চেন্নাইয়ে ভারতীয় বোর্ডের বিশেষ সাধারণ সভায় তাঁর ভাগ্য নির্ধারণের দিন যত এগিয়ে আসছে, তত যেন প্রবল আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছেন ললিত মোদী।
আর প্রাক্তন আইপিএল কমিশনারের টার্গেট কে? কে আবার, নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন।
ক্ষুব্ধ মোদীর হুঙ্কার, ২০০৯-এ, আইপিএলের দ্বিতীয় সংস্করণে যা আর্থিক নয়ছয় ঘটেছে, সব শ্রীনি করেছেন। তিনি নন। মোদীর হিসেব ভারতীয় বোর্ডের ৬৩ কোটি ৩০ লক্ষ ডলার ক্ষতি হয়েছে স্রেফ শ্রীনির জন্য। মোদীর জন্য নয়। রীতিমতো তথ্যপ্রমাণ উপস্থিত করে টুইটারে মোদী লিখেছেন, ‘সহারা-কোচি চুক্তিতে বোর্ডের ছশো তেত্রিশ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতির কারণ শ্রীনিবাসন। ললিত নয়।’ |
মোদীর কথায়, আইপিএলের দ্বিতীয় সংস্করণের সময় এমন একটা ধুরন্ধর চাল আমদানি করেছিলেন শ্রীনি যাতে তাঁর কুকীর্তি ঢাকা পড়বে। বোর্ডের অনুমোদন ছাড়াই ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকাকে একটা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলেছিলেন শুধু ভারতীয় বোর্ডের আর্থিক ব্যাপারস্যাপারের জন্য। ‘ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে শ্রীনিবাসনের চুক্তি হয় ২০০৯ সালের ৩০ মার্চ। যেখানে একটা শর্ত ছিল যে ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকাকে একটা আলাদা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে শুধু টুর্নামেন্ট চালানোর জন্য। যে অ্যাকাউন্টটা আদতে ভারতীয় বোর্ডের। কিন্তু ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকার নামে চলবে।’
নথিপত্র অনুযায়ী, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট দেখেছে, ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকাকে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমোদন ছাড়াই যা টাকাপয়সা ভারতীয় বোর্ড দিয়েছে, সবই আদতে ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট ভেঙে করা হয়েছে। যে কারণে পেনাল্টি হিসেবে তিনগুণ মাসুল দিতে হবে বোর্ডকে। যার আর্থিক পরিমান মোটামুটি ৩২৩৭ কোটি টাকা! মোদীর আরও অভিযোগ, আইপিএলের মিডিয়া রাইট নিয়েও নয়ছয় করেছেন শ্রীনি। স্পনসরদের ব্ল্যাকমেল করে ব্যক্তিগত সুযোগসুবিধা নিয়েছেন।
এক দিকে প্রাক্তন আইপিএল কমিশনারের এমন তীব্র সব অভিযোগ। অন্য দিকে আবার আইপিল স্পট ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িত শ্রীনির জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পনের বিরুদ্ধে মুম্বই পুলিশের চার্জশিটের তোড়জোড়। দুইয়ে মিলে নির্বাচনের আগে চাপ উত্তরোত্তর যেন বৃদ্ধি পাচ্ছে শ্রীনির আকাশে।
শোনা যাচ্ছে, মুম্বই পুলিশের চার্জশিটে তিন জনের নাম অভিযুক্ত হিসেবে থাকবে। একজন অবশ্যই মইয়াপ্পন। বাকি দুই অভিনেতা বিন্দু দারা সিংহ ও পাকিস্তানি আম্পায়ার আসাদ রউফ। পুলিশের এক সূত্র মারফত নাকি জানা গিয়েছে যে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শুরু করে ফোনের রেকর্ড বিভিন্ন জায়গা থেকেই নাকি দেখা গিয়েছে যে বুকিদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল মইয়াপ্পনের। বিন্দু ও মইয়াপ্পনকে প্রথমে গ্রেফতার করলেও পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। জামাইয়ের বিরুদ্ধে চার্জশট পেশ হলে প্রাক-নির্বাচন প্রেক্ষাপটে শ্রীনির সমস্যা আরও প্রবল হবে বলে মনে করা হচ্ছে। যা খবর, চলতি সপ্তাহের শেষাশেষি চার্জশিট পেশ হতে পারে।
|