ইটাহার কাণ্ড
অধ্যক্ষা-নিগ্রহে প্রথম গ্রেফতার দশ দিন পরে
টাহার কাণ্ডে দশ দিন পরে অবশেষে অন্যতম অভিযুক্ত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের এক নেতা বাবুসোনা মোহান্তকে গ্রেফতার করা হল। এখানকার মেঘনাদ সাহা কলেজে অধ্যক্ষা-সহ তিন শিক্ষক শিক্ষিকা ও এক শিক্ষাকর্মীকে নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে বাবুসোনার বিরুদ্ধে। তবে সেই ঘটনাতে অন্য অভিযুক্ত জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা পরিষদের সদস্য গৌতম পালকে গ্রেফতার করা হয়নি। গৌতমবাবুর স্ত্রীও এই ঘটনায় অভিযুক্ত। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে যে কাউকেই গ্রেফতার করা হবে।” বাবুসোনাকে আজ, শনিবার রায়গঞ্জের মুখ্য
বাবুসোনা মোহান্ত।
— নিজস্ব চিত্র।
বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হবে। পুলিশ সুপার বলেন, “নথির কাজ শেষ না হওয়ায় এ দিন ধৃতকে আদালতে তোলা সম্ভব হল না। শনিবার তাকে আদালতে তোলা হবে।” গৌতমবাবুর স্ত্রী ওই কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ২৭ অগস্ট পরীক্ষার সময়ে তিনি টুকলি করার অভিযোগে ধরা পড়েন। তারপরেই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। গৌতমবাবু, তাঁর স্ত্রী এবং বাবুসোনা সহ তাঁদের অনুগামীদের হাতে তখন ওই কলেজের অধ্যক্ষা স্বপ্না মুখোপাধ্যায়, বাংলার শিক্ষক সুদেবকুমার রায়, রসায়নের শিক্ষিকা সেঁজুতি দে ও শিক্ষাকর্মী জাফর সাদেক প্রহৃত হন বলে অভিযোগ। স্বপ্নাদেবীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গৌতমবাবুদের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, মারধর, শ্লীলতাহানি, চুরি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে একাধিক ধারায় মামলা করে। তার মধ্যে শ্লীলতাহানি ও চুরির অভিযোগে জামিন অযোগ্য ৩৫৪ ও ৩৭৯ ধারা রয়েছে। অন্য দিকে, স্বপ্নাদেবী, সুদেববাবু, সেঁজুতিদেবী ও জাফর সাহেবের বিরুদ্ধেও গৌতমবাবুর স্ত্রীকে মারধর করে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ দায়ের হয়।
এই ঘটনায় কোনও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে দশ দিন লাগল কেন? জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্ত শেষ করেই বাবুসোনাবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” স্বপ্নাদেবীর স্বামী তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সিপিআই নেতা শ্রীকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাবুসোনাকে গ্রেফতার করে মুখ বাঁচালো তৃণমূল। ১১ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদ গঠিত হবে বলে তার আগে দলের জেলা পরিষদ সদস্য মূল অভিযুক্ত গৌতমবাবুকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।” তৃণমূলের পাল্টা দাবি, এ দিন বাবুসোনাকে গ্রেফতারের পরে প্রমাণিত হল রাজ্য সরকার এই ঘটনায় নিরপেক্ষ। তবে সেই সঙ্গেই সে দিনের ঘটনায় অভিযুক্ত স্বপ্নাদেবীদের গ্রেফতারের প্রসঙ্গও এ দিন তুলেছেন তৃণমূল নেতারা। জেলা তৃণমূল সভাপতি বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব অমল আচার্য বলেন, “রাজ্য সরকার যে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে, সেটা বাবুসোনা গ্রেফতার হওয়ায় ফের স্পষ্ট হল। তবে নিরপেক্ষতা বজিয়ে রাখতে এসপি-র উচিত সব অভিযুক্তকেই গ্রেফতার করা।” সে কথার জবাবে শ্রীকুমারবাবুর বক্তব্য, “নকল আটকানোর শিক্ষা দিতে নিগৃহীত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হলে জেলার সাধারণ মানুষই রাস্তায় নেমে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাজকর্ম অচল করে দেবেন।”
স্বপ্নাদেবী এ দিন সল্টলেকে মহিলা কমিশনের চেয়ারম্যান সুনন্দা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে দোষীদের শাস্তি ও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আর্জি জানান। বৈঠকের পরে সুনন্দাদেবী জানান, অভিযোগ শোনা হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.