যাদবপুরের ৮বি এবং সল্টলেকের করুণাময়ী বাস টার্মিনাসের সংস্কার শুরু করল রাজ্য পরিবহণ দফতর। এই কাজের দায়িত্ব পেয়েছে পরিবহণ দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি)। এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে
৫২ লক্ষ টাকা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টো দিকে ৮বি বাস টামির্নাস দীর্ঘ দিন বেহাল অবস্থায় ছিল। এই টার্মিনাস থেকে এস৩১, এস৯ এবং ই১এই তিনটি রুটের সরকারি বাস ছাড়ে। এখানে কোনও যাত্রী ছাউনি ছিল না। রোদ, ঝড়, বৃষ্টিতে খোলা আকাশের নীচেই অপেক্ষা করতে হত। ছিল না পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, রাতে অসামাজিক কাজকর্মও হত। প্রশাসনকে বারবার জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি।
এইচআরবিসি-র ভাইস চেয়ারম্যান সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখানে চারটি যাত্রী ছাউনি তৈরি হচ্ছে। এর জন্য খরচ হচ্ছে ছ’লক্ষ টাকা।” |
করুণাময়ী বাস টার্মিনাসে চলছে সংস্কারের কাজ। ছবি: শৌভিক দে |
বসানো হচ্ছে দু’টি উঁচু বাতিস্তম্ভ। প্রতিটি বাতিস্তম্ভে ন’টি করে আলো থাকবে। বাতিস্তম্ভের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় পৌনে ছ’লক্ষ টাকা। থাকছে যাত্রীদের বসার জন্য চেয়ার। দেওয়াল সাজছে রঙিন ছবিতে। মেঝেতে বসছে টাইল্স। যাত্রী ছাউনিগুলির কাজ শেষের পথে। এইচআরবিসি-র চেয়ারম্যান তৃণমূলের সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “দ্রুত কাজ চলেছে। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যে ৮বি বাস টার্মিনাসের সৌন্দর্যায়নের কাজ
শেষ হবে।”
তবে স্থানীয় বাসিন্দা এবং নিত্যযাত্রীদের আশঙ্কা, নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ না করলে বাস টার্মিনাসটির আবার বেহাল অবস্থা হতে পারে। তা ছাড়া এই অঞ্চলে অনেক ভবঘুরে ঘুরে বেড়ান। তাঁরাও স্ট্যান্ডটি নোংরা করতে পারেন। পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “আমরা নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করব। ওখানে বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করা হবে। বিজ্ঞাপনের অর্থে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।”
সল্টলেকের করুণাময়ী বাস টার্মিনাস দেখভালের দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগমের। এখান থেকে প্রতি দিন বাঁকুড়া, শিলিগুড়ি, আসানসোল, বর্ধমান, দুর্গাপুরগামী বাস ছাড়ে। |
নবরূপে ৮বি বাসস্ট্যান্ড। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য |
এই টার্মিনাসটিরও দীর্ঘ দিন বেহাল অবস্থা। বর্ষায় অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। সারা টার্মিনাস গর্তে ভরা। বৃষ্টি হলে দীর্ঘ ক্ষণ জল দাঁড়িয়ে থাকে। সাধনবাবু জানান, এখানেও যাদবপুরের মতো যাত্রী ছাউনি তৈরি হবে। সংস্কার হবে নিকাশি ব্যবস্থারও। কাজ হচ্ছে দুই পর্যায়ে। সাধনবাবু জানান, প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আংশিক কাজ হয়েছে। এর মধ্যেই ২০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। আরও ২০ লক্ষ টাকার কাজ হবে।
তবে এইচআরবিসি-র এক কর্তা জানান, করুণাময়ীতে কাজের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাচ্ছেন না। কাছেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ চলছে। এর জন্য গর্ত খোঁড়া হয়েছে। তা ছাড়া মেট্রো-প্রকল্পের নানা সরঞ্জাম ও বর্জ্য পাশে ডাঁই করে রাখা হয়েছে। ফলে নিকাশির কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। |