ডাক্তার নেই বহু স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই
স্বাস্থ্য হারিয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রই।
চিকিৎসকের অভাবে ধুঁকছে কাটোয়া ও কালনা মহকুমার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি। কোথাও পাঁচ জন চিকিৎসকের জায়গায় রয়েছেন দু’জন। কোথাও আবার চিকিৎসকই নেই। অথচ রোগীর চাপ ক্রমশ বাড়ছে।
বামফ্রন্ট সরকারের আমলে কাটোয়া ও কালনার বেশ কয়েকটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অন্তর্বিভাগ শুরু করার পরিকল্পনা হয়েছিল। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে পরিকাঠামো তৈরি করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে চালু হয়নি অন্তর্বিভাগ। যে হাসপাতালগুলিতে অন্তর্বিভাগ রয়েছে, সেখানে আবার পর্যাপ্ত চিকিৎসক নেই। এই অবস্থাতেই চলছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মন্তেশ্বরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি জেলার অন্যতম ব্যস্ত ব্লক হাসপাতাল। সেখানে প্রয়োজন পাঁচ জন চিকিৎসকের। কিন্তু বর্তমানে রয়েছেন মাত্র দু’জন। অথচ, জেলার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির মধ্যে এখানেই সব থেকে বেশি প্রসব হয়।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বর ছাড়াও লাগোয়া কাটোয়া ১, পূর্বস্থলী ও ভাতার ব্লকের বহু মানুষ এখানে আসেন। মাসে গড়ে ১২৫টি প্রসব হয়। এ ছাড়াও বহির্বিভাগে প্রতি দিন ৩৫০-৪০০ রোগী আসেন। দৈনিক গড়ে ৫০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। সমস্যা মেটাতে ব্লকের তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে (ধান্যখেড়ুর, ময়নামপুর, পুটশুড়ি) তিন জন চিকিৎসককে আপাতত পাঠানো হয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। তার ফলে আবার এখানে সমস্যার কিছুটা সুরাহা হলেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি চিকিৎসকহীন হয়ে পড়েছে।
স্বাস্থ্যের হাল
• মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজন পাঁচ জন চিকিৎসকের, রয়েছেন দু’জন।
• মঙ্গলকোটে সিঙ্গত গ্রামীণ হাসপাতালে কোনও স্থায়ী চিকিৎসক নেই। অস্থায়ী তিন জন।
• কাটোয়া ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজন সাত জন ডাক্তারের, রয়েছেন দু’জন।
• কেতুগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধ বন্ধ্যাত্বকরণ।
সমস্যা রয়েছে মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম ১ ব্লকেও। মঙ্গলকোট সিঙ্গত গ্রামীণ হাসপাতালে বর্তমানে কোনও স্থায়ী চিকিৎসকই নেই। খাতায়-কলমে এখানে তিন জন অস্থায়ী চিকিৎসক। তাঁদের মধ্যে এক জনকে কেতুগ্রামের কান্দরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে সিঙ্গত গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হলেও তিনি সেখানে হাজির হন না বলে অভিযোগ।
মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার অভিযোগ, “ওই চিকিৎসক কান্দরা হাসপাতালে যেতে পারছেন না। কিন্তু জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশ মেনে সিঙ্গত গ্রামীণ হাসপাতালেও যাচ্ছেন না। অথচ কাটোয়া শহরে বসে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন।”
মঙ্গলকোট ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতি দিন গড়ে ৩৫০ জন রোগী আসেন। অবস্থা এমনই যে, ১৫ শয্যার হাসপাতালে দিনে গড়ে ৩০ জন ভর্তি থাকেন। এই চাপ সামলে চিকিৎসকদের উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও গ্রাম পঞ্চায়েত সংলগ্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও যেতে হয়। ব্লকের এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন, “আমরা আর পেরে উঠছি না।”
কাটোয়া মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, চিকিৎসকের অভাবে এখন কেতুগ্রাম ১ ব্লকের কান্দরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বন্ধ্যাত্বকরণ বন্ধ। সমস্যা রয়েছে কাটোয়া ১ ও ২ ব্লকেও। কাটোয়া ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৭ জন চিকিৎসকের জায়গায় রয়েছেন ২ জন। ব্লকের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিও ভুগছে চিকিৎসক সমস্যায়। এই ব্লকেরই সুদপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক মৌসুমী সাধুখাঁ হলেন ওই হাসপাতালের একমাত্র চিকিৎসক। কয়েক দিনের মধ্যেই তাঁর ডিপ্লোমা করতে যাওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকহীন হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ওই হাসপাতালের। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন বর্ধমানের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ মণ্ডল। তিনি বলেন, “কিছু চিকিৎসক স্নাতকোত্তর পড়তে গিয়েছেন। কেউ কেউ চাকরি ছেড়েও গিয়েছেন। এই অবস্থায় জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে।”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.