পঞ্চায়েত ভোটের মতোই পুরসভা ভোটেও অশান্ত হয়ে উঠছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট। বাম এবং তৃণমূলের ফ্ল্যাগ, পোস্টার, ফেস্টুন ছেঁড়া ও দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর চালানোর মতো অভিযোগে যুযুধান দুই শিবিরে উত্তেজনা লেগেই রয়েছে। উত্তপ্ত ভোটের পরিবেশ।
আগামী ২১ সেপ্টেম্বর বালুরঘাটে পুরভোট। ভোটের প্রচার শুরু হতেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বাম এবং তৃণমূলের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন ছেঁড়ার ঘটনা ক্রমশ বাড়তে থাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। রবিরার রাতে ২ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “আমাদের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন ছেঁড়া হলেও কর্মীদের শান্ত থেকে কোনও রকম প্ররোচনায় প্রভাবিত না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটের সময় জেলার একাংশ এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অশান্তি ও সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব ছিল বামেরা। পুরভোটেও সেই ধারা শুরু হওয়ার আশঙ্কায় রীতিমতো আতঙ্কিত বালুরঘাটের নাগরিক সমাজ। তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর রায় বলেন, “বামেরা ইতিমধ্যে ওয়ার্ডগুলিতে আমাদের দলীয় পতাকা, ফেস্টুন, ফ্লেক্স ছিঁড়ে প্ররোচণা তৈরির চেষ্টা করছে। আমরাও শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেছি।
ডিএসপি সদর উত্তম ঘোষ বলেন, “দু তরফে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ওয়ার্ডগুলিতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল এবং বামেদের তরফে একে অপরের বিরুদ্দে দলীয় পতাকা, ব্যানার ছেঁড়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এমনকি শাসক দল তৃণমূলের তরফে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে, দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাট আউটে কালি লেপে, ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ করা বলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আরএসপি জেলা সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরীর অভিযোগ করে বলেন, “কলোনি এলাকায় রাতে হানা দিয়ে তৃণমূল ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে। এলাকায় তৃণমূলের বাইকবাহিনী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে শহরবাসী জানেন যে আমরা শান্তির পক্ষে।” দলের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা শহর সম্পাদক বিমল সরকার বলেন, “বালুরঘাট শান্তির শহর। আমরাই শহরকে দেখিয়েছে যে বদলার রাজনীতি আরএসপি করে না। তৃণমূলের ফ্ল্যাগ ফেস্টুন ছেঁড়ার ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও কর্মী সমর্থক জড়িত নন।” টানা ৩২ বছর ধরে বালুরঘাট পুরসভায় ক্ষমতাসীন আরএসপি। গত নির্বাচনে ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টিতে আরএসপি জয়লাভ করে। ৫টি ওয়ার্ড সিপিএম এবং ১টি ওয়ার্ড কংগ্রেসের দখলে যায়। এবারে ২টি ওয়ার্ড বেড়ে মোট ২৫টি ওয়ার্ডে ভোট হবে। এবারই বালুরঘাট পুরভোটে বামফ্রন্টগত ভাবে সিপিএম-আরএসপি লড়ছে। |