সারদা-কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলবে রাজ্য সরকার। বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশনের নামে ওই অ্যাকাউন্ট খোলা হবে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
ক্ষতিপূরণ প্রকল্পটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারদা কেলেঙ্কারিতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতিপূরণ প্রকল্প— ২০১৩’। অর্থ দফতর এ দিনই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কোন আমানতকারী ‘ক্ষতিপূরণ তহবিল’ থেকে টাকা পাওয়ার যোগ্য, তদন্ত কমিশনই তা ঠিক করবে। কমিশন-সচিব তহবিল পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার পরে কোনও টাকা উদ্বৃত্ত পড়ে থাকলে কমিশন সেই বাড়তি টাকা রাজ্য সরকারকে ফেরত দেবে। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতেই।”
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্ষতিপূরণ তহবিলে রাজ্য সরকারের নিজস্ব টাকাও থাকবে। বলা হয়েছে, ওই তহবিলের টাকা তোলার জন্য সারদা গোষ্ঠী, তাদের এজেন্ট ও ‘বেনামদার’-দের সমস্ত সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবে সেন কমিশন। একই সঙ্গে ওই গোষ্ঠী ও তার সহযোগী সংস্থাগুলির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, তাদের ডিরেক্টরদের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকাও বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা রাজ্য সরকার তাদের হাতে তুলে দিল। এর পাশাপাশি সারদা গোষ্ঠী যাঁদের ঋণ দিয়েছিল, সেই সব ঋণগ্রহীতার কাছ থেকেও টাকা আদায়ের ক্ষমতা দেওয়া হল সেন কমিশনকে।
ক্ষতিপূরণ প্রকল্পে সারদা গোষ্ঠীর এজেন্ট ও ‘বেনামদার’-দের সম্পত্তি বিক্রির নির্দেশেরও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সারদা গোষ্ঠীর আমানতকারীরা যে টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, সেই টাকা দিয়েই যদি কোনও এজেন্ট ব্যক্তিগত সম্পত্তি করেন, তা হলে সেই সম্পত্তিও বিক্রি করতে পারবে কমিশন। কিন্তু আমানতকারীদের টাকাতেই যে এজেন্ট সম্পত্তি করেছে, তা কী ভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে? কী ভাবে চিহ্নিত করা হবে গোষ্ঠীর বেনামদারদের? কী ভাবেই বা তাঁদের সম্পত্তি বিক্রি করবে কমিশন? এ ব্যাপারে বিচারপতি সেন বলেন, “বিজ্ঞপ্তির প্রতিলিপি হাতে পাইনি। তাই কিছু বলতে পারব না।”
এ দিকে সারদা-কাণ্ডে অন্যতম দুই অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায় ও মনোজকুমার নাগেলকে জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দিল বোলপুরের আদালত। সরকারি আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল বলেন, “বিচারক ধৃতদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ১৪ দিন জেলা হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।” |