|
|
|
|
রোজ ভ্যালীর বেআইনি জমি খাস করল সরকার
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
অর্থলগ্নি সংস্থার হাতে থাকা সিলিং বহির্ভূত জমি খাস করা শুরু করল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। আগেই প্রয়াগ গোষ্ঠীর প্রায় ২৪ একর জমি খাস করা হয়েছিল। এ বার খাস করা হল রোজ ভ্যালীর জমি। মেদিনীপুর শহর ও ঝাড়গ্রাম মিলিয়ে প্রায় ৫ একর জমি খাস করা হয়েছে।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্ত বলেন, “সরকারি নিয়ম না মেনে জমি রাখলেই তা খাস করা হবে। প্রয়াগ গ্রুপের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। এ বার রোজ ভ্যালীর ক্ষেত্রে করা হল।” অন্য সংস্থার জমি সংক্রান্ত নথিও সংগ্রহ করছে জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। গরমিল ধরা পড়লেই সংশ্লিষ্ট জমি খাস করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অরিন্দমবাবু।
জমি খাস করার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন রোজ ভ্যালী কর্তৃপক্ষ। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিবময় দত্ত বলেন, “গত ১৬ অগস্ট আমরা হাইকোর্টে আবেদন করেছি। আমরা বর্তমান বাজারদরে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ চাইছি।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, যে সব লগ্নি সংস্থার সিলিং বহির্ভূত জমি রয়েছে, তার প্রায় সবই কেনাবেচা হয়েছে বাম আমলে। বর্তমান সরকার চাইছে সেই জমি খাস করে নিজেদের হাতে আনতে। সেই মতো সম্প্রতি মেদিনীপুর শহরের তাঁতিগেড়িয়া, কামারআড়া ও শেখপুরা এই তিনটি মৌজায় ১.০৫১১ একর ও ঝাড়গ্রামের জামদায় রোজ ভ্যালীর ২.৮৭ একর জমি খাস করা হয়েছে। এর মধ্যে শেখপুরায় রয়েছে নির্মীয়মাণ আবাসন প্রকল্প ও শপিং মল, তাঁতিগেড়িয়ায় গেস্টহাউস। কামারআড়া ও জামদায় অবশ্য সে ভাবে কোনও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে খবর, শীঘ্রই সরকার ওই জমির দখল নেবে। রোজ ভ্যালী কর্তৃপক্ষকে ওই জমি ফেরত পেতে হলে সরকারকে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা দিতে হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
সারদা-কেলেঙ্কারির পরই বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থার হাতে থাকা বেআইনি জমি খাস করার ব্যাপারে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়। সারদা, রোজ ভ্যালী, প্রয়াগ, এটিএম, এমপিএসের মতো মোট ৭৪টি সংস্থাকে চিহ্নিত করা হয়। তারপর খতিয়ে দেখা হয় কোন সংস্থার অধীনে কত পরিমাণ সিলিং বহির্ভূত জমি রয়েছে। নিয়মানুযায়ী কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা নিজের নামে ২৪.২০ একরের বেশি জমি রাখতে পারে না। তার থেকে বেশি পরিমাণ জমি কিনলে সরকারের অনুমতি (১৪ ওয়াই) নিতে হয়। এই সব লগ্নি সংস্থা নিয়মের তোয়াক্কা না করেই নামে-বেনামে প্রচুর পরিমাণ জমি কিনেছে বলে অভিযোগ। রোজ ভ্যালী, প্রয়াগ ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরে বেঙ্গল এনার্জি, এমপিএস গ্রিনারি-সহ একাধিক সংস্থার সিলিং বহির্ভূত জমি রয়েছে বলে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই সব সংস্থা অনেক ক্ষেত্রেই বিনা অনুমতিতে বা অনুমতিপত্র নকল করে আদিবাসীদের জমি কিনেছে বলেও অভিযোগ। সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাফিলতি ধরা পড়লে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। |
|
|
|
|
|