সাক্ষ্য শুরু, এজলাসে হাজির প্রদীপ সাহা
তৃণমূল নেতা সজল ঘোষ খুনের মামলায় সিপিএমের প্রদীপ সাহাকে জেল থেকে এজলাসে এনে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হল নবদ্বীপ আদালতে। সোমবার, প্রথম দিনেই আদালত চত্বরে এসে প্রদীপবাবুর শাস্তির দাবিও তুললেন তৃণমূলের কয়েকশো সমর্থক। গত বছর ৯ জানুয়ারি রাতে নদিয়ার নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে আহত ছাত্রকে দেখতে এসে গুলিতে খুন হন পূর্বস্থলীর তৃণমূল অঞ্চল সহ-সভাপতি সজল ঘোষ। রাতেই নবদ্বীপের বাড়ি থেকে সিপিএমের পূর্বস্থলী লোকাল সম্পাদক প্রদীপবাবুকে গ্রেফতার করা হয়।
এক বছর আট মাস বাদে নবদ্বীপে অতিরিক্ত জেলা জজ ও সেশন জজ শুভব্রত চৌধুরীর আদালতে সাক্ষ্য শুরু হল। গোলমালের কারণে অবশ্য এজলাসের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রদীপ সাহার হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন চার আইনজীবী। তাঁদের অন্যতম প্রতীন সিংহরায় বলেন, “মামলায় যে ছ’জন সরকারি সাক্ষী আছেন, তাদের বক্তব্য প্রথমে শোনার জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম। কারণ প্রদীপ সাহা প্রথম থেকেই জেলে। ফলে তাঁর কাছ থেকে কিছুই জানা যায়নি। বিচারক আবেদন মঞ্জুর করেন। ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগকারী পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায় এজাহার দেন।”
খুন নবদ্বীপে হলেও, গণ্ডগোলের সূচনা হয়েছিল বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। প্রদীপবাবু আদতে সেখানকারই কালেখাঁতলা ২ নম্বর পঞ্চায়েতের কলেজপাড়ার বাসিন্দা। গত বিধানসভা নির্বাচনে পূর্বস্থলী কেন্দ্রে সিপিএমের প্রার্থী হয়েও দাঁড়িয়েও হাজার দুয়েক ভোটে তৃণমূলের তপন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে তিনি হেরে যান।
আদালত চত্বরে টিএমসিপির বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
তাঁর স্ত্রী শম্পা মৈত্র নবদ্বীপের পানশিলা গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। সেই সূত্রে নবদ্বীপেও তাঁরা বাড়ি করেছিলেন। ইদানীং রাতে সেখানেই থাকতেন প্রদীপবাবু।
ঘটনার দিন দুপুরে পূর্বস্থলী কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন জমা নিয়ে টিএমসিপি এবং এসএফআই সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা বাধে। টিএমসিপি-র দু’জন এবং এসএফআইয়ের এক জন আহত হয়ে নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। রাতে টিএমসিপি-র আহত ছাত্রদের দেখতে তপনবাবুর সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে খুন হন সজলবাবু।
খুনের পরেই প্রদীপ সাহা-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছিল। অন্যতম অভিযুক্ত লোকনাথ দেবনাথ এখনও অধরা। সন্তু ভৌমিক, হানিফ মণ্ডল, সোহরাবউদ্দিন এবং সফিউদ্দিন নামে বাকি চার অভিযুক্ত জামিনে ছাড়া রয়েছেন। এক মাত্র প্রদীপবাবুরই জামিন মঞ্জুর হয়নি।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কৃষ্ণনগর সংশোধনাগার থেকে প্রদীপ সাহাকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। অঞ্জু কর-সহ সিপিএমের নেতা- নেত্রীরাও এসেছিলেন। ঘণ্টাখানেক বাদেই কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক দলীয় পতাকা, ব্যানার নিয়ে মিছিল করে আদালতে চত্বরে ঢুকে পড়েন। আদালত চত্বরে পূর্বস্থলী কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ফ্লেক্স টাঙিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। টিএমসিপি সমর্থকদের একটা বড় অংশও হাজির ছিলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই নবদ্বীপ থানা থেকে পুলিশ আসে। তত ক্ষণে বৃষ্টিতে বেশিরভাগই আদালতের বারান্দায় উঠে পড়েছেন।
দুপুর ১২টা বিচারকের নির্দেশে এজলাসের দরজা বন্ধ করে সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয়। দরজার বাইরে ছিল কড়া পাহারা। এরই মধ্যে আদালত চত্বরের বাইরে দু’জন এসএফআই সমর্থক মার খান বলে অভিযোগ। নবদ্বীপ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভোলানাথ চক্রবর্তীর দাবি, “২৫ বছরের অভিজ্ঞতায় এমন প্রথম দেখলাম। এর পরে যে কোনও রাজনৈতিক দলই তো এর পুনরাবৃত্তি করবে।” তবে আদালত চত্বরে হাজির তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “প্রদীপ সাহার বিরুদ্ধে ক্ষোভে এত মানুষ জমায়েত হয়েছেন। কেউ আদালত অবমাননা করতে আসেননি। আর, রাস্তায় কে কী করেছে তার দায় আমরা নেব কেন?”

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.