উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই, এই পরিস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের লাগাতার অবস্থান-আন্দোলনের ‘চাপে’ ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করলেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য। এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলন চলাকালীনই ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানিয়েছেন।
গত সোমবার দুপুর থেকে কলেজের নিয়মবিধি তৈরি, চাকরির স্থায়ীকরণ সহ ১০ দফা দাবিতে রেজিস্ট্রারের ঘরের সামনে লাগাতার অবস্থান শুরু করেছেন। এ দিন দুপুরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার শ্যামসুন্দরবাবু বলেন, “দীর্ঘ চার মাসের বেশি সময় ধরে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন না। এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিরের কোনও বৈঠকও হয়নি। বৈঠক ডাকার এক্তিয়ার আমার নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা সামাল দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমাগত চাপ আমি আর সহ্য করতে পারছি না। এর থেকে রেহাই পেতে রেজিস্ট্রারের পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল উপাচার্যের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠাব।” |
উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাস কলকাতা থেকে বলেন, “শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য এর আগে আমাকে বলেছিলেন উনি রেজিস্ট্রার পদে আর কাজ করতে চান না। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়েই স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও শিক্ষককে রেজিস্ট্রারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। যাই হোক বর্তমান রেজিস্ট্রার যদি কাজ করতে না চান তবে আমাকে বিকল্প ব্যবস্থা তো করতেই হবে।” দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে উপাচার্য বলেন, “অসুস্থ থাকার কারণে মালদহে যেতে পারছি না।”
২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হওয়ার পরে কয়েকমাসের জন্য স্থায়ী রেজিস্ট্রার হিসেবে বিকাশ মুখোপাধ্যায় দায়িত্ব পালন করলেও প্রায় সাড়ে পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী রেজিস্ট্রারদেরই দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে। এডুকেশেন বিভাগের অ্যাসোসিয়েটেড প্রোফেসার শ্যামসুন্দর বৈরাগ্য এর আগে ২০১১ নভেম্বর থেকে ২৪ মে পর্যন্ত ছয় মাস অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের পদে ছিলেন। এরপর দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের ২ এপ্রিল থেকে ফের তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে সময় থেকেই উপাচার্য মালদহের বাইরে রয়েছেন। মাঝারে সময়ে তিনি দু’দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে গত সোমবার থেকে রেজিস্ট্রারের ঘরের সামনে শিক্ষকদের অবস্থান চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “দাবি না মেটা পর্যন্ত, আন্দোলন চলবে।” |