রাসায়নিক হামলা
আসাদের যোগ নিয়ে ধন্দে মার্কিন কংগ্রেস
য়ঙ্কর ছবিগুলো দেখলে শিউরে উঠতে হয়। সিরিয়ার ১৩টি ভিডিও কিছুটা হলেও প্রমাণ দিচ্ছে যে দেশটায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু কে দায়ী তার জন্য? তার বিরুদ্ধে প্রমাণ কই? সেই প্রমাণ না জোগাড় করেই কি একটা দেশে হামলার পরিকল্পনা করা যায়? প্রশ্ন উঠছে ওবামা প্রশাসনের অন্দরেই।
তবে এই পরিস্থিতিতেও মার্কিন বিদেশসচিব বাসাদকে শাস্তি দেওয়ার পক্ষে জোর সওয়াল করেছেন। লন্ডনে তিনি আজ বলেছেন, “সিরিয়ায় হামলার বিষয়টি স্পর্শকাতর হতে পারে। কিন্তু সেখানে কিছুই না করাটা অনেক বেশি ঝুঁকির।”
সিরিয়ায় সীমিত সামরিক অভিযান নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে ভোটাভুটি হওয়ার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট যতই কৌশলগত ভাবে ওই ভিডিওগুলি প্রকাশ করুন না কেন, এখনও এ ব্যাপারে বিরোধী হাওয়া প্রবল।
লন্ডনে সাংবাদিক বৈঠকে জন কেরি।
রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগে আসাদ-বাহিনীর দিকে আঙুল উঠলেও সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে স্পষ্ট, অকাট্য প্রমাণ মার্কিন প্রশাসন দেখাতে পারেনি বলেই দাবি। তবে ওবামা বলছেন, সব তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস আসাদ দায়ী। কিন্তু সব প্রমাণ প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আর এখানেই হচ্ছে বিতর্ক। আসাদ নিজেও পশ্চিমী দুনিয়ার দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেছেন, তারা প্রমাণ করে দেখাক আমি আমার নিজের দেশের লোকদের বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছি। জার্মান সংবাদমাধ্যমে সূত্রে আজ খবর মিলেছে, দামাস্কাসে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে কোনও নির্দেশ আসাদ দেননি বলে প্রমাণ পেয়েছে জার্মানিরই গোয়েন্দা সংস্থা।
ভুল তথ্যের ভিত্তিতে হওয়া ইরাক যুদ্ধের স্মৃতি এখনও ফিকে হয়ে যায়নি। রিপাবলিকান সদস্য অ্যালান গ্রেসন তাই বলছেন, “বারো পাতার একটা নথি ধরিয়ে দিয়ে প্রশাসন চাইছে যুদ্ধ করতে। অকাট্য, সন্দেহাতীত প্রমাণ কোথায় দেখানো হল?’’ একই অভিযোগ রিপাবলিকান সদস্য বাক ম্যাকিওনের। তাঁর মতে, “যে প্রমাণ দেখানো হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে সম্ভবত আসাদ বাহিনী এর জন্য দায়ী। কিন্তু সরাসরি দায়ী করার মতো মজবুত প্রমাণ কই?”
সিরিরায় অভিযান নিয়ে বার বারই উঠছে ইরাক যুদ্ধের কথা। যে যুদ্ধের পরিকল্পনার সময়ে বর্তমান প্রতিরক্ষাসচিব চাক হেগেল এবং বিদেশসচিব জন কেরি ছিলেন সেনেটর। সেই সূত্র টেনে কেরি এখন কংগ্রেসকে বলছেন, “আমি আর চাক কখনই চাইব না ভুল তথ্যের ভিত্তিতে আপনারা ভোট দিন। আমাদের গোয়েন্দা কমিটি অসংখ্য বার সব প্রমাণ খতিয়ে দেখেছে।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যমেরই পূর্বাভাস, তাতেও পুরোপুরি ভরসা করছেন না কংগ্রেস সদস্যরা। যে কারণে একটি মার্কিন দৈনিকের সমীক্ষায় উঠে এসেছে, হাউসের ৪৩৩ জন সদস্যের মধ্যে ২২৪ জন যুদ্ধের বিপক্ষে। ১৮৪ জন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। আর মাত্র ২৫ জন যুদ্ধের পক্ষে। মার্কিন রাজনীতিবিদদের আশঙ্কা, সিরিয়ায় সীমিত সামরিক অভিযান প্রকৃতপক্ষে দীর্ঘকালীন যুদ্ধের দিকে এগোবে। ফলে সঙ্কট বাড়বে।
এই যুদ্ধ এড়ানোর কি কোনও রাস্তা নেই? প্রশ্ন করা হয়েছিল বিদেশসচিব জন কেরিকে। যার উত্তরে কেরি বলেছেন, “নিশ্চয়ই। আসাদ যদি তার কাছে মজুত সব রাসায়নিক অস্ত্র এক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে জমা করে, তা হলেই হয়।” তবে সঙ্গে সঙ্গে কেরি যোগ করেন, “এটা আসাদ কখনওই করবে না। তাই যুদ্ধের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।” এ দিনই আবার সিরিয়ার বন্ধু দেশ রাশিয়াও আসাদকে অনুরোধ করেছে, তাঁর দেশে মজুত রাসায়নিক অস্ত্রের সম্ভার আন্তর্জাতিক নজরদারির আওতায় এনে সম্ভাব্য মার্কিন সামরিক অভিযান বন্ধ করুক সিরিয়া। পাশাপাশি অস্ত্রগুলি ধ্বংস করে ফেলা হোক চায় রাশিয়া।
যুদ্ধ প্রসঙ্গে লন্ডনে আজ ব্রিটেনের বিদেশমন্ত্রী উইলিয়াম হেগের পাশে বসে কেরি বলেন, “ইরান, হিজবুল্লা এবং আসাদকে যদি আমরা এই বার্তা দিই যে আপনাদের যা ইচ্ছে তা-ই করুন, তা হলে কিছু না করে বসে থাকতে হয়। সেটা কি আরও ভয়ঙ্কর নয়?” সিরিয়ায় যুদ্ধের প্রশ্নে মিত্র দেশ ব্রিটেন পাশে না থাকলেও হেগের সামনেই এ দিন কেরি বলেছেন, একটা ভোটের উপরে দু’দেশের সম্পর্ক নির্ভর করে না। আমেরিকা-ব্রিটেনের সম্পর্ক অনেক দৃঢ়।”
এর মধ্যেই আসাদ ফের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মার্কিন অভিযানের বদলা নিতে তিনি তৈরি। এই হামলার সময়ে কি রাসায়নিক অস্ত্রের সাহায্য নেওয়া হবে? আসাদের বক্তব্য, “যদি বিদ্রোহীরা বা জঙ্গিরা সেটা ব্যবহার করে, আমি কী বলব? আমি তো আর ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই।’’

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.