ছাত্রদের ঝামেলায় অভিভাবকদের হস্তক্ষেপকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল স্কুলে। এক ছাত্র তার বাবা ও কাকাকে সঙ্গে নিয়ে লাঠি হাতে স্কুলে ঢুকে দুই ছাত্রকে মারধর করলেন বলে অভিযোগ। ওই তিন জনের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বড়জোড়া থানার ফুলবেড়িয়া হাইস্কুলে। অভিযুক্ত ছাত্র ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। হামলায় জখম দুই ছাত্রই সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তারা ফুলবেড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। স্কুল সূত্রে খবর, এ দিন টিফিন চলাকালীন একাদশ শ্রেণির ছাত্রটির সঙ্গে বচসা বাধে সপ্তম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রের। তা থেকে হাতাহাতিও হয়। এর পরেই স্কুল থেকে বাড়ি চলে যায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রটি। টিফিন শেষ হয়ে ক্লাস শুরুর কিছুক্ষণ আগেই সে তার বাবা ও কাকাকে নিয়ে স্কুলে ঢোকে। স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক কাজল পরামানিকের অভিযোগ, “তিন জনেই লাঠি ও রড হাতে সোজা গিয়ে ঢোকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাসে। বেধড়ক মারধর করে ক্লাসের দুই ছাত্রকে (যাদের সঙ্গে বচসা হয়েছিল)। কয়েক জন শিক্ষক ওই দুই ছাত্রকে উদ্ধার করতে এসে প্রহৃত হন। মারের চোটে দুই ছাত্রই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। বেগতিক দেখে চম্পট দেয় হামলাকারীরা।”
আহত দুই ছাত্রকে প্রাথমিক চিকিসা করিয়ে একটি গাড়িতে করে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুলে ঢুকে মারধরের ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রহৃত ছাত্রদের শারীরিক পরীক্ষা চলছে। কাজলবাবু বলেন, “এই ধরনের ঘটনা বরদাস্ত করা যাবে না। একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র আর তার বাবা-কাকার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ওদের কঠোর শাস্তি চাই।” প্রহৃত এক ছাত্রের জেঠু বলেন, “অভিভাবক হয়ে কোনও পড়ুয়ার বাবা-কাকা এই ধরনের ঘটনা কী ভাবে ঘটালেন বুঝতে পারছি না। এর পর থেকে তো ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতেই ভয় লাগছে!”
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার বড়জোড়া থানা সংলগ্ন গঙ্গাজলঘাটি থানার লটিয়াবনি অঞ্চল হাইস্কুলেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। দ্বাদশ শ্রেণির দুই ছাত্রের মধ্যে স্কুলের ভিতরেই বচসা হয়য় এর পর এক ছাত্র বাড়ি গিয়ে তার বাবা, জেঠু ও দাদাকে স্কুলে নিয়ে এসে অন্য ছাত্রটিকে মারধর করে। স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাত্র-সহ চার জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। সকলকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। এ দিনের ঘটনায় অবশ্য অভিযুক্তেরা সকলেই পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। |