নালিশ ফেরালেন প্রধানশিক্ষক
ক্ষমা চাইলেন স্কুলে হামলায় অভিযুক্ত নেতা
লের কাউকে পাশে না-পেয়ে শিলিগুড়ির প্রধাননগরের স্কুলে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ‘স্বঘোষিত’ তৃণমূল নেতা দেবাশিস দাস প্রধান শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করলেন।
মঙ্গলবার সকালে তিনি ক্ষমা প্রার্থনার পরে প্রধান শিক্ষক থানায় গিয়ে অভিযোগ প্রত্যাহর করেন। তবে জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের সন্দেহ, প্রধান শিক্ষককে ভয় দেখিয়ে চাপ সৃষ্টি করেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলা মহাসচিব কৃষ্ণ পাল এদিনও দাবি করেন, “অনেকেই এখন নিজেকে তৃণমূল নেতা বলে দাবি করেন। ঘটনা হল, প্রধাননগরের স্কুলে হামলার অভিযোগ যাঁর বিরুদ্ধে উঠেছে, সেই নামে আমাদের কোনও সদস্যই নেই। বিষয়টি মিটে গেলে ভাল। না হলে পুলিশকে দলের সভাপতি কড়া ব্যবস্থা নিতে বলে দিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গুণ্ডামি আমাদের দল বরদাস্ত করে না।”
প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “এদিন অভিযুক্ত দেবাশিস দাস স্কুলে এসে কৃতকর্মের জন্য ভুল স্বীকার করেছে ও স্কুলের যা ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তা ছাড়া ওই ব্যক্তি গ্রেফতার হলে স্কুলে ভবিষ্যতে আরও বড় ধরণের ঝামেলা হতে পারে। বিঘ্নিত হতে পারে ছাত্রদের নিরাপত্তাও। তাই আমরা সমস্ত শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করে অভিযোগ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।” অভিযুক্ত দেবাশিসবাবুও ভুল স্বীকারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যা ঘটিয়েছিলাম, তা উচিত ছিল না। আমি এদিন ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি। ওঁরাও বিষয়টি নিয়ে আর এগোতে চাইছেন না। বিষয়টি মিটে গিয়েছে।” এদিনও অবশ্য তিনি নিজেকে তৃণমূল কর্মী হিসেবে দাবি করেছেন।
রবিবার প্রধাননগরের ওই স্কুলে পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন ছিল। সেখানে বাম মনেভাবাপন্নরা জয়লাভ করে। তার পরেই তৃণমূলের কয়েকজন স্থানীয় সমর্থক কর্মী এসে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে মারে ও স্কুলে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ জানানো হয় স্কুলের পক্ষ থেকে। ঘটনাকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর। অভিযোগ ওঠে পুলিশের ভূমিকাতেও। এর পরেই তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা নেতৃত্ব আসরে নামেন।
জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, তৃণমূল কাউন্সিলর কৃষ্ণ পাল প্রধাননগরে খোঁজখবর নেন। দলের পক্ষ থেকে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। পাশাপাশি, তৃণমূলের নেতা হিসেবে দাবি করে হামলার ঘটনায় জড়িয়ে পড়ায় দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে দলের তরফে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। বিষয়টি স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে জেনে সাতসকালেই দেবাশিসবাবু বিষয়টি মেটাতে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে ছুটে যান।
এদিকে, ওই ঘটনাকে গিরে শিলিগুড়ি শিক্ষা মহলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শেফালি মজুমদার বলেন, “নির্বাচনে হার-জিত হবেই। তাই বলে গায়ে হাত দেওয়া ঠিক নয়।” শিলিগুড়ি কমার্স কলেজে দীর্ঘদিন অধ্যক্ষ ছিলেন হরেন ঘোষ। তিনি বলেন, “এটা সংক্রামক ব্যধির মতো ছড়াচ্ছে। অবিলম্বে এটা বন্ধ হওয়া দরকার। নির্বাচন নিয়ে কোনও সমস্যা হতেই পারে। তা আলোচনা করে তা মেটানো উচিত। তা না করে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা মেনে নেওয়া যায় না।”
শিলিগুড়ির স্কুল পরিদর্শক সঞ্জীব কুমার ঘোষ শহরের বাইরে রয়েছে। তিনি জানান, স্কুলের তরফে বা তাঁর দফতরের তরফেও তাঁকে কিছু জানানো হয়নি। তবে শিক্ষকের গায়ে হাত তোলার ঘটনার নিন্দা করেছেন তিনি।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.