ইটাহার কাণ্ড
টোকাটুকিতে বাধা পেয়েই মার,
কবুল করলেন শিক্ষামন্ত্রী
কল করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ইটাহার কলেজে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের মারধর করা হয়েছিল বলে কার্যত স্বীকার করলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সোমবার কলকাতায় একটি কলেজের অনুষ্ঠানের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ব্রাত্য বলেন, “ইটাহার কলেজের ঘটনা নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে পৌঁছেছে। পরীক্ষার সময়ে নকল হচ্ছিল। অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের মারধর করা হয়েছে। দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। আমি বলছি, আরও গ্রেফতার হবে।”
তিনি জানান, নকল করায় বাধা পেয়ে অধ্যক্ষ, শিক্ষকদের মারধরের ঘটনা সে দিন ঘটেছিল। কিন্তু এর পিছনে একটা ইন্ধনও কাজ করেছে। কোথা থেকে ইন্ধন মিলেছিল, সে কথা অবশ্য জানাতে চাননি মন্ত্রী। তবে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। ব্রাত্যবাবু বলেন, “ছাত্রছাত্রীদের সংযত আচরণ করতে আবেদন জানাব। শিক্ষকদেরও বলব, রাজনীতির কারণে ছাত্রদের প্রতিপক্ষ ভাববেন না।”
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ইটাহারের মেঘনাদ সাহা কলেজের অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায়ের স্বামী প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিআই নেতা শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায়। স্বপ্নাদেবীর বক্তব্য “আমি কলেজের শিক্ষিকা। শিক্ষামন্ত্রীর অধীনে কাজ করি। তাই ওঁর কোনও মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে পারব না। তবে সবই শুনেছি।”
শ্রীকুমারবাবু অবশ্য বলেন, “কারা কলেজে ঢুকে অধ্যক্ষা-সহ তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও এক শিক্ষাকর্মীকে নিগ্রহ করেছিলেন, তা এখন আর কারও অজানা নয়। শিক্ষামন্ত্রী একজন বিদ্বজ্জন। তাঁর মতামতকে সম্মান জানিয়ে অনুরোধ করছি, দয়া করে নিগ্রহ কান্ডে বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের উপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন।”
স্বপ্নাদেবীদের পাশে দাঁড়ালেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সিও।
সোমবার রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় সার্কিট হাউসে দীপাদেবী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিক্ষা ক্ষেত্রে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার কথা বললেও তাঁরই দলের নেতা সমর্থকেরা কলেজে ঢুকে নকল ধরার অপরাধে অধ্যক্ষা স্বপ্নাদেবী সহ তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও এক শিক্ষাকর্মীকে বেধড়ক পেটালেন। অথচ তৃণমূল নেতাদের নির্দেশে পুলিশ মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না। তাই অবিলম্বে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে কোনও রং বিচার না করে এই নিগ্রহের ঘটনায় সমস্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি।”
সেই সঙ্গেই তাঁর দাবি, শাসক দলের নেতারা নিগ্রহকান্ডে অভিযুক্ত হওয়ায় রাজ্য সরকার পরিকল্পিত ভাবে অধ্যক্ষা স্বপ্নাদেবী সহ কলেজের তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও এক শিক্ষাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য কিন্তু এখনও বক্তব্য, নিগ্রহকাণ্ডে তাঁদের নেতা সমর্থকদেরই রাজনৈতিক স্বার্থে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের মধ্যে যে কোনও অমিল নেই, তা সিপিআই নেত্রী স্বপ্নাদেবীর হয়ে দীপাদেবীর সওয়ালই প্রমাণ করে দিচ্ছে। আমরা চাই আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা হোক।”
গত ২৭ অগস্ট ইটাহার কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য গৌতম পালের স্ত্রী পরীক্ষায় নকল করছিলেন বলে অভিযোগ। নকল ধরার পরে গৌতমবাবু, তাঁর অনুগামী বাবুসোনা মোহান্ত-সহ কয়েকজন মিলে অধ্যক্ষা স্বপ্নাদেবী, বাংলার শিক্ষক সুদেবকুমার রায়, রসায়নের শিক্ষিকা সেঁজুতি দে ও শিক্ষাকর্মী জাফর সাদেককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। স্বপ্নাদেবীদের বিরুদ্ধেও গৌতমবাবুর স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ ওঠে। গত শুক্রবার পুলিশ তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বাবুসোনাবাবু ও ইসলাম আহমেদ নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করে।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.