দিন কয়েক আগে কালী টেম্পল রোড দিয়ে কালীঘাট মন্দিরে ঢুকতে যাচ্ছিলেন নববিবাহিত এক দম্পতি। ঢোকার মুখেই তাঁদের ঘিরে ধরলেন কয়েক জন পাণ্ডা। নিজের অফিসে বসে সিসিটিভি-র মনিটরে ঘটনাটা দেখতে পেয়ে কালীঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ এক জন পুলিশ অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠান। পুলিশ দেখেই ওই দম্পতিকে ছেড়ে এলাকা থেকে সরে পড়েন ওই পাণ্ডারা।
কিছু দিন আগে পর্যন্ত কালীঘাটের পাণ্ডাদের হাতে নানা ভাবে হেনস্থা হতেন ভক্তেরা। ‘পাণ্ডারাজ’ ঠেকাতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে মন্দির-সংলগ্ন এলাকায় এখন সিসিটিভি-র সাহায্যে শুরু হয়েছে পুলিশি নজরদারি। কালী টেম্পল রোড থেকে শুরু করে মূল মন্দিরে ঢোকার পথ, সর্বত্রই চলছে ক্যামেরার নজরদারি। পুলিশের দাবি, ওই নজরদারির ফল সে দিন হাতে-নাতে পেয়েছিলেন ওই দম্পতি।
পুলিশ জানিয়েছে, কালীঘাট মন্দিরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের টাকা থেকে ২৩টি নতুন নজরদারি ক্যামেরা কেনা হয়েছে। কলকাতা পুরসভা সেগুলি মন্দির এলাকায় লাগিয়েছে। ক্যামেরাগুলি দেখভালের দায়িত্ব কলকাতা পুলিশের। ক্যামেরা লাগানোর খবর এর মধ্যেই ছড়িয়েছে। পুলিশের দাবি, তার পর থেকেই পাণ্ডাদের হাতে ভক্তদের হেনস্থা হওয়ার ঘটনা অনেক কমে গিয়েছে। |
পুলিশ জানিয়েছে, কালীঘাট মন্দিরে এর আগেও নিরাপত্তার জন্য নজরদারি ক্যামেরা ছিল। কিন্তু হাতে গোনা সেই ক’টি ক্যামেরাই অ্যানালগ ছিল। তার ছবি স্পষ্ট ছিল না। এ বার বসেছে ডিজিটাল ক্যামেরা। পুলিশ সূত্রের খবর, মন্দিরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ২৩টি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ‘নাইট ভিশন ক্যামেরা’ বসানো হয়েছে। মন্দিরের প্রতিটি ঢোকা-বেরোনোর পথে এবং ভক্তদের যাতায়াতের পথেও রাখা হয়েছে ওই ক্যামেরা। ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে কালীঘাট থানার ওসি মহাদেব চক্রবর্তীর ঘরের কন্ট্রোল রুম থেকে। পুলিশ জানায়, ওই কন্ট্রোল রুমে সব সময়ে তিন জন পুলিশকর্মী থাকছেন।
লালবাজার সূত্রের খবর, মন্দিরের নিরাপত্তায় মোতায়েন রয়েছেন জনা চল্লিশেক পুলিশকর্মী। এ ছাড়াও, মন্দিরের চারটি গেটেই রয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ। এক পুলিশকর্তা জানান, উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ক্যামেরা লাগানোর ফলে মন্দির এলাকায় কোথায় কী হচ্ছে, তা দেখা যাচ্ছে কন্ট্রোল রুম থেকে। পাশাপাশি, মন্দির এলাকার পুলিশকর্মীরা ঠিক মতো কাজ করছেন কি না, তা-ও ক্যামেরার সাহায্যে নজরে রাখা যাচ্ছে। এর ফলে কালীঘাট মন্দির আগের থেকে অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকছে বলে দাবি পুলিশের।
|