পুরসভার নোংরা, আবর্জনা এলাকায় ফেলা নিয়ে ক্ষুব্ধ আলিপুরদুয়ারের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষ। তাঁরা জানান, এলাকায় অস্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরী করেছে প্রশাসন। পচা দুর্গন্ধে বাড়িতে টেকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি হলেই জলের সঙ্গে রাস্তায় জঞ্জাল ভাসতে থাকে। কয়েক মাস ধরে এ অবস্থার মধ্যে থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। বিষয়টি এবার আলিপুরদুয়ার পুরভোটে প্রচারের অন্যতম কেন্দ্রে পৌঁছেছে।
ওই ওয়ার্ডের বিদায়ী সিপিএমের কাউন্সিলর শ্যামল ভৌমিক ও তাঁর স্ত্রী কল্যানী দেবী সম্প্রতি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এ বার ওয়ার্ডে প্রার্থীও হয়েছেন কল্যানী দেবী। অস্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড করাটা ঠিক হয়নি বলে তিনি স্বীকার করে নিয়েছে। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেসের বিদায়ী চেয়ারম্যান দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মাঝেরডাবরি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুঁটিমারি এলাকায় ‘সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে’র জন্য জমি কেনা হয়েছিল। কিন্তু সিপিএম ও তৃণমূল রাজনৈতিক বিরোধিতা শুরু করে। বাধাও দেয়। বিষয়টি মহকুমা প্রশাসনের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়। সর্বদলের সম্মতিতেই ওখানে অস্থায়ী ভাগাড় হয়েছে। কংগ্রেস বোর্ড ফের ক্ষমতা আসলেই প্রথমেই এই সমস্যার সমাধান করা হবে।” |
স্থানীয় মনমোহন ঘোষ, লিটন দাস, রুমকি বসুরা জানান, গোটা শহরের আবর্জনা রোজ ফেলা হচ্ছে। মাছ বাজারের নোংরা থেকে শুরু করে হাসপাতালের আবর্জনাও ফেলা হচ্ছে। পুঁতি গন্ধময় অবস্থায় বসবাস করাই দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা সময় বাধা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে পুলিশের সাহায্যে প্রশাসনের তরফে জঞ্জাল ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। বিদায়ী কাউন্সিলর শ্যামল ভৌমিক বলেন, “বাসিন্দাদের সমস্যা হচ্ছেই। নিয়মিত ভাগাড়ে ওষুধ ছেটানো বা নোংরা মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে না। সর্বদল বৈঠকে এ সব আলোচনা হয়েছিল। দ্রুত স্থায়ী সমাধানের কথাও বলা হয়েছিল। স্ত্রী প্রার্থী হয়েছেন। উনি জিতলে আমরা বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে এটা বন্ধ করে দেব।” স্থায়ী ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকার জন্য কংগ্রেস পরিচালিত বিদায়ী বোর্ডকে দায়ী করেছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য রবীন দাশগুপ্ত জানান, এভাবে ময়লা ফেলার আমরাও বিরোধিতা করেছিলাম। আমাদের প্রাক্তন কাউন্সিলর অবশ্য দল বদল করেছেন। ভোটের বিষয়টি নিয়ে আমরা প্রচার করব। ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শম্পা সরকার রায় জানান, বিষয়টি নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। গতবার পুরবোর্ড কংগ্রেসের ছিল। এলাকার কাউন্সিলর ছিলেন সিপিএমের। তাই মানুষ বুঝে গিয়েছেন কাদের এ বার ভোট দিলে তাঁদের সমস্যা মিটবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে আলিপুদুয়ার শহরের পাশে কালাজানি নদীর পাশে শহরের আবর্জনা ফেলা গত। বিষয়টি নিয়ে সরব হয় পরিবেশ প্রেমীরা। এতে আবর্জনা ফেলার কোনও জায়গা না থাকায় বেশ কয়েকদিন শহরের ময়লা তোলার কাজ বন্ধ রাখে পুরসভা। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত জুলাই মাসে সর্বদল বৈঠকের পর ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ময়লা ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। |