সিরিয়া
ক্যামেরন-পত্নীর আশ্বাসই এখন ভরসা ঘরছাড়াদের
ম করে হলেও সেখানে প্রায় একশো জন শিশুর বাস। অথচ লেবাননের ‘মাজদলা আনজার’ শরণার্থী শিবিরের আনাচ-কানাচ ঘুরে বেড়ালেও কানে আসবে না চঞ্চল শৈশবের আওয়াজ। নিজেদের তাঁবুর ভিতর অবশ্য খেলছে ক্ষুধার্ত শিশুরা। কিন্তু কেমন যেন ভয়ে ভয়ে। গত মার্চে এমন ছবি দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের স্ত্রী সামান্থা ক্যামেরন। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, “আপনাদের সাহায্যের জন্য যা করতে পারব, করব।”
ডেভিড ক্যামেরনের স্ত্রী সামান্থা
প্রতিশ্রুতি কিছুটা হলেও রেখেছিলেন সামান্থা। যে শিশু অধিকার রক্ষা সংস্থার অ্যাম্বাসাডর হয়ে তিনি ওই সিরিয়ার শরণার্থীদের অবস্থা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন, তাদের তরফ থেকে আসছে সাহায্য। সম্প্রতি জি-২০ শীর্ষ বৈঠক ভারতীয় মুদ্রায় আরও প্রায় ৫৩২কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্যামেরন। কিন্তু বর্তমানে যা এসে পৌঁছচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য। শরণার্থীদের মুখে এখন তাই শুধুই দুর্দশার কথা। যেমন বেকা উপত্যকার ওই শিবিরের ২১টি তাঁবুতে বর্তমানে ২৫টি সিরীয় পরিবারের বসবাস। অথচ শৌচালয়ের সংখ্যা মাত্র দু’টো। নেই পানীয় জল সরবরাহের পাকাপাকি ব্যবস্থাও। তবে বাকি সব কিছু পেরিয়ে এখন প্রধান হয়ে উঠেছে খাদ্যাভাব। খাবার-খরচ বাবদ রাষ্ট্রপুঞ্জের উদ্বাস্তু সংস্থার তরফ থেকে প্রত্যেককে মাসে ১৭ পাউন্ড দেওয়া হয়। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। দিনের পর দিন তাই কাটছে অর্ধাহারে, অনাহারে। খাবার বলতেও মিলছে কী? বিস্বাদ তেলমাখানো শাকসব্জি, তা-ও ঠান্ডা। রান্নারও জায়গা নেই। পরিবারের মুখে একটু ভাল খাবার তুলে দেওয়ার জন্য দিনরাত ক্ষেতে কাজ করছেন অনেকে। কিন্তু সেখান থেকেও প্রতিশ্রুতিমতো মজুরি মিলছে না। অগত্যা তাই ভিক্ষাবৃত্তি আর যৌনপেশা বেছেছেন অনেকে। নিজের দেশের সরকারের হাতে আগেই প্রতারিত, নিগৃহীত হয়ে পালিয়েছিলেন এঁরা। পড়শি দেশও যে বিশেষ সুনজরে দেখে না এঁদের, তা বুঝে গিয়েছেন সকলে। দুর্দশা তাই চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়ছে।
এর সঙ্গেই জুড়েছে অবিলম্বে তাঁবু খালি করার হুমকি। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যে সিরিয়া থেকেই আরও শরণার্থী এসে পৌঁছেছেন লেবাননে। তাঁদের জায়গা দিতে তাই শিবির ছাড়তে হবে ১৫০ জন বাসিন্দাকে। শুনে এক শরণার্থীর ক্ষোভ, “খাবার তো দিতে পারিনি। শিবির থেকে বার করে দিলে বাচ্চাদের আশ্রয়টুকুও দিতে পারব না তো।” এলাকায় কাজ করা একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও প্রশ্ন তুলেছে এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা নিয়ে। কিন্তু পরিসংখ্যানই বলছে, ইতিমধ্যে প্রায় ৭ লক্ষ ৩০০০০ হাজার সিরিয়ার বাসিন্দা আশ্রয় নিয়েছেন লেবাননে।
নথিপত্র ছাড়াই থাকছেন আরও ৩ লক্ষ শরণার্থী। চল্লিশ লক্ষ বাসিন্দার দেশ লেবাননে এখন প্রত্যেক চতুর্থ জনই সিরিয়ান। এ হেন অবস্থায় শরণার্থীদের ঠাঁই দেওয়া যে দুঃসাধ্য ব্যাপার, সেটা অনেকেই মানেন। কিন্তু অপুষ্টিতে ভুগতে থাকা শৈশব আর অনাহারে দিন কাটাতে থাকা বড়দের মনে কোনও যুক্তিই দাগ কাটে না।
তবে এখনও তাঁদের বিশ্বাস, সাহায্যের জন্য সব রকম চেষ্টা করছেন সামান্থা। গত ছ’মাসে যাঁরা শিবির পরিদর্শনে এসেছেন, তার মধ্যে সব চেয়ে ‘মানবিক’ তিনিই। সেই ভরসাই এখন সম্বল। ভয়ঙ্কর অতীত, দুঃসহ বর্তমান আর অনিশ্চিত ভবিষ্যৎকে সঙ্গী করে যে পথে চলছেন তাঁরা, তাতে ক্যামেরন-পত্নীর আশ্বাসকেই আশার আলো ভাবছেন সহায়সম্বলহীন মানুষগুলো।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.