সিলিং বা ঊর্ধ্বসীমা আইন না-মেনে কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে রোজভ্যালী সংস্থার মালিকানাধীন বহু জমি খাস করে নিচ্ছিল রাজ্য সরকার। ওই সংস্থার জমির ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য বুধবার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অর্থাৎ আপাতত ওই সংস্থার কোনও জমি আর খাস করা যাবে না। খাস করে নেওয়া জমি সরকার বা ওই সংস্থা, কেউই ব্যবহার করতে পারবে না।
বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি মুরারিমোহন শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে বলা হয়েছে, এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার প্রথমে হলফনামা পেশ করবে। পরে রোজভ্যালী তার উত্তর দেবে। এই হলফনামা, পাল্টা হলফনামা দাখিলের পরে মামলাটির শুনানি হবে।
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, রাজ্যের জেলায় জেলায় রোজভ্যালীর মালিকানাধীন সিলিং-বহির্ভূত জমি খাস করছে রাজ্য সরকার। এ বছরের শুরু থেকেই ব্লক, জেলা ও রাজ্যের ভূমি সংস্কার অফিসারেরা ওই সব জমি খাস করার কাজে নামেন। সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রোজভ্যালী প্রথমে ভূমি ট্রাইব্যুনাল এবং পরে হাইকোর্টে মামলা করে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই এ দিন ওই সব জমির ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
প্রজেক্ট রোজভ্যালী গ্রুপের চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার (সিইও) সুব্রত বসু এ দিনের নির্দেশকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে এখনও পর্যন্ত রোজভ্যালী গ্রুপের মালিকানাধীন ৭৬ একর জমি খাস করে নিয়েছে রাজ্য সরকার। আমরা তার জন্য বাজারদরের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণও চেয়েছি সরকারের কাছে। রোজভ্যালী তাদের গ্রাহকদের কম দামে আবাসন নির্মাণ করে দেওয়ার জন্যই ওই সব জমি কিনেছিল।”
আর রাজ্য সরকারের অভিযোগ, সিলিং বা জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন না-মেনেই ওই সব জমি কেনা হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় রোজভ্যালীর কোন কোন জমি খাস করে নেওয়া হয়েছে, ওই সংস্থাকে নোটিস দিয়ে তা জানিয়ে দিয়েছে সরকার। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরকার ইতিমধ্যে ওই সব খাস জমির দখলও নিয়েছে। যে-সব জেলায় রোজভ্যালীর সিলিং-বহির্ভূত জমি চিহ্নিত করে খাস ঘোষণা করা হয়েছে, সেগুলি হল উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, নদিয়া ও জলপাইগুড়ি। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট, উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাটের মহম্মদপুর মৌজা, পূর্ব মেদিনীপুরে তমলুক ব্লকের বিভিন্ন মৌজা, নদিয়ার কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট এলাকার কিছু মৌজা, জলপাইগুড়ির ফালাকাটা ও মালবাজার এলাকার বিভিন্ন মৌজায় হাজার একরের কাছাকাছি জমি রয়েছে রোজভ্যালীর। সরকার ইতিমধ্যেই ওই জমির একটা বড় অংশকে খাস ঘোষণা করেছে।
|