দু’মিনিটের ব্যবধানে দু’টি মোবাইল থেকে দু’বার ফোন। দু’বারেই খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি এবং অশ্লীল গালিগালাজের বন্যা। মঙ্গলবার দুপুরের পরে বিধাননগর উত্তর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন খাদ্যমন্ত্রী নিজেই।
জ্যোতিপ্রিয়বাবু জানান, সোমবার তাঁর একটি মোবাইল নম্বরে রাত ১০টা ২৮ মিনিট এবং ১০টা ৩০ মিনিটে দু’টি ভিন্ন মোবাইল থেকে ফোন করে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। প্রথম বার বলা হয়, “গুলি করে মেরে দেব।” খাদ্যমন্ত্রীর মায়ের নাম করেও অশ্লীল গালিগালাজ করা হয়। দ্বিতীয় বার ফোন করে তাঁকে হিন্দিতে বলা হয়, “ইয়ে আপ ক্যায়া কর রহেঁ হো! ম্যায় অশোক। খাল্লাস কর দেগা। দমদম এয়ারপোর্টসে নিকালনে নেহি দেগা। গোলি করকে মার দেগা।” (এটা আপনি কী করছেন! আমি অশোক। খুন করে ফেলব। দমদম বিমানবন্দর থেকে বেরোতে দেব না। গুলি করে মেরে ফেলব।) খাদ্যমন্ত্রীকে হুমকি-ফোন কেন?
জ্যোতিপ্রিয়বাবু বলেন, “জানি না। তবে হুমকি দেওয়ার ধরন দেখে এটুকু বলতে পারি, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
রাজ্যের খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, ফুড কর্পোরেশনের গুদাম থেকে খাদ্যসামগ্রী (বিশেষ করে গম) কলকাতা, হাওড়া, চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, দুর্গাপুর-আসানসোলের শহরাঞ্চলে দোকানে না-গিয়ে সরাসরি বাজারে বিক্রি করা হচ্ছিল। অবস্থা খতিয়ে দেখে ফুড কর্পোরেশনের গুদাম থেকে ওই সব খাদ্যসামগ্রী সরাসরি দোকানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় খাদ্য দফতর। এই ব্যাপারে লরি-মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগও করা হচ্ছিল। কিন্তু ওই সব এলাকার রেশন ডিলারদের একাংশ এই পরিকল্পনা মানতে রাজি নয়। খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ নিয়ে এই টানাপোড়েনের সঙ্গে খাদ্যমন্ত্রীকে হুমকি-ফোনের কোনও যোগ আছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। তবে খাদ্যদ্রব্য সরাসরি দোকানে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যে-সব লরি-মালিকের সঙ্গে কথা হয়েছিল, তাঁদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে শুনেছি।” তিনি সল্টলেকের পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার এবং উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরীকে বিষয়টি জানিয়েছেন। পুলিশি সূত্রের খবর, যে-দু’টি ফোন থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেগুলিকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার মধ্যে একটির সিমকার্ড এই রাজ্যের। অন্যটির সিমকার্ড চেন্নাইয়ের। পুলিশ একটি ফোনের মালিককেও চিহ্নিত করেছে। বারাসতের বাঘা যতীনের কয়রা এলাকা থেকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। |