পঞ্চাশ খুদে ক্রিকেটারদের বয়স ভাঁড়ানোর রোগে যখন ছিন্নভিন্ন বাংলা ক্রিকেট, শনিবার সিএবি-র বৈঠকে এসে যখন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলে যাচ্ছেন, “এটা ঘটছে অনেক দিন ধরেই। আজ ধরা পড়েছে। ব্যাপারটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে,” তখনও বোঝা যায়নি ওই একই লজ্জায় ডুবতে হবে বাংলার ফুটবলকে। পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক হবে যে, সঠিক বয়সের যথেষ্ট প্লেয়ার না পাওয়ায় টিমই পাঠানো যাবে না!
শুনলে আশ্চর্য শোনাতে পারে। কিন্তু বাস্তবটা তাই। রাঁচিতে জাতীয় যুব ফুটবল টুর্নামেন্টে (অনূর্ধ্ব সতেরো) শেষ পর্যন্ত টিমই তুলে নিল বাংলা। যে টুর্নামেন্টে তারাই গত বারের চ্যাম্পিয়ন। হাতে বৈধ বয়সের প্লেয়ার যখন মোটে ছ’জন, তখন টিম আর যায় কী ভাবে!
জাতীয় যুব ফুটবল বা ডা: বি সি রায় ট্রফিতে ফেডারেশন নির্ধারিত বয়স ছিল অনূর্ধ্ব সতেরো। কোচ তরুণ দে অনুশীলনও শুরু করেন ২৮ অগস্ট থেকে। মোট ৪৪ জন ফুটবলারকে বাছা হয়। তাদের বয়সের প্রমাণপত্রও দেখে নেওয়া হয়েছিল তখন। পরে খোঁজ নিয়ে কর্তারা দেখেন, বেশির ভাগ সার্টিফিকেটই জাল। এমনকী দলের সরকারি কোচ অরুণ সাহার ছেলের সার্টিফিকেটও জাল বলে অভিযোগ পায় আইএফএ। এদের মধ্যে থেকে ন’জনের সার্টিফিকেট সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। তাদের ডাক্তারি পরীক্ষার পর আবার দেখা যায় আইএফএ-র অ্যাকাডেমির চার ফুটবলার-সহ মোট ছ’জন মাত্র পাশ করেছে। ঠিক যে ভাবে সিএবি আবার খুঁজে পেয়েছে যে গত অম্বর রায় টুর্নামেন্টে (অনূর্ধ্ব-১৪) অংশগ্রহণকারী কোচিং সেন্টারের ক্রিকেটারদের রাশি রাশি জাল সার্টিফিকেট।
ফুটবলেও বয়স ভাঁড়ানোর কলঙ্ক ফাঁস হওয়ার পর আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের বলছেন, “আমি হতাশ। যদি ঠিক বয়সের ফুটবলারই না পাই তা হলে দল পাঠাতে যাব কেন?” রাঁচিতে টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ১৯ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর। দল যাওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে আর টিম পাঠানো হচ্ছে না। উল্টো দিকে সিএবি আবার জানিয়ে দিচ্ছে, বয়স ভাঁড়িয়ে ধরা পড়া যে সমস্ত ক্রিকেটারে ক্রিকেট কমিটির কাছে আসেনি, তাদের হাজিরা দেওয়ার শেষ সুযোগ আগামী ২০ সেপ্টেম্বর। সেখানে এলে ভাল, নইলে সোজা কঠিন শাস্তি।
|