|
|
|
|
রং দেখে কাজ নয়, নির্দেশ তৃণমূলের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
ইতিমধ্যে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি গঠন হয়েছে। সামনে জেলা পরিষদ গঠন হবে। এই পরিস্থিতিতে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যদের কাছে ২১ দফার এক নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিল জেলা তৃণমূল। মঙ্গলবার দলের অঞ্চল, ব্লক এবং জেলা নেতৃত্ব কে নিয়ে মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর হলে এক সভা হয়। সভায় গ্রাম পঞ্চায়েতের নবনির্বাচিত প্রধান, উপপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ- সভাপতিরাও ছিলেন। হাজির ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্যরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “নির্বাচিত সদস্যদের একটা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। তাঁরা কী করবেন, কী করবেন না, তাই জানানো হয়েছে এই নির্দেশিকায়। আমরা নির্বাচিত সদস্যদের স্বচ্ছতা এবং সততার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছি।” |
|
বিদ্যাসাগর হলে উত্তরা সিংহ ও সমায় মাণ্ডি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
২১ দফা নির্দেশে ঠিক কী কী বলা হয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দলমত নির্বিশেষে পরিষেবা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক রঙ দেখা চলবে না। বিরোধী বলে পরিচিতরা যেন ন্যায্যা সুযোগ- সুবিধে থেকে বঞ্চিত না- হন, সেই দিকে নজর রাখতে হবে। দলীয় নেতৃত্বের অনুমতি ছাড়া কাউকে আগাম কিছু পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া যাবে না। টেণ্ডারের ক্ষেত্রে কোনও রকম সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করা যাবে না। ঠিকাদারদের বাড়িতে ডাকা যাবে না। নেতৃত্বের কেউ সরাসরি ঠিকাদারিতে যুক্ত হতে পারবেন না। কাজের গুনগত মান বজায় রাখতে হবে। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে হবে। বুথ, অঞ্চল, ব্লকস্তরে নিয়মিত বৈঠক করতে হবে। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ- সভাধিপতি নির্বাচনের জন্য দিন ধার্য্য হয়েছে। ওই দিন মেদিনীপুরে সমাবেশ করবে তৃণমূল। সমাবেশ হবে কলেজ মাঠে। দলীয় সূত্রে খবর, সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। সমাবেশের প্রস্তুতি হিসেবেই মঙ্গলবার বৈঠক করে তৃণমূল। উপস্থিত ছিলেন দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এবং সুকুমার হাঁসদা, দলের জেলা চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, দুই কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ এবং নির্মল ঘোষ প্রমুখ। গত ১৯ অগষ্ট জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলোয় প্রধান, উপ- প্রধান নির্বাচন হয়। গত শুক্রবার ছিল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ- সভাপতি নির্বাচন। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ- সভাধিপতি নির্বাচন রয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি হিসেবে ইতিমধ্যে উত্তরা সিংহের নাম ঘোষনা করেছে তৃণমূল। সহ- সভাধিপতি হিসেবে সমায় মাণ্ডির নাম ঘোষনা করা হয়েছে। বস্তুত, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এই প্রথম পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের ক্ষমতায় আসতে চলেছে তৃণমূল। ৬৭টি আসনের মধ্যে ৬৪টিই এসেছে শাসক দলের দখলে। তাই সভাধিপতি, সহ- সভাধিপতি নির্বাচনের দিন মেদিনীপুরে সমাবেশ করতে চলেছে শাসক দল। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে দুই মন্ত্রীও জানিয়ে দেন, কিছু সমস্যা হলে জেলায় জানাবেন। জেলা থেকে পদক্ষেপ করা হবে। মানুষ আমাদের সমর্থন করেছেন। আমাদের সকলকেই আরও দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। জেলার সর্বত্র যে ভাবে সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে তৃণমূলের একাংশ। এদের মতে, বেশ কিছু এলাকা বিরোধীশূন্য। ফলে, একাংশ নির্বাচিত সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়তে পারেন। অর্থের লোভ সামলাতে না- পেরে কারও প্ররোচনায় পা দিতে পারেন। পরবর্তী সময়ে যা দলের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাবে। এদিকে, পঞ্চায়েতের ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পর একাংশ সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেলে সাধারণ মানুষের মধ্যেও বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। দলের নির্বাচিত সদস্যদের সতর্ক করে জেলা সভাপতি বলেন, “আমরা জেলা থেকে নজর রাখছি। কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে তা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। মনে রাখবেন, সিপিএম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাই তাদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। মানুষ আমাদের দিকেও নজর রাখছেন। আমাদের কেউ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হলে তাঁকেও প্রত্যাখান করবেন। স্বচ্ছতা এবং সততার সঙ্গে কাজ করলে মানুষ সব সময় আপনার পাশে থাকবেন।” |
|
|
|
|
|