ভোরেই ভিড় বাজারে, বনধ-মুক্তির আশায় পাহাড়
ভোরের আলো ফোটার আগেই দার্জিলিং পাহাড়ের তিন মহকুমায় বাজারের সামনে গাড়ির লাইন। চাল-ডাল-আলু-পেঁয়াজ বোঝাই গাড়ির মাল নামানো অবশ্য শুরু হয়েছে অন্ধকার থাকতেই। সাধারণত পাহাড়ে দোকানপাট খোলে ৯টা নাগাদ। কিন্তু সোমবার সকাল ৬টার মধ্যেই প্রায় সব হাট-বাজারে বেচাকেনা শুরু হয়ে যায়। বেলা যত গড়িয়েছে, ততই ভিড় উপচে পড়েছে। কেনাকেটা চলেছে রাত ৯টা পর্যন্ত। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা থেকে অনেক জিটিএ সদস্যকেও থলে বোঝাই করে বাজার করতে দেখা গিয়েছে।
দু’দিনের জন্য বনধ শিথিল করেছে গোর্খাল্যান্ড জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। সোমবার ছিল তার প্রথম দিন। তবে দোকানে দাঁড়িয়ে চাল-ডাল-আনাজ ব্যাগে ভরার ফাঁকে দার্জিলিঙের মনীষা লামা থেকে কালিম্পঙের ক্রিস্টোফার লেপচা, সকলেরই কৌতুহল, “আজ, মঙ্গলবার কমিটি বনধ পুরোপুরি তোলার সিদ্ধান্ত নেবে তো?” মোর্চার নেতাদের অবশ্য বক্তব্য, “এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।” তবে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে সব স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। পাহাড়ে আগামী দিনে আন্দোলন কী ভাবে হবে সেই রূপরেখার কথা জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি ঘোষণা করবে সেই দিনই। সেই নিয়ে চাপা উদ্বেগ তিরতির করে বইছে। কিন্তু তার মধ্যেই দার্জিলিঙের চকবাজার থেকে কালিম্পঙের ডম্বর চক কিংবা কার্শিয়াঙের বাজার, সর্বত্রই সব রকমের দোকানের সামনেই ভিড়। এটিএম-এ লাইন পড়ে ভোর থেকেই।
শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার, বিধান মার্কেট এলাকাতেও পাহাড়বাসীর ভিড় উপচে পড়ে। শিলিগুড়ির আলুপট্টির কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বনধ শিথিল হচ্ছে বলে রবিবার রাতেই পাহাড়ে শতাধিক ট্রাক বোঝাই আলু-পেঁয়াজ চলে গিয়েছে। এ দিন সকালে ডিম ও পোলট্রির মুরগি বোঝাই গাড়ির সংখ্যাও পাহাড়ের পথে কম দেখা যায়নি। জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কোনও অভিযোগ প্রশাসনের কাছে পৌঁছয়নি। তবে রাতে দুই মোর্চা নেতাকে বেআইনি ভাবে একশো বস্তা চাল মজুত করার অভিযোগে দার্জিলিং থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ বাদে সরকারি অফিসেও দেখা গিয়েছে স্বাভাবিক হাজিরার ছবি। সরকারি কর্মীরা অবশ্য দিনভর বারেবারেই খোঁজ নিয়েছেন, অগস্টের মাইনে মিলবে তো? সরকারি সূত্রের খবর, গরহাজিরার কারণ দর্শানোর সন্তোষজনক উত্তর মিললে তবেই মাইনে দেওয়া হতে পারে। তবে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বনধ পুরোপুরি তোলার কথা ঘোষণা করে দেওয়া হলে সরকারের তরফে মাইনে দেওয়ার ব্যাপারে কিছুটা নরম মনোভাবও দেখানো হতে পারে।
তেলঙ্গানা গঠনের ব্যাপারে কেন্দ্র নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে গত ২৮ জুলাই পাহাড়ে বনধ শুরু হয়। তারপরে ৩১ অগস্ট এক দিনের জন্য বনধ শিথিল হয়। এত দিন পরে আবার মিলল দু’দিনের রেহাই।
ইতিমধ্যে পাহাড়ের বনধ নিয়ে জনস্বার্থের মামলায় রাজ্য সরকার মোর্চাকে ৭০ কোটি টাকা ক্ষতিরপুরণ দেওয়ার নির্দেশ দিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছে। সোমবার এই মামলার শুনানির সময় রাজ্যের জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ১৪ অগস্ট ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে জনজীবন সচল রাখতে নির্দেশ দিয়েছিল। সরকার নির্দেশ মতো সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে মোর্চা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করছে। কেন মোর্চা আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে, তা তাদের নেতা বিমল গুরুঙ্গকে ডেকে পাঠিয়ে জানতে চাওয়া হোক বলেও আর্জি জানান তিনি।
মোর্চার পক্ষে আইনজীবী অয়নাভ রাহা বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের ১৪ অগস্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে মোর্চা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছে। ১৬ সেপ্টেম্বর সেই মামলার শুনানি। প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সুপ্রিম কোর্টের রায় জানার পরে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর এই মামলার ফের শুনানি হবে।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.