|
|
|
|
‘প্রক্সি’ রুখতে |
নাগাল্যান্ডে শিক্ষকদের ছবি বাঁধিয়ে টাঙানো হবে স্কুলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
রোল কলের সময় এক ছাত্রের হয়ে অন্য জনের ‘প্রক্সি’ দেওয়া সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু সেই কাণ্ডই যখন শিক্ষক করেন তখন তা বিরল। তাও এক জন বা দু’জন নয়। নাগাল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রী মেনে নিলেন, রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় নিযুক্ত বহু শিক্ষকই মাস-মাইনের একটি অংশ খরচ করে স্থানীয় যুবকদের দিয়ে তাঁদের জায়গায় ‘প্রক্সি’ দেওয়াচ্ছেন! সেই যুবকরাই নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্কুলে স্কুলে শিক্ষকদের নাম-ধাম দিয়ে ছবি বাঁধিয়ে ঝোলানো হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা, অভিভাবকরা ও গ্রামবাসীরা তার পর বুঝে নেবেন। যদি এই জিনিস চলতে থাকে তবে ব্যবস্থা নেবে সরকার।
নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন জেলায় যে এই কাণ্ড চলছে তা কারও অজানা ছিল না। ছাত্র সংগঠনগুলি এ নিয়ে আগেও শোরগোল করেছে। তখন কিছুদিন শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে হাজিরা দিতেন। কিন্তু ফের, যে কে সেই। ২০০৪ সাল থেকেই এই ধরণের ঘটনা সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে। কিন্তু সরকারি সক্রিয়তার অভাবে শিক্ষকদের ফাঁকিবাজি বন্ধ হয়নি। নাগা ছাত্র সংগঠনের দাবি, শিক্ষকরা তাঁদের নৈতিক চরিত্র বিসর্জন দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন। ছাত্র সংগঠন ও গ্রাম সভাগুলির অভিযোগ, দূরে ‘পোস্টিং’ হলেই শিক্ষকরা স্থানীয় যুবকদের সামান্য হাতখরচা দিয়ে রোজ স্কুলে হাজিরা দিতে ও তাঁদের বকলমে ক্লাস নিতে বলেন। আর তাঁরা মাসে একদিন গিয়ে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের সই করে মাইনে নিয়ে চলে আসেন।
নাগাল্যান্ডের শিক্ষামন্ত্রী সি এম চ্যাং সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রত্যেক সরকারি স্কুলে, ‘প্রকৃত’ শিক্ষকদের ছবি, নাম, ঠিকানা টাঙিয়ে রাখা হবে। চ্যাং বলেন, “রাজ্যের সব অংশ থেকেই ভুয়ো শিক্ষকদের অভিযোগ আসছে। পরিস্থিতি শোচনীয়। তাই, সব স্কুলে ফ্রেমে বাঁধিয়ে শিক্ষকদের ছবি ঝুলিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা বাধ্য হচ্ছি।” বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক না থাকা নিয়ে ছাত্র সংগঠনগুলি যে অভিযোগ জানিয়েছে, তার জবাবে মন্ত্রী জানান, স্কুলে শিক্ষকের কোনও অভাব নেই। শিক্ষকদের নীতিবোধ ও দায়িত্ববোধের অভাবের ফলেই স্কুলে ক্লাস হয় না। সরকারি স্কুলগুলিতে ফল নাগাড়ে খারাপ হচ্ছে। চ্যাং বলেন, “শহর থেকে বা নিজের পছন্দের জেলা, এলাকা থেকে দূরে হলেই শিক্ষকরা স্কুলে যেতে চাইছেন না। এ এক গভীর অসুখ। আমরা এমন শিক্ষকদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়ার কথা ভাবছি। যে সব স্কুলে শিক্ষকদের গাফিলতিতে ফল খারাপ হচ্ছে, সেই স্কুলেও শিক্ষকদের শাস্তি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে শিক্ষক নিয়োগের পদ্ধতি ঢেলে সাজা হবে।” |
|
|
|
|
|