ঘটনার চার দিন পরেও তপসিয়া-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সঞ্জু ধরা পড়েনি। ওই ঘটনায় হায়দার ও করিম নামে আরও দুই অভিযুক্ত সোমবার গ্রেফতার হয়। তিন সপ্তাহের মধ্যে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে তদন্তের রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন।
তপসিয়ার অধিকাংশ মহিলা সন্ধ্যার পরে বাড়ি থেকে বেরোনো আর নিরাপদ মনে করছেন না। এলাকার যুবকেরাও মনে করছেন, সাদাব, জায়েদ ও মেহতাবের মতো পরিণতি তাঁদেরও হতে পারে। ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে বোনের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন ওই তিন যুবক। |
পুলিশ জানায়, বেআইনি নির্মাণ, দালালি করে রোজগার করে সঞ্জু। অবৈধ ট্যানারিও আছে তার। বস্তি এলাকায় বেআইনি বিদ্যুত্ সংযোগও দেয় সে। সঞ্জুর প্রধান সঙ্গী তার ভাই রিঙ্কু। জানা গিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর ওই ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করে সঞ্জুর সঙ্গী করিম, কলিম ও স্যাম্পি। সঞ্জুর নেতৃত্বে ছাত্রীর দাদাদের উপরে হামলা চালায় জনা কুড়ি যুবক। স্থানীয়েরা জানান, সন্ধ্যার পরে নেশাগ্রস্ত যুবকদের মোটরবাইক নিয়ে দাপাদাপি, সামান্য ব্যাপারে ছুরি চালানো রোজের ঘটনা। স্থানীয় ব্যবসায়ী জাফর আলম জানান, ছাত্রী-নিগ্রহ ও তার দাদাদের উপরে হামলার প্রতিবাদে রবিবার সন্ধ্যায় এলাকায় মিছিল বেরোয়। তার পরেও স্থানীয় এক কিশোরীর হাত ধরে টানাটানি করে এক যুবক। কিছু যুবক তা দেখে ফেলায় মোটরবাইক চেপে পালায় সে। বাসিন্দারা জানান, এই ঘটনাই প্রমাণ করে দুষ্কৃতীরা কতটা দুঃসাহসিক। পুলিশ জানায়, অজ্ঞাতপরিচয় ওই যুবকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
শুক্রবারের মধ্যে মূল অভিযুক্তেরা ধরা না পড়লে তপসিয়া বন্ধের ডাক দেওয়া হবে বলে জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। সোমবার এলাকায় স্কুলপড়ুয়া ও সাধারণ মানুষ গণস্বাক্ষর অভিযান করেন। পুলিশ জানায়, সঞ্জু, কলিম, হায়দার, করিম, রিঙ্কু-সহ একদল দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র দাঙ্গা, খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের হয়েছে। বেআইনি অস্ত্র আইনেও মামলা দায়ের হয়েছে। সবই জামিন অযোগ্য অপরাধ। পুলিশ ওই রাতেই রিয়াজ খান নামে এক যুবককে ধরে। বাকিদের খোঁজে গুন্ডা দমন শাখার অফিসারেরাও তল্লাশি শুরু করেছেন।
ছাত্রীটি এ দিন পরীক্ষা দিতে স্কুলে গিয়েছিল বলে জানান তার বাবা মহম্মদ কামরুজ্জামান। মামা মহম্মদ ওয়াসিম আখতার বলেন, “এক ভাগ্নে কিছুটা সুস্থ। বাকি দু’জন সঙ্কটমুক্ত নন।”
|