বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালে শিশুমৃত্যু বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের কাছে রিপোর্ট চাইল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। সোমবার কমিশনের সদস্য সৌরীন রায় বলেন, “স্বাস্থ্য দফতরের সচিবকে বলা হয়েছে, দফতরের কোনও উচ্চপদস্থ অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে ওঁর মন্তব্য-সহ ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট কমিশনে জমা দেওয়ার জন্য।”
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা পুরনো বক্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করে বলেন, “যে সব শিশু এসেছিল তাদের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। সবচেয়ে ভাল চিকিৎসা দিয়েও তাদের বাঁচানো যায়নি।”
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে এই ঘটনায় একটি তদন্ত শেষ করেছে বিসি রায় হাসপাতালের চিকিৎসক গোবিন্দ দাস ও তাপস সোমের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি। সোমবার তাঁরা স্বাস্থ্যভবনে রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। শিশুমৃত্যু ঠেকাতে তৈরি বিশেষ টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কমিটি কোনও ত্রুটিই পায়নি। শিশুরা খুব খারাপ অবস্থায় এসেছিল। হাসপাতালের পরিকাঠামো যথাযথ রয়েছে।”
বছরখানেক আগে যখন এক বার বিসি রায় শিশু হাসপাতালে বেশি সংখ্যায় শিশুমৃত্যু হয়েছিল তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। মৃত্যুর কারণ জানতে তলব করা হয়েছিল স্বাস্থ্য সচিবকে। সেই সময় স্বাস্থ্য সচিব কমিশনকে জানিয়েছিলেন, পরিকাঠামোর উন্নয়নের অভাবেই ওই ঘটনা ঘটেছিল। দ্রুত পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে বলে তিনি কমিশনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
তার পরেও চলতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফের শিশুমৃত্যু বেড়ে যায়। ৩ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে বিসি রায় শিশু হাসপাতালে ৩২টি শিশুর মৃত্যু হয়। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মারা যায় ৫২টি শিশু। প্রশ্ন উঠেছে, জেলায়-জেলায় এত সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট করে তা হলে কী লাভ হল? জেলার মানুষ সেখানে না গিয়ে কেন কলকাতায় আসছেন? গত ২৪ ঘণ্টায় বিসি রায় হাসপাতালে যে ৭টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে তারা মূলত এসেছিল হাওড়া ও পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। প্রসঙ্গত, ওই দুই জেলাতেই এসএনসিইউ রয়েছে। ত্রিদিব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখনও জেলার এসএনসিইউগুলির প্রতি বোধহয় মানুষের বিশ্বাস তৈরি করা যায়নি। তাঁরা এখনও ভাবছেন, কলকাতায় গেলেই সেরা চিকিৎসা মিলবে। আমাদের আরও কিছু সময় দিতে হবে।” |