মালদহে গঙ্গার জল বেড়েই চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গার জল ৮ সেন্টিমিটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫.৮২ মিটারে। রয়েছে লাল সতর্কতা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জলস্তর চরম বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে। মঙ্গলবার মানিকচকের ভূতনির হীরানন্দপুরের কলুটোনটোলার পরপর দু’টি বালির বস্তার বাঁধ জলে তলিয়ে গিয়েছে। জল বালির বস্তার বাঁধ টপকে চতুর্থ বালির বস্তার বাঁধে ধাক্কা মারছে। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার (গঙ্গা) অমরেশ কুমার সিংহ বলেন, “জল আরও দু’দিন বাড়বে। পরিস্থিতি দিকে নজর রাখা হচ্ছে।” অসংরক্ষিত এলাকায় ফের বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে ফুলহার নদী। এ দিন সকালেই ফুলহারের অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সঙ্কেত ও সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি করেছে সেচ দফতর। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার (মহানন্দা) সুজিত কুমার বসু বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।” |
গঙ্গার জল বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্রাণ নিয়ে মানিকচকের ধরমপুর, জোত পাট্টা, দক্ষিণ চন্ডীপুরে বানভাসিদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। মানিকচকের সিপিএমের লোকাল সম্পাদক শ্যামল বসাক বলেন, “আগে বন্যার সময় ত্রাণ বিলি নিয়ে সবর্দল বৈঠক করত। এবার তা হয়নি। এলাকা বেছে বেছে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে। বহু জায়গায় ত্রাণ বিলি বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।” মানিকচকের গোপালপুরে বানভাসিরা নিজেরাই বাসনপত্র এনে খাবার তৈরি করে তা বানভাসিদের মধ্যে বিলি করছেন। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “যেখানে ত্রাণের প্রয়োজন সেখানেই প্রশাসনকে ত্রাণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জোতপাট্টা, ধরমপুর, দক্ষিণ চন্ডীপুরে কী হচ্ছে খোঁজ নিচ্ছি।”
গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধিতে মানিকচক, কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লকে ৭০ হাজারের বেশি মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ দিন মানিকচক, কালিয়াচকের দুর্গতরা ২ টাকা কেজি চাল, ডাল সরবরাহ-সহ ১২ দফা দাবিতে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। সেচ দফতর সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশ, বিহারে প্রবল বৃষ্টিপাতের জেরে ফুলহার ফুঁসছে। হরিশ্চন্দ্রপুর ও রতুয়ার ২০টি গ্রামের ২৫ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। |
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ফুলহার ২৭.৫৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায় বইতে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ফুলহারে ৪৮ সেন্টিমিটার জল বেড়েছে। মাস দেড়েক আগেই ফুলহারের জলস্ফীতিতে জলবন্দি হয়ে পড়েন অসংরক্ষিত এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু জল সামান্য কমতেই দেড় মাসে আরও দু’দফায় জলমগ্ন হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। প্লাবনে এর মধ্যেই এলাকার অনেক ফসল ডুবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
|
• উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে টানা বৃষ্টির ফলে মালদহে বিপদসীমার ৫২ সেমির উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা।
• ২৪ ঘণ্টায় ফুলহারে জল বেড়েছে প্রায় ৪৮ সেন্টিমিটার। জারি করা হয়েছে লাল ও হলুদ সতর্কতা।
• দুই নদীর জলে বানভাসিদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে লাখ খানেক। |
|