ইটাহার কাণ্ডে জেরায় ধৃত আরও এক তৃণমূল কর্মী
টাহার কাণ্ডে ধৃত তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বাবুসোনা মোহান্তকে জেরা করে আরও এক তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার গভীর রাতে ইটাহারের বিধিবাড়ি এলাকা থেকে ইসলাম আহমেদ নামে ওই তৃণমূল কর্মীকে ধরা হয়। অন্য দিকে, সন্দেশখালির কালীনগর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিগ্রহের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত-সহ একাধিক দাবিতে শনিবার বসিরহাটের মহকুমাশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে এসএফআই।
উত্তর দিনাজপুরের মেঘনাদ সাহা কলেজের অধ্যক্ষা-সহ তিন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও এক শিক্ষাকর্মীকে নিগ্রহ করার অভিযোগে শুক্রবার দুপুরে ধরা হয় বাবুসোনাবাবুকে। শনিবার ধৃত দু’জনকে রায়গঞ্জের মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে হাজির করানো হয়। বাবুসোনাবাবুর ১৪ দিনের জেল হেফাজত হলেও ইসলামের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার বলেন, “ইসলাম আহমেদের নাম অভিযোগে না থাকায় তার শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর হয়েছে।” ধৃত দু’জনকে ফের ২১ সেপ্টেম্বর আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক ময়ূখ বন্দ্যোপাধ্যায়। ইসলামকে সপ্তাহে তিন দিন ইটাহার থানায় হাজিরা দিতে হবে বলেও বিচারক নির্দেশ দেন। এ দিন অবশ্য ধৃত দু’জনের কাউকেই নিজেদের হেফাজতে চেয়ে পুলিশের তরফে আবেদন করা হয়নি।
তবে এই ঘটনায় অন্য অভিযুক্ত জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য গৌতম পালকে গ্রেফতার করা হয়নি। গৌতমবাবুর স্ত্রীও এই ঘটনায় অভিযুক্ত। ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী গৌতমবাবুর স্ত্রী ২৭ অগস্ট পরীক্ষার সময়ে টুকলি করার অভিযোগে ধরা পড়েন। তারপরেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। গৌতমবাবু, তাঁর স্ত্রী এবং বাবুসোনা-সহ তাঁদের অনুগামীদের হাতে তখন ওই কলেজের অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায়, বাংলার শিক্ষক সুদেবকুমার রায়, রসায়নের শিক্ষিকা সেঁজুতি দে ও শিক্ষাকর্মী জাফর সাদেক প্রহৃত হন বলে অভিযোগ।
বাবুসোনা মোহান্ত (বাঁ দিকে) ও ইসলাম আহমেদ (ডান দিকে)। ছবি: তরুণ দেবনাথ।
স্বপ্নাদেবীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গৌতমবাবুদের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, মারধর, শ্লীলতাহানি, চুরি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একাধিক ধারায় মামলা করে। তার মধ্যে শ্লীলতাহানি ও চুরির অভিযোগে জামিন অযোগ্য ৩৫৪ ও ৩৭৯ ধারা রয়েছে। অন্য দিকে, স্বপ্নাদেবী, সুদেববাবু, সেঁজুতিদেবী ও জাফর সাহেবের বিরুদ্ধেও গৌতমবাবুর স্ত্রীকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ দায়ের হয়। জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “পুলিশকে তদন্ত করতে দিন। যারা দোষী প্রমাণিত হবেন, তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। গৌতমবাবুর স্ত্রীর পাল্টা অভিযোগের ভিত্তিতেও অধ্যক্ষা স্বপ্নাদেবী সহ তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তাঁদেরকে গ্রেফতার করা হবে কি না তা তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা সম্ভব নয়।”
স্বপ্নাদেবী বলেন, “মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা সন্তুষ্ট হতে পারছেন না। এখনও তাঁরা আতঙ্কে।” তাঁর স্বামী সিপিআই নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ কেনও ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নিল না তা বুঝতে পারছি না। শাসক দলের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হালকা করতেই পুলিশ নানা রাস্তা খোঁজার চেষ্টা করছে। মিথ্যা মামলায় কলেজের শিক্ষক শিক্ষিকাদের ধরা হলে দলের তরফে জেলা জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলন হবে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি ও স্থানীয় বিধায়ক অমল আচার্য বলেন, “কে দোষী তা বিচার করার ক্ষমতা একমাত্র আদালতেরই রয়েছে। শ্রীকুমারবাবু এখন পুলিশ প্রশাসনের উপর চাপ দিয়ে তাঁর স্ত্রী-সহ অনুগামীদের বাঁচাতে চাইছেন।” অমলবাবু জানান, তদন্তে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে দলের তরফে পুলিশের কাছে অভিযুক্ত অধ্যক্ষা-সহ শিক্ষক শিক্ষিকাদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়েছে।
সন্দেশখালির কালীনগর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে নিগ্রহের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত, জেল-হেফাজতে থাকা সংগঠনের ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভাবে ছাত্র সংসদের নির্বাচনের দাবিতে শনিবার মহকুমাশাসককে (বসিরহাট) স্মারকলিপি দেয় এসএফআই। তার আগে এ দিন বসিরহাটে মিছিল ও পথসভা করে এসএফআই। মিছিলে ধৃতদের অভিভাবকেরাও সামিল হন। মহকুমাশাসক শেখর সেন বলেন, “দাবিগুলি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কলেজে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ও শান্তিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য সব সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকের পরিকল্পনা করা হয়েছে।” দিন কয়েক আগে ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনোরঞ্জন নস্করকে মারধরের অভিযোগ ওঠে এসএফআই কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। পুলিশ ২৪ জনকে গ্রেফতার করে।

পুরনো খবর






First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.