ঘড়ি ধরে প্র্যাক্টিসে কঠোর নিয়মানুবর্তিতা আমদানি।
ফিটনেসের উন্নতি।
সাপ্লাই লাইন ঠিক রাখতে ব্যাটসম্যান-বোলারদের আলাদা আলাদা কুড়ি-বাইশ জনের পুল।
স্লট ধরে ধরে উঁচু মানের প্রাক্তন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হাজির করা। সম্ভব হলে বছরে অন্তত ষাট-সত্তর দিন।
ক্রিকেট ডেভেলপমেন্ট কমিটি আর নেই। বর্তমানে সিএবি-র কোচ কমিটির মুখ্য এখন তিনি। এবং শনিবার কমিটির প্রথম বৈঠকে তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় সিএবিকে খসড়া দিয়ে গেলেন, জাতীয় প্রেক্ষাপটে বঙ্গ ক্রিকেটের উন্নতির মডেলটা ঠিক কী হওয়া উচিত।
কর্তাদের সৌরভ জানিয়ে দিলেন, বিভিন্ন পর্যায়ের কোচেদের সঙ্গে বৈঠকে বসে রঞ্জি ট্রফির মডেল তৈরি করে দেবেন। জানিয়ে দিলেন, আগামী বুধবার আবার কোচ কমিটির বৈঠক। যেখানে তিনি বাংলার বিভিন্ন পর্যায়ের কোচদের (অশোক মলহোত্র, গৌতম সোম জুনিয়র ও জয়দীপ মুখোপাধ্যায়) সঙ্গে তো বটেই, ট্রেনারদের সঙ্গেও কথা বলতে চান। জানিয়ে দিলেন, বাংলা ক্রিকেটের সার্বিক উন্নতি যদি ঘটাতে হয়, তা হলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রচুর অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কয়েক জন ক্রিকেটারকে আনা দরকার। যাঁরা আসবেন মাঝে মাঝে। ঠিক যেমন গ্লেন ম্যাকগ্রা এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে ‘অপারেট’ করেন। কেউ ব্যাটিংয়ের দিকটা দেখে নেবেন। কেউ বোলিংয়ের। |
বৈঠকে নাকি রীতিমতো উদাহরণ দিয়ে সৌরভ বলে দেন যে, রজার ফেডেরারে বিরুদ্ধে ঠিক কী মানসিকতা নিয়ে নামা উচিত সেটা লিয়েন্ডার পেজ বুঝিয়ে দিলে টেনিসের জুনিয়ররা যেমন তেতে যাবে, ঠিক তেমনই বর্তমান কোচেদের সঙ্গে আরও অভিজ্ঞ কাউকে আনতে পারলে বঙ্গ ক্রিকেটকেও ‘নেক্সট লেভেল’ পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে একটা ধাপ এগোনো যাবে। তবে রাতারাতি সার্বিক উন্নতি ঘটবে না অন্তত বছর দু’য়েক প্রয়োজন। সিএবি কোষাধ্যক্ষ বিশ্বরূপ দে বলে দিলেন, “বাইরে থেকে কাকে আনা হবে না হবে, সেটা আমরা সৌরভের সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করব।”
বৈঠক থেকে বেরিয়ে পরে সৌরভ বলছিলেন, “রঞ্জি ট্রফি নিয়ে বেশির ভাগ কথা হয়েছে। তবে অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৯-কেও আমরা সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। পরের বুধবার আবার বৈঠক ডাকা হয়েছে।” জানা গেল, বুধবারের আগে একটা রিপোর্ট তৈরি করবেন সৌরভ। তার পর কোচ-ট্রেনারদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হবে রঞ্জির সাফল্যের মডেল। সৌরভ বলছিলেন, “রঞ্জিতে ব্যাটিংটা চিন্তার ব্যাপার হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ব্যাটিংয়ের জন্য আমরা হেরেও যাচ্ছি। অশোক মলহোত্রকে এটা জানানো হয়েছে। তার উপর এ বার মনোজ থাকবে না। সমস্যাটা আরও বাড়ল।”
বৈঠকে উপস্থিত সিএবি কর্তাদের কেউ কেউ পরে বলছিলেন, ক্রিকেটারদের ফিটনেস এবং সময়ানুবর্তিতার ব্যাপারস্যাপারও চিন্তায় ফেলেছে সৌরভকে। সে কারণেই নাকি পরবর্তী বৈঠকে ডাকা হচ্ছে বাংলার ফিটনেস ট্রেনারদের। বলা হচ্ছে, যদি কোনও ক্রিকেটারের বারবার চোট লাগে তা হলে দেখা উচিত, বারবার সে চোট পাচ্ছে কেন? প্রত্যেক ক্রিকেটারের ভিন্ন সমস্যা থাকে, সিএবি-কে আগে ক্রিকেটার ধরে ধরে দেখতে হবে, তাদের সমস্যাটা কী? তার পর প্রত্যেকের জন্য সমাধানের ব্যবস্থা করতে হবে। ঠিক তেমনই নাকি সৌরভের মনে হয়েছে, প্র্যাকটিসে ক্রিকেটারদের শৃঙ্খলাটা ফেরানো দরকার। প্র্যাকটিস যদি সকাল আটটা থেকে হয়, তা হলে সবাই যেন আটটাতেই ঢোকে। কোনও ভাবে সেটা যেন আটটা দশ না হয়!
|