এক সপ্তাহ ধরে স্কুলের ছাত্রাবাস থেকে নিখোঁজ এক ছাত্র। তার জেরে রবিবার উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর চালায় স্কুল ও ছাত্রাবাসে। অভিযোগ, এক ছাত্রকে মারা হয়। এর জেরে সোমবার ওই ছাত্রাবাস খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানায়, ৯ সেপ্টেম্বর বেলেঘাটার ওই ছাত্রাবাস থেকে নিখোঁজ হয় নবম শ্রেণির ছাত্র শান্তনু মণ্ডল (১৪)। তার বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটকপুকুর বামুনঘাটায়। তাঁর পরিবার বেলেঘাটা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছে।
ছাত্রাবাসটিতে আবাসিক প্রায় ১৩০ জন। সোমবার স্কুল ছাত্রদের নিয়ে যেতে বলে অভিভাবকদের। এ দিন ওই ছাত্রাবাসে দেখা যায় অধিকাংশ অভিভাবক পড়ুয়াদের নিয়ে গিয়েছেন। রবিবারই ছাত্রাবাসের সহকারী ওয়ার্ডেন বাবলু মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। ফলে আবাসিকদের দেখভাল করার কেউ নেই বলে অভিযোগ ইঠেছে। ম্যানেজিং সেক্রেটারি স্টিফেন সোরেনকে ফোনে ধরা যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার রাতেই বাবলুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সোমবার সকালে আবার তাঁকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুদীপ মণ্ডল বলেন, “সোমবার স্কুল ছুটি দিয়েছি। দশম শ্রেণির প্রি-টেস্টও স্থগিত হয়েছে।” ছাত্র নিখোঁজ ও ছাত্রাবাস-কর্তৃপক্ষের গাফিলতির প্রতিবাদে সোমবার স্থানীয়েরা ও ছাত্রের পরিবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে কিছুক্ষণ বেলেঘাটা মেন রোড অবরোধ হয়। পরে তৃণমূল কাউন্সিলর জীবন সাহা এসে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
সোমবার শান্তনুর মা প্রতিমাদেবী অভিযোগ করেন, নিখোঁজ হওয়ার দিন ছাত্রাবাসের দশম শ্রেণির এক ছাত্র শান্তনুকে মারে। তিনি স্কুলের গাফিলতি ও পুলিশের অসহযোগিতার অভিযোগ করেন। শান্তনুর পরিজনদের অনুমান, শান্তনুকে খুনই করা হয়েছে। বিকেল পর্যন্ত খুনের অভিযোগ দায়ের হয়নি।
সোমবার স্কুলের পুকুর ও পাশের জঙ্গলে তল্লাশি করা হয়। পুলিশ জানায়, ৯ তারিখ ইউনিট টেস্টের তিনটি পরীক্ষা দেয় শান্তনু। দুপুর আড়াইটে নাগাদ ছাত্রাবাসে ফেরার পরে দশম শ্রেণির এক ছাত্র তাকে মারধর করে বলে শান্তনুর সহপাঠী এক ছাত্রের কাছে জেনেছে পুলিশ। বিকেলে স্কুল চত্বরে রেল লাইনের ধারে প্রাচীরের কাছে শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল শান্তনুকে বলে জেনেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, দশম শ্রেণির ওই ছাত্র মারধরের কথা স্বীকার করেছে। তবে দু’জনের মধ্যে শুধু মারপিটই হয় বলে সে জানিয়েছে। পুলিশ জেনেছে, বাবলু মণ্ডলের মদতে ওই ছাত্র ছাত্রাবাসে অন্য ছাত্রদের মারত। বাবলুও ছাত্রদের উপর অত্যাচার চালাতেন বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার সময়ে বাবলু কোথায় ছিলেন, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। এক পুলিশকর্তা সোমবার বলেন, “এখনও তদন্ত চলছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত খুনের প্রমাণ মেলেনি।”
|
পুরনো খবর: হস্টেলে বিক্ষোভ |