পরিকল্পনা বহু দিনের। এ বার তা বাস্তব হচ্ছে। ১ অক্টোবর থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে রাতেও বিমান ওঠানামা করবে।
প্রাথমিক ভাবে স্পাইসজেট রাতের এই উড়ান চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই মর্মে তারা চিঠি দিয়েছে বিমান পরিবহনের নিয়ন্ত্রক ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-কে। তবে, আপাতত সাময়িক ভাবে এই উড়ান চালানো হবে বলেও বিমানসংস্থা জানিয়েছে।
রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়েছিলেন পাহাড়ের উন্নয়নের দিকে। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই উঠে এসেছিল বাগডোগরা থেকে উড়ান বাড়ানোর প্রসঙ্গও। এই কারনে, সম্প্রতি বাগডোগরা থেকে বিমান-জ্বালানির উপরে রাজ্যের নেওয়া কর পুরোপুরি মকুবের কথা ঘোষণা করেছেন মমতা।
বাগডোগরা বিমানবন্দরটি কার্যত বায়ুসেনার অধীনে। বায়ুসেনারই অনুমতিক্রমে সেখানে যাত্রী বিমান ওঠানামা করে। সূর্য ডুবে যাওয়ার পরে যাত্রী বিমান ওঠানামায় নিষেধাজ্ঞা ছিল এতদিন। কিন্তু, বাগডোগরা থেকে উড়ান সংখ্যা বাড়াতে গেলে রাতেও যাত্রী বিমান ওঠানামা করতে হবে এটা অনুভব করে তদ্বির শুরু করেন মমতা। দিল্লিতে বিমানমন্ত্রক থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক পর্যন্ত তিনি বার্তা পাঠান। এত দিন রাতে বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা ছিল বায়ুসেনার কর্মীর অভাব। সম্প্রতি কর্মী সংখ্যা বাড়িয়ে রাতে বিমান ওঠানামার সুযোগ করে দিতে বায়ুসেনা রাজি হয়ে যায়। তারপর থেকেই চলছিল অপেক্ষা। ইন্ডিগো আশ্বাস দিয়েছে, শীতে তারাও কলকাতা-বাগডোগরা উড়ান চালু করবে। কলকাতা থেকে বাকি যারা বাগডোগরায় উড়ান চালায় সেই জেট, এয়ার ইন্ডিয়া এবং গো এখনও রাতের উড়ান সম্পর্কে উৎসাহ দেখায়নি। সম্প্রতি পাহাড়ের অশান্তির কারণে নতুন উড়ান চালু করা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছিলেন বিভিন্ন বিমানসংস্থার কর্তা-ব্যক্তিরা। তবে মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে স্পাইসজেটের ডিজিএম (এয়ারপোর্ট সার্ভিস) জানিয়ে দিয়েছেন, ১ অক্টোবর থেকে তাঁরা রাতে উড়ান চালাবে।
এই মূহূর্তে কলকাতা-বাগডোগরা রুটে দুপুরে একটি উড়ান চালাচ্ছে স্পাইস। সাম্প্রতিক পাহাড় সফরে তাদের উড়ানেই যাতায়াত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার স্পাইসের উড়ানেই তিনি কলকাতায় ফিরেছেন। স্পাইস সূত্রের খবর, দুপুরের এই উড়ানের সূচি একই থাকবে। ১ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁরা অতিরিক্ত একটি উড়ান চালাবে। এই উড়ানটিকে নিয়ে আসা হবে মুম্বই থেকে। সাড়ে পাঁচটায় মুম্বই থেকে কলকাতায় নেমে সেটি সন্ধ্যা ছ’টায় রওনা হবে বাগডোগরায়। সেখানে সন্ধ্যা সাতটায় নামবে। আবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সেখান থেকে রওনা হয়ে রাত সাড়ে আটটায় বিমানটি কলকাতায় ফিরবে।
সংস্থার এক কর্তা বলেন, “শুধু কলকাতার যাত্রী নয়, আমরা মুম্বইয়ের যাত্রীও ধরতে চাইছি। পাহাড় আরেকটু ঠাণ্ডা হলে মুম্বই, বেঙ্গালুরু, দিল্লি থেকেও অনেকে দার্জিলিং আসতে চাইবেন।” ১ অক্টোবর থেকে কলকাতা-বাগডোগরা রুটে সকালেও একটি উড়ান চালাবে স্পাইস। এটি হবে এই রুটে স্পাইসের তৃতীয় উড়ান। এটি সকালে বেঙ্গালুরু থেকে কলকাতায় এসে যাবে বাগডোগরায়।
পাহাড়ের অশান্তির পাশাপাশি আরও একটি চিন্তা রয়েছে সংস্থার তরফে। তাদের বক্তব্য, রাতে বিমান ওঠানামার সুবিধা বায়ুসেনার তরফে চালু করা হলেও যাত্রীরা যাতে টার্মিনালে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা পান তারও ব্যবস্থা করতে হবে। এ দিন বাগডোগরার বিমানবন্দর অধিকর্তা কল্যাণ কিশোর ভৌমিক অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা সর্বতোভাবে প্রস্তুত। যাঁরা সকাল থেকে ডিউটি করছেন, তাঁরা সন্ধ্যাতেই ডিউটি করবেন। নিরাপত্তার জন্য বলা হয়েছে সিআইএসএফ-কেও।” |