সুষমাদের নয়া শর্তে জট বাড়ল মোদীকে ঘিরে
রেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করার পথে নতুন গেরোর মুখে পড়লেন বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ।
সুষমা স্বরাজের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী পদে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণার শর্ত হিসেবে বেশ কিছু দাবি তুলেছেন দলের মোদী-বিরোধী নেতারা। সব চেয়ে বড় দাবি হলো, আগে মোদীকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে। কারণ, কোনও মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হয়েছেন, এমন নজির বিজেপিতে নেই। এই দাবির কথা সঙ্ঘ পরিবারকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়। বিজেপি সূত্রের মতে, লালকৃষ্ণ আডবাণী-সুষমারা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হলে মোদীর প্রচার কমিটির প্রধানের পদ থেকেও সরে যাওয়া উচিত। কারণ, যিনি নিজেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী, তিনি কী করে প্রচারের দায়িত্বে থাকতে পারেন! তা ছাড়া, সঙ্ঘ নেতৃত্ব এবং দলীয় সভাপতিকে আডবাণী এ-ও বলেছেন যে, গোয়ায় মোদীকে প্রচার কমিটির প্রধান করার পর তিনি যখন ইস্তফা দেন, তখন দলের সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলেছিলেন। সেগুলির নিষ্পত্তি না-করে শুধু মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা নিয়ে এত চাপ কেন দেওয়া হচ্ছে?
বিজেপি সূত্রের মতে, সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত কিছু বিষয় নিষ্পত্তি করেছেন। কিন্তু আডবাণী দলের বর্তমান সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ে আদৌ সন্তুষ্ট নন। যেমন দিল্লির অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছেন, মোদীকে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী ঘোষণা করার পরে সে রাজ্যের বিধানসভা ভোটে যদি দলের পরাজয় হয়, তা হলে তার আঁচ কি মোদীর উপরেও পড়বে না? এ দিকে, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান আবার ভাগবতকে বলেছেন, এখন মোদীর নাম ঘোষণা হলে তাঁর রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তার প্রভাব পড়বে। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধির মতো যাবতীয় অভিযোগ থেকে দৃষ্টি ঘুরে গোটা নির্বাচনটিই মোদীকেন্দ্রিক হয়ে যাবে।
এই সব বিষয় নিয়ে সঙ্ঘ এবং মোদীপন্থী নেতাদের যে উদ্বেগ নেই, এমন নয়। কিন্তু সঙ্ঘ নেতৃত্ব মনে করছেন, মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হবে বলে সিদ্ধান্ত যখন হয়ে গিয়েছে, তখন অহেতুক দেরি করে কোনও লাভ নেই। তা সত্ত্বেও আগামী শুক্রবার সংসদীয় বোর্ডের যে বৈঠক ডাকার কথা ছিল, তা পিছিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন রাজনাথ। ওই বৈঠকেই মোদী সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, আগামী সোমবার সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক হতে পারে। আর আগে আজ আডবাণীর বাড়িতে প্রায় আধ ঘণ্টা বৈঠক করে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করেছেন রাজনাথ।
তবে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকেও মোদীর পক্ষে সিদ্ধান্ত হওয়া কঠিন বলেই বিজেপি সূত্রের মত। বোর্ডের সদস্য সংখ্যা ১২। তার মধ্যে অসুস্থ অটলবিহারী বাজপেয়ী কোনও রকম মতামত দেওয়ার অবস্থায় নেই। পদপ্রার্থী হওয়ায় মত দিতে পারবেন না মোদী নিজে। মত দিতে পারবেন না রাজনাথও। কারণ সভাপতি নিরপেক্ষ অবস্থান নেবেন, এটাই রীতি। সঙ্ঘ এবং বিজেপি-র মধ্যে সমন্বয় রক্ষাকারী নেতা রামলালও একই কারণে কোনও মত দেবেন না। (যদিও রাজনাথ শিবিরের পাল্টা দাবি, সভাপতি বা রামলাল মত দিতে পারেন না, এমন কোনও নিয়ম নেই।) বাকি নেতাদের মধ্যে আডবাণী, সুষমা, মুরলীমনোহর জোশী, অনন্ত কুমার ও নিতিন গডকড়ী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধী। পক্ষে আছেন তিন জন, অরুণ জেটলি, বেঙ্কাইয়া নায়ডু ও থাওরচন্দ্র গহলৌত।
এই পরিস্থিতিতে সংসদীয় বোর্ডের সদস্যদের সঙ্গে আলাদা আলাদা করে আলোচনা শুরু করেছেন রাজনাথ। বিজেপি সভাপতির শিবির থেকে বলা হচ্ছে, সংসদীয় বোর্ডকে এড়িয়ে নাম ঘোষণার কোনও প্রথা নেই। কিন্তু মোদীর নাম ঘোষণা করার বৈঠকে যদি আডবাণী বা সুষমা না-থাকেন, তা হলে দলের ভাবমূর্তিতে আঁচ পড়বে। তাই বৈঠক ডাকার আগে সকলকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে। রাজনাথের সহযোগী ও দলের মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদীর কথায়, “যে কোনও বিষয়েই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার ব্যাপারেও যথাসম্ভব ঐকমত্য গড়ে তোলার চেষ্টা হবে।”
আডবাণী শিবির যেমন মোদীকে ঠেকাতে নানা ফ্যাকড়া তুলছে, তেমনই পাল্টা চাপ দিচ্ছেন মোদীও। সঙ্ঘ নেতৃত্বকে তিনি বলেছেন, তাঁর কাঁধে যদি দুশোর বেশি আসন আনার দায় থাকে, তা হলে এখনই তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী ঘোষণা করতে হবে। টানাপোড়েনের এই জল কোথায় গড়ায়, সেটাই দেখার।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.