আপাত-হিসাবে বোর্ড নির্বাচনের বাকি আর দিন পনেরো। এবং সেখানে গনগনে যুদ্ধের আঁচ আগাম টের পেয়ে গেলেন নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসন। তা যতই তিনি গত দু’দিনে পরপর এশীয় ক্রিকেট কাউন্সিল ও শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করুন না কেন।
যা খবর, রবিবার চেন্নাইয়ে দাক্ষিণাত্যের ক্রিকেট সংস্থাদের নিয়ে একটা বৈঠক ডেকেছিলেন শ্রীনিবাসন। রবিবার শ্রীনির ডাকা বৈঠকে কর্নাটক, হায়দরাবাদ, কেরল এবং তাঁর নিজের রাজ্য সংস্থা তামিলাড়ু ছিল বটে, কিন্তু গরহাজির থেকেছে গোয়া এবং অন্ধ্রপ্রদেশ।
ঘটনা হচ্ছে, শ্রীনিকে যদি তৃতীয় বছরের জন্য প্রেসিডেন্ট পদের মেয়াদ পূর্ণ করতে হয়, তা হলে দক্ষিণেরই এক রাজ্য সংস্থাকে তাঁর নাম প্রস্তাব করতে হবে। আবার দক্ষিণেরই আর এক সংস্থাকে সেটা সমর্থন করতে হবে। আবার শ্রীনির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে যদি কেউ দাঁড়ায়, তাঁকেও একই ফর্মূলা মেনে আসতে হবে। কিন্তু রবিবারের পর শ্রীনি-র গলায় কাঁটা হয়ে থাকতে পারে অন্ধ্র ও গোয়া ক্রিকেট সংস্থা। কারণ এরা চাইলে বিরোধী প্রার্থীর নাম এক জন প্রস্তাব করতে পারে। আর এক জন সমর্থন করতে পারে।
বোর্ডমহলের ধারণা, গোয়া এবং অন্ধ্র নির্বাচনে শশাঙ্ক মনোহরকে সমর্থন করবে বলে শ্রীনির ডাকা রবিবাসরীয় বৈঠকে যায়নি। দিন দু’য়েক আগে আনন্দবাজারে আগাম ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল যে, নির্বাচনে শ্রীনির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে পারেন মনোহর। এ দিন শ্রীনি-র ডাকা বৈঠকে দুই ক্রিকেট সংস্থার অনুপস্থিতিতে সেই ইঙ্গিত আরও জোরালো হল। বিরোধীদের সব কিছু পরিকল্পনা মাফিক চললে, গোয়া এবং অন্ধ্র-র মধ্যে এক সংস্থা মনোহরের নাম প্রেসিডেন্ট পদে প্রস্তাব করবে। আর এক সংস্থা তাতে সমর্থন জোগাবে।
বলা হচ্ছে, বোর্ড নির্বাচনের আগে বিভিন্ন আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাদের মধ্যে এ রকম বৈঠক হয়ে থাকে। যেখানে নির্বাচন নিয়ে স্ট্র্যাটেজি ঠিক করা হয়। শ্রীনিও তেমন বৈঠক ডেকে দাক্ষিণাত্যের সমর্থন সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ ভাবে ধাক্কা খেতে হল কেন? গোয়া বা অন্ধ্র বৈঠকে গেল না কেন? গোয়া ক্রিকেট সংস্থার প্রেসিডেন্ট বিনোদ ফাড়কে বলেছেন, “শ্রীনিবাসন বৈঠক ডেকেছিলেন চেন্নাইয়ে সেটা ঠিক। কিন্তু আমার এখানে কিছু কাজ ছিল। তাই বৈঠকে যেতে পারিনি।” গোয়া সংস্থার প্রেসিডেন্টকে জিজ্ঞেস করা হয় মনোহর সম্পর্কে। বলা হয়, বোর্ডের ৩১-টি অনুমোদিত সংস্থার কেউ কেউ চাইছে শশাঙ্ক মনোহরকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে দেখতে। যার মধ্যে গোয়াও আছে। উত্তরে শ্রীনি বিরোধিতার সম্ভাবনা সরাসরি উড়িয়ে দেয়নি গোয়া। সংস্থার প্রেসিডেন্ট শুধু বলেছেন, “আমরা এখনও কিছু চূড়ান্ত করিনি।”
রাতের দিকে শ্রীনির বিরুদ্ধে আবার হুঙ্কার ছাড়লেন ললিত মোদী। টুইট করলেন, “যে লোকটার নামে সিবিআই চার্জশিট দিয়েছে, তাকে যারা সমর্থন করছে তারাও সবাই চক্রান্তকারী।”
সব মিলিয়ে নির্বাচন যুদ্ধের আগে যথেষ্ট চাপে শ্রীনিবাসন। |