। আর ভোটের আগে সে জন্য জগনের হাতে যথেষ্ট সময় থাকছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁরা মনে করছেন, জগনকে নিজেদের স্বার্থে এখন কাজে লাগাতে চাইছে কংগ্রেস। বস্তুত ওয়াই এস রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর পর থেকেই জগনের সঙ্গে কংগ্রেসের টানাপোড়েন। অন্ধ্রে জগনের জন্য অনেকটাই জমি হারাতে হয়েছে কংগ্রেসকে। গোড়ার দিকে কংগ্রেসের তাই মনে হয়েছিল, সম্পত্তি মামলায় ফাঁসিয়ে জগনকে জেলে আটকে রেখে তাঁর রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে হল উল্টো ফল। জেলে গিয়েও জগন বিপুল জনসমর্থন পেলেন। তাই কংগ্রেসের অন্দরের খবর, ভবিষ্যতে সীমান্ধ্রের বেশির ভাগ আসনে জগন্মোহন ভাল ফল করলে আখেরে লাভ হবে কংগ্রেসেরই। তাই পরিকল্পনামাফিক জগনকে এই সময়ে মুক্তি দেওয়া হল। যাতে জগন জিতলে তাঁকে ইউপিএ-তে নিয়ে আসা যায়।
তেলুগু দেশম পার্টির নেতা চন্দ্রবাবু নায়ডুরও অভিযোগ, জগনের এই জামিন ‘ম্যাচ-ফিক্সিং’ ছাড়া কিছুই নয়। তাঁর মতে, ওয়াইএসআর কংগ্রেসের সঙ্গে কংগ্রেস যে সমঝোতা আগে থেকেই করে রেখেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, চন্দ্রবাবু নায়ডু নিজেই গত বেশ কয়েক দিন ধরে রাজনাথ সিংহের মতো নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভবিষ্যতে এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার রাস্তা খোলা রাখতে চান নায়ডু, দাবি বিজেপি সূত্রেই। সে ক্ষেত্রে কংগ্রেসের কাছে জগনই এখন তুরুপের তাস। কিছু দিন আগে জগনের বোনকেও বলতে শোনা গিয়েছিল, ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা হতেও পারে।
|
পুরনো খবর: জগনের জামিন |
|
|
|
|
|