|
|
|
|
সংঘর্ষের রিপোর্ট চায় দিল্লি, মৃত বেড়ে ৩১
নিজস্ব সংবাদদাতা • মুজফ্ফরনগর |
গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামার লক্ষণ নেই মুজফ্ফরনগরে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যাও। গত কাল রাত থেকে এখনও পর্যন্ত আরও পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ফলে গত তিন দিনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩১। উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী আজ ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবকে। হিংসা নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে কি না, প্রতি ১২ ঘণ্টা অন্তর রাজ্যকে সেই রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ দিকে সব মহল
থেকে সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে ঘটনার তদন্ত করতে প্রাক্তন বিচারপতি বিষ্ণু সহাইয়ের নেতৃত্বে
এক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অখিলেশ সরকার।
প্রশাসনের কর্তারা কালই আশ্বাস দিয়েছিলেন, পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। কিন্তু আজও সকাল থেকেই একের পর এক সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে। মিরপুরে এ দিন দুই ব্যক্তির উপর ছুরি নিয়ে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। এদের মধ্যে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অন্য জন। |
|
সুনসান রাস্তায় টহলদারি। |
শাহারানপুর, তিতওয়াইতে উদ্ধার হয়েছে আরও দু’টি দেহ। লখনউয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব আর এম শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, যত দিন না অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, এলাকায় কার্ফু জারি থাকবে। শাহপুর, মারিপুর, পুরকাজি, শামলিতে আজ দ্বিতীয় দিনও টহল দিয়েছে সেনাবাহিনী। উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা হলেই গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেনাকে।
মুজফ্ফরনগরের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে লাগোয়া শামলিতে ছড়িয়েছে গণ্ডগোলের রেশ। শামলির জেলাশাসক পি কে সিংহ জানিয়েছেন, এ দিন ৪০ বছরের এক ব্যক্তিকে গুলি করে খুন করেছে কয়েক জন দুষ্কৃতী। হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে এখনও পর্যন্ত ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরা হয়েছে হাজারেরও বেশি মানুষকে। এর মধ্যে কংগ্রেসের এক প্রাক্তন সাংসদ ও বিজেপির চার নেতাও রয়েছেন।
গত কাল সংঘর্ষ থেমে গিয়েছে অনেক জায়গাতেই। কিন্তু এখনও থমথম করছে এলাকার পরিবেশ। ফুগনাতেই সারি সারি বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে। কোথাও বা এখনও জ্বলছে আগুন। পায়ে হেঁটে, ট্রাকে চড়ে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন দলে দলে মানুষ। পরিস্থিতি সামলাতে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ ওঠায় আজ কয়েক জন শীর্ষ পুলিশকর্তাকে বদলি করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। এই তালিকায় আছেন শাহারানপুরের ডিআইজি, মুজফ্ফরনগরের স্পেশ্যাল পুলিশ সুপার ও শামলির পুলিশ সুপার। গোষ্ঠী সংঘর্ষ থামাতে রবিবার থেকেই উত্তরপ্রদেশের এই জেলায় প্রচুর পুলিশ, সেনা ও আধাসেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরপিএন সিংহ সোমবার জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ৫০০০ আধাসেনা রয়েছে মুজফ্ফরনগরে। প্রয়োজনে দিল্লি আরও বাহিনী পাঠাতেও প্রস্তুত। শহরের থেকে গ্রামের দিকে পুলিশ পাহারা বাড়াতে রাজ্যকে অনুরোধ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের।
এ দিকে সংঘর্ষ বিধ্বস্ত এলাকায় যাওয়ার পথে ইউপি গেটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজিত সিংহ ও বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদকে আটকে দেয় পুলিশ। অসামরিক বিমানমন্ত্রী অজিতের সঙ্গেই ছিলেন তাঁর ছেলে জয়ন্ত চৌধুরি। অজিতের অভিযোগ, মুজফ্ফরনগরের আগে শামলিতে অশান্তি তৈরি হয়েছিল। রাজ্য তখনই কড়া হলে পরিস্থিতি এত ঘোরালো হোত না। উত্তরপ্রদেশে ঢুকতে না পেরে শেষমেশ দিল্লিতেই ফিরে আসেন বাবা-ছেলে।
প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীলকুমার শিন্দেও। তাঁর দাবি, শনিবার গণ্ডগোল শুরুর আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে জেলার পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন তিনি। আগেও বহু বার সতর্ক করা হয়েছিল অখিলেশ প্রশাসনকে। কিন্তু কোনও বারই তারা গা করেনি। রাজ্যের গয়ংগচ্ছ মনোভাব নিয়ে এ দিন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন
বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। যদিও তাঁদের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। হাইকোর্টকে বাদ দিয়ে এ ভাবে সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আসা যাবে না বলেও আইনজীবীদের জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। |
পুরনো খবর: গোষ্ঠী সংঘর্ষে উত্তাল মুজফ্ফরনগর, নিহত ২৬ |
|
|
|
|
|