ছাদ জুগিয়ে বস্তির ভোট টানতে চায় ইউপিএ
খাদ্যের পর এ বার বাসস্থান। শহরের গরিব মানুষ, মূলত যাঁরা বস্তিতে থাকেন, তাঁদের পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। দেওয়া হবে বাড়ির মালিকানাও।
দীর্ঘ টালবাহানার পর সদ্য সমাপ্ত বাদল অধিবেশনে খাদ্য সুরক্ষা বিল পাশ হয়েছে সংসদে। গোটা দেশের প্রায় ৬৭ শতাংশ মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার আইনি অঙ্গিকারও করেছে ইউপিএ নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে খাদ্যের পর তাই এ বার বাসস্থানকেই পাখির চোখ করেছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেই অনুযায়ী রাজীব আবাস যোজনার আওতায় দেশের প্রায় আট হাজার শহরে বস্তি এলাকায় ২০ লক্ষ পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। বড় শহরের ক্ষেত্রে বাড়ি তৈরির ৫০ শতাংশ আর ছোট শহরের ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ অর্থ দেবে কেন্দ্র। বাকি টাকা সহজ কিস্তিতে শোধ করতে পারবেন বাড়ির মালিকরা।
গত কয়েক বছর ধরেই লাগামছাড়া মূল্যবৃদ্ধি ও মুদ্রাস্ফীতির রাশ টানতে ব্যর্থ ইউপি নেতৃত্ব। বিষয়টি নিয়ে মানুষের ক্ষোভ যে ক্রমশই বাড়ছে, সেটা বিলক্ষণ জানেন কংগ্রেস নেতারা। লোকসভা নির্বাচন যখন দরজায় কড়া নাড়ছে, তখন সেই ক্ষোভ প্রশমণ করে আম-আদমির মন পেতেই সরকার এই পদক্ষেপ করতে চাইছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক দলগুলি।
গরিব ভোটব্যাঙ্ককে মূলধন করে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার কৌশল অবশ্য কংগ্রেসের নতুন নয়। এর আগে সত্তরের দশকে ইন্দিরা গাঁধীর নেতৃত্বে গরিবি হঠাও অভিযানে নেমেছিল কংগ্রেস। পরে আশির দশকে রাজীব গাঁধী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় গ্রামের মানুষদের মাথায় পাকা ছাদ বানিয়ে দিতে নেওয়া হয় ইন্দিরা আবাস যোজনা। গ্রামের পর এ বার শহরের গরিব ভোটব্যাঙ্ককে নিশানা করার রণকৌশল নিয়েছেন সনিয়া ও রাহুল গাঁধী। ইতিমধ্যেই নতুন খাদ্য বিলে শহরের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরের গরিব মানুষদের কাজের সুযোগ করে দিতে চালু করা হয়েছে জাতীয় জীবিকা মিশন। তাঁদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি মাথায় রেখে চালু হয়েছে জাতীয় নগর স্বাস্থ্য মিশনও।
বাকি ছিল বাসস্থান। আজ কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর-দারিদ্র দূরীকরণ মন্ত্রী গিরিজা ব্যাস জানান, “৭৯৩৫টি শহরে বস্তিবাসীদের প্রায় কুড়ি লক্ষ পাকা ঘর বানিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বাড়ির মালিকানাও পাবেন বস্তিবাসীরা।” এই ধরনের সামাজিক পরিকল্পনায় রাজস্ব ঘাটতি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, নির্বাচনের বছরে সব সরকারই এ ধরনের জনদরদি পদক্ষেপ করে থাকে। আর তা ছাড়া গরিবদের উন্নতিতে কোনও প্রকল্প হাতে নেওয়া হলে তাতে দোষের তো কিছু নেই।
আজ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ১৭টি রাজ্যের ৪২টি শহরে এই প্রকল্প পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয়েছিল। তৈরি করা হয় প্রায় ৪৮ হাজার বাড়ি। পাইলট পর্বে সাফল্য আসায় গোটা দেশের জন্য এই পরিকল্পনা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। মন্ত্রকের আশা, এই পরিকল্পনা সফল ভাবে রূপায়িত করা গেলে দেশ থেকে বস্তি নির্মূল করা সম্ভব হবে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.