ঢাকুরিয়ায় আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যথারীতি মামলা চলছে। এ বার ওই ঘটনায় রাজ্যের দমকল বিভাগের ভূমিকা তদন্ত করে দেখার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থের মামলা দায়ের করা হল। চার সপ্তাহের মধ্যে এই ব্যাপারে আদালতে হলফনামা দাখিল করার জন্য সোমবার দমকল দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর ওই হাসপাতালে আগুন লেগেছিল। রোগী ও নার্স মিলিয়ে মারা যান ৯৩ জন। পুলিশ তদন্তে নামে। দীর্ঘ তদন্তের পরে হাসপাতালের ১২ জন ডিরেক্টর এবং চার জন কর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়। সেই মামলা এখনও চলছে।
এর মধ্যেই এ দিন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থের মামলাটি করেন আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার। তাঁর অভিযোগ, আমরি কাণ্ড নিয়ে পুলিশি তদন্তে দমকল বিভাগকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অথচ আগুন লাগার পিছনে দমকল বিভাগের গাফিলতি রয়েছে। তারা দায় এড়াতে পারে না।
কেন তিনি দমকলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করছেন, তার ব্যাখ্যাও দেন রমাপ্রসাদবাবু। তাঁর দাবি, ২০০৫ এবং ২০০৮ থেকে ’১১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ওই হাসপাতালকে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দেওয়া হয়েছে। প্রতি বারেই হাসপাতালের বেসমেন্ট পরিষ্কার করার শর্তে শংসাপত্র দেওয়া হয় এবং প্রতি বারেই হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ ‘পরিষ্কার করে দিচ্ছি’ বলে আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু সেই কাজটা করা হয়েছে কি না, পরের বার শংসাপত্র দেওয়ার আগে তা খতিয়ে দেখা হয়নি।
দমকলের কর্তারা অবশ্য এ দিন হাইকোর্টে দায়ের করা জনস্বার্থের মামলা সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে দমকলের একটি সূত্রে বলা হয়, শুধু আমরি কাণ্ডে নয়, স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের পরেও সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত দমকলের কোনও অফিসারদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়নি। শহরে বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের পরে দেখা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট ভবনে যথাযথ
অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা না-থাকা সত্ত্বেও তারা দমকলের ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে। হাইকোর্ট যদি দমকলের কাজকর্ম নিয়ে কোনও তদন্তের নির্দেশ দেয়, তা হলে এই সব তথ্য প্রকাশ পাবে বলে আশা করছেন দমকলের এক শ্রেণির কর্মী ও অফিসার।
ওই সব কর্মী অফিসার চান, দমকলের বিভিন্ন যন্ত্র কেনা এবং সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও তদন্তের নির্দেশ দিক হাইকোর্ট। |